মঙ্গলবার, ১৫ ডিসেম্বর, ২০১৫

লবঙ্গ চাষ ও পুষ্টিমান ও উপকারিতা




মসলা হিসেবে লবঙ্গ সকলের পরিচিত। এর ইংরেজি নাম Clove এবং এর বোটানিকাল নাম: Syzygium aromaticum (Linn.) Merr. & L. M. Perry, ফ্যামিলি-Myrtaceae ।    লবঙ্গ গাছের ফুলের কুড়িকে শুকিয়ে তৈরি করা হয়। যদিও লবঙ্গের আদি বাস ইন্দোনেশিয়া, তবে বর্তমানে এটি পৃথিবীর সর্বত্র ব্যবহৃত হয়। জাঞ্জিবার, ইন্দোনেশিয়া ও মাদাগাস্কারে ব্যাপকভাবে লবঙ্গ চাষ করা হয়। এছাড়া দক্ষিণ এশিয়ার বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তান ও শ্রীলংকাতেও লবঙ্গের চাষ হয়ে থাকে। লবঙ্গ কে লং বলেও ডাকা হয়।




লবঙ্গ গাছ মাঝারি গাছ, সধারনতঃ ১৫-২০ ফুট পর্যন্ত উচু হয়। পাতা দেখতে অনেকটা বকুল পাতার মত, তবে লবঙ্গের পাতায় অল্প গন্ধও পাওয়া যায়। বর্তমানে দক্ষিণ ভারতের উপকুলবর্তী ত্রিবাঙ্কুর অঞ্চলে এবং তামিলনাড়ুতে কিছু কিছু লবঙ্গ চাষ হচ্ছে। অবশ্য প্রয়োজনের তুলনায় তা অতি সামন্যই। পূর্ব ভারতে আমদানি করা হচ্ছে সুমাত্র, জাভা, বের্ণিও মালাক্কা, প্রভৃতি অঞ্চল বিশেষ থেকে। উদ্ভিদ সমীক্ষকদের মতে এটির আদি জন্মস্থান মালাক্কা দ্বীপপুঞ্জে, তবে সিলিবিস দ্বিপেও লবঙ্গ পাওয়া যায়। বোটাসহ ফুলের কুঁড়ি শুকিয়ে গেলে লবঙ্গে পরিণত হয়। ফল ১ ইঞ্চি পর্যন্ত লম্বা, মাংসল, পাকলে লবঙ্গের মতো রঙ হয়।

রাসায়নিক গঠনঃ  লবঙ্গের সুগন্ধের মূল কারণ "ইউজেনল" (Eugenol) নামের যৌগ। এটি লবঙ্গ থেকে প্রাপ্ত তেলের মূল উপাদান, এবং এই তেলের প্রায় ৭২-৯০% অংশ জুড়ে ইউজেনল বিদ্যমান। এই যৌগটির জীবাণুনাশক এবং বেদনানাশক গুণ রয়েছে। লবঙ্গের তেলের অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ উপাদান হলো অ্যাসিটাইল ইউজেনল, বেটা-ক্যারোফাইলিন, ভ্যানিলিন, ক্র্যাটেগলিক অ্যাসিড, ট্যানিন, গ্যালোট্যানিক অ্যাসিড, মিথাইল স্যালিসাইলেট, ফ্ল্যাভানয়েড, ইউজেনিন, র‌্যাম্নেটিন, ইউজেনটিন, ট্রি-টেরপেনয়েড, ক্লিনোলিক অ্যাসিড,, স্টিগ্মাস্টেরল, সেস্কুইটার্পিন।



 পুষ্টিমান:  এক টেবিল চামচ পরিমান লবঙ্গ অর্থাৎ প্রায় ছয় গ্রাম লবঙ্গ থেকে পাওয়া যায় ২১ ক্যালরি শক্তি। এতে কোন কোলেস্টেরল নেই। ফ্যাট আছে ১ গ্রাম, সোডিয়াম ১৬ মিলিগ্রাম, ফাইবার ২ গ্রাম। প্রচুর পরিমান ভিটামিন এ, ভিটামিন সি, ভিটামিন ই, আয়রন, থায়মিন, জিংক, রিবোফ্ল্যাভিন, এবং ক্যালসিয়াম রয়েছে এতে।


