শুক্রবার, ৮ মে, ২০১৫

কামসূত্র বশীকরণ __কামসূত্রঃ পর্ব – ৭


     

৭.১ সৌন্দর্য সাধন ও কাম বর্ধন

 প্রেম বিষয়ে সু-ফল পেতে হলে যে কটি কাজ অবশ্যই জানতে হবে তা হলো-
(১) দৈহিক সৌন্দর্য। এই সৌন্দর্যই নারীকে টেনে আনে। যেমন আগুনের দিকে পতঙ্গ ছুটে