ব্যবহার:  লবঙ্গকে আস্ত অথবা গুঁড়ো অবস্থায় রান্নায় ব্যবহার করা হয়। এর গন্ধ কড়া বলে অল্প পরিমাণে দিলেই চলে। ইউরোপ ওএশিয়া মহাদেশের প্রায় সব দেশেই এর ব্যবহার রয়েছে। ইন্দোনেশিয়ার বিভিন্ন সিগারেটে সুগন্ধি হিসাবে লবঙ্গ ব্যবহার করা হয়। চীনা ও জাপানীরা ধুপ হিসাবে লবঙ্গ ব্যবহার করে থাকে। ভারতীয় উপমহাদেশের খাদ্যে দীর্ঘকাল ধরে লবঙ্গ ব্যবহার করা হয়ে আসছে। মেক্সিকোর খাদ্যেও এর ব্যবহার রয়েছে। লবঙ্গের সুগন্ধের মূল কারণ "ইউজেনল" (Eugenol) নামের যৌগ। এটি লবঙ্গ থেকে প্রাপ্ত তেলের মূল উপাদান, এবং এই তেলের প্রায় ৭২-৯০% অংশ জুড়ে ইউজেনল বিদ্যমান। এই যৌগটির জীবাণুনাশক এবং বেদনানাশক গুণ রয়েছে।



ভেষজগুণ:  যুগ যুগ ধরে আর্য়ুবেদিক শাস্ত্রে লবঙ্গের বহুল ব্যবহার রয়েছে।

১। দাঁতের ব্যথায় উপকারি: লবঙ্গ দাঁতের ব্যথা দূর করে। মাড়ির ক্ষয় নিরাময় করে। প্রায় সব টুথপেস্টের কমন উপকরণ এই লবঙ্গ।
২। বমিবমি ভাব দূর করে: লবঙ্গের সুগণ্ধ বমিবমি ভাব দূর করে। লবঙ্গ কিছুটা সতেজও করে তোলে।
৩। সর্দি-কাশিতে: সর্দি-কাশি খুব কমন একটা ব্যাপার এই বর্ষাকালে। সর্দিকাশির মহৌষধ হিসেবে লবঙ্গ বহুবছর ধরেই ব্যবহৃত হয়ে আসছে।
৪। সাইনোসাইটিস: সাইনোসাইটিস রোগে লবঙ্গ খুব উপকারি। সাইনোসাইটিসের রোগীদের চিকিৎসায় লবঙ্গ ঔষধ হিসেবে ব্যবহৃত হয়।
৫। পেট ফাঁপা: পেট ফাঁপা রোগ নিরাময়ে লবঙ্গ ব্যবহার হয়। সাধারণত চায়ের সাথে লবঙ্গ মিশিয়ে পান করলে পেট ফাঁপা থেকে উপসম পাওয়া যায়।
৬। কামোদ্দীপক ও যৌনরোগে: লবঙ্গ কামোদ্দীপক। এর সুবাস অবসাদ দূর করে, শরীর ও মনের ক্লান্তি ঝরিয়ে দেয়। যৌনরোগেও এর বহুল ব্যবহার আর্য়ুবেদিক শাস্ত্রে রয়েছে।
৭। মানসিক চাপ লাঘব করে: তুলসি, পুদিনা, এলাচ ও লবঙ্গ মেশানো পানির শরবত মানসিক চাপ দূর করতে সহায়তা করে।
৮। ব্রণের চিকিৎসায়: লবঙ্গ ব্রণের চিকিৎসায় ব্যবহৃত হয়। ব্রণের দাগ দূর করতেও লবঙ্গের পেস্ট খুব কার্যকর।
৯। রক্ত পরিশোধন করে: লবঙ্গ শরীর থেকে ক্ষতিকর উপাদানগুলো সরিয়ে রক্তকে পরিশোধন করতে ভূমিকা রাখে।
১০। পিপাসা রোগে: যারা পিপাসা রোগে প্রায়ই আক্রান্ত হন; বার বার পানি খেতে হয়। এর ফল কিন্তু ভাল নয়। এই অবস্থায় ১ গ্রাম লবঙ্গ চূর্ণ ২-৪ ফোটা মধুর সাথে মিশিয়ে সকালে ও বিকালে চেটে চেটে খেলে-পিপাসা চলে যাবে। যার জন্য বেশি কিছু আর হতে পারবে না।
১১। খাবারে অরুচি: বিভিন্ন রোগ বিশেষ করে পেটের রোগে এবং জ্বরে ভোগার পার খাবারে অরুচি দেখা দেয়। ভাত-রুটি, মাছ-মাংস, মিষ্টান্না বা যেকোন উপাদেয় খাবরে পর্যন্ত রুচি হয় না সেক্ষেত্রে অল্প ভাজা ১ গ্রামের চারভাগের একভাগ লবঙ্গ চুর্ণ সকালে খালি পেটে দুপুরে খাবরের পরে খেলে খাবারে রুচি ফিরে আসবে।


১২। মাথার যন্ত্রণা: ধোঁয়া, রোদ এবং ঠান্ডার জন্য শ্লেষ্মা বেড়ে নানা ধরনের মাথা ব্যথা বা মাথার রোগ দেখা দিতে পারে:   ১। সন্ধ্যার পরে মাথার যন্ত্রণা বাড়তে পারে-যা টিপলে বা ফিতা দিয়ে বেধে রাখল আরাম বোধ হয়। ২। মাথা দিয়ে যেন আগুন ঝরছে, মাথায় ঠান্ডা পানি ঢাললে কিছুক্ষণ ভাল লাগে; পরবর্তিতে আবার সেই একই অবস্থা। ৩। রাতে সাড়া মাথা ও ঘাড়ে তীব্র আড়ষ্টবোধ যন্ত্রণা দেখা দেয়। ৪। মাথায় তীব্র যন্ত্রণা শুধু দিনের বেলায়; রাতে থাকবে না। ৫। রক্তগত শিরোরোগে খুবই মারাত্মক অবস্থার সৃষ্টি করে। ৬। যাদের অন্ত্রে ক্রিমির উপদ্রব যেদিন বাড়বে, সেদিনই মাথার যন্ত্রণা হবে, বোঝা যাবে না কেন মাথা ব্যথা হচ্ছে। ৭। অধকপালি: মাথার একদিকে এই ব্যথা অনুভব হয়; করো রাতে কারো দিনে।৮। অনেক সময় অতিরিক্ত গ্যাস ফর্ম করলেও তীব্র মাথা ব্যথা দেখা দেয়-কিন্তু বোঝা যায় না কেন মাথা ব্যথা করছে।



উপরিউক্ত মাথার যন্ত্রণায় এক গ্রামের চার ভাগের এক ভাগ লবঙ্গ চূর্ণ দিনে ২-৩ বার গরম পানির সাথে মিশিয়ে খেলে উপকার পাওয়া যাবে। লবঙ্গের বাহ্যিক প্রয়োগ: চোখ ওঠায়-আধ কাপ গরম পানিতে ২-৩টি লবঙ্গ অল্প থেঁতো করে ২-৩ ঘন্ট ভিজিয়ে রেখে ছেকে নিয়ে সেই পানি দিয়ে চোখে দিলে পিচুটিপড়া ও চোখের লালভাব এবং যন্ত্রণা কমে যাবে।


জীবাণুনাশক:  লবঙ্গের তেলের জীবাণুনাশক গুণ রয়েছে। এটি ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়া দূর করতে খুবি কার্যকর।




৬টি মন্তব্য:

babu বলেছেন...

বাংলাদেশ লবঙ্গ চাষে উৎসাহিত করা লাগবে তাইলে দেশের মানুষ অর্থনৈতিক ভাবে লাভবান হবে

Unknown বলেছেন...

কোথায় চারা পাওয়া যাবে???

আহমাদ মাগফুর বলেছেন...

মশলা গুলো আমাদের গৃহিণীরা রান্নায় ব্যবহার করে যায় আর আমরা চোখ বুজে খেয়ে যাই, এগুলো কোথায় কেমন করে হয়, এগুলোর আরও ভিন্ন ব্যবহার আছে কি না সেসব কিছুই জানি না, জানার চেষ্টাও করি না। এটা আমাদের জন্য লজ্জাজনক!

আহমাদ মাগফুর বলেছেন...

মশলা গুলো আমাদের গৃহিণীরা রান্নায় ব্যবহার করে যায় আর আমরা চোখ বুজে খেয়ে যাই, এগুলো কোথায় কেমন করে হয়, এগুলোর আরও ভিন্ন ব্যবহার আছে কি না সেসব কিছুই জানি না, জানার চেষ্টাও করি না। এটা আমাদের জন্য লজ্জাজনক। রান্না আর খাওয়ার ফাঁকে এসবের উৎস,তত্ত্ব, তথ্য ইত্যাদিও আমাদের জানতে হবে। ধন্যবাদ তথ্যভিত্তিক লেখাটির জন্য। - আহমাদ মাগফুর

Unknown বলেছেন...

1)-🔱Mangalmayee manashatarapith Yogasaram Nath Tirthanath Samprodhya Akhara.🔱
 বর্তমান সমাজে কুবিদ্যার প্রভাব থেকে রেহায় পাওয়ার বিদ্যা গ্রহনের ট্রেনিং।
🌺যেমন:-  বান,চালান,বিচ্ছেদ, উচ্চাটন,বশীকরন,যাদু-টোনা,মারন, বাডিতে বিভিন্ন প্রকারের খতি, মাদুলী, গাছ-গাছডা,শ্মশান-মশান,কবর,রাস্তা ঘাটে পোতাপুতি,এমনকি মৃতু বান,চালান থেকে রেহাই।অকাল মৃতু,দূরঘটনা থেকে রেহাই পাইবার বিদ্যা শিখানো হয| 💝
🔱এছাডা হাত বাটি চালান,আয়না ভরন,নল চালান,বান চালান রিটান, পোতা পুতি রিটান করা,তুলা রাশির উপর দেব-দেবীর ভরন,অসুর অপদেবতা যোগিনী ডাকিনী ভরন, চুরি,হারিযে যাওয়া,পালিয়ে যাওয়া, নিখোঁজকে জানার জন্য ভরন।এমনকি মাটির নিচের জিনিষকে জানার ভরন বিদ্যার শিখানোর ব্যাবস্থা আছে।🔱   
🌸বিশেষ করে,যারা হিমালয়ের গোপন বিদা বা বিশেষ বিদ্যা শিখতে চান,তারা যোগাযোগ করতে পারেন
👐যে সকল সাধক-সাধিকারা হঠযোগ,ক্রিয়াযোগ,সূয্য সাধন যোগ,ছট্ চক্রযোগ সাধন,ভূতশুদ্ধি যোগ,রাজযোগ,সুদশন যোগ,বীয্য ও রেত্ ধারন যোগ সাধন,তন্ত্রে ভৈরব-ভৈরবী চক্রানুষ্ঠানের সাধনের ট্রেনিং করিতে ইচ্ছুকরা যোগাযোগ করিতে পারেন।বিস্তারিত জানতে Prospectus সংগ্রহ করুন 501/- বিনিমযে।  🍎
🙏 Khyapababa Swamaji. Call me :- +919748328971 or +916291180629👏
2):-আশ্রম থেকে প্রকাশিত গ্রন্থগুলী যেমন,-১)নিত‍্য কামাখ্যা পূজা পদ্ধতী।₹-250/-২)বৃহ‌ৎ চিতা (শশ্মান) সাধন প্রক্রিয়া।₹-580/- ৩)বৃহৎ ভৈরব-ভৈরবী চক্রানুষ্ঠান।₹-250/-৪)মন্ত্র সিদ্ধির গুপ্ত জপ রহস‍্য।₹-280/- ৫)কৌল প্রতক্রিত‍্যম্ ও সন্ধ‍্যা ক্রিয়া।₹-150/- ৬)বৃহৎ ভূতশুদ্ধি ক্রিয়া।₹-250/- ৭)বৃহৎ ছিন্নমস্তা পূজা পদ্ধতি।₹360/- ৮)বৃহৎ তন্ত্রোক্ত শীতলা পূজাপদ্ধতি।₹-330/- ৯)বৃহৎ তান্ত্রিক মনসা পূজাপদ্ধতি।₹-300/- ১০)বৃহৎ হোম যজ্ঞ বিধি।₹-310/- ১১)হর-পাব্ব্তী চক্রানুষ্ঠান পূজাপদ্ধতি।₹-350/- ১২)রাধাকৃষ্ণ চক্রানুষ্ঠান পূজাবিধি।₹-330/- ১৩)বৃহৎ ভূবনেশ্বরী পূজাপদ্ধতি।₹-280/- বাড়িতে বসে কুরিয়ার সার্ভিসে পেতে আমাদের এই ব‍্যাঙ্ক নাম্বারে পুস্তকের মূল‍্য এবং কুরিয়ার খরচ সহ ফুল ঠিকানা অবশ‍্যয় পাঠাবেন। Dr.Nani Gopal Sarkar. SBI A/c No.11858817833.IFS Code:SBIN0006041.Nimtala Bazar.NADIA.Pin-741257.whats app No.±919748328971

Unknown বলেছেন...

চারা কোথায় বা কিভাবে পাবো,,,,,,,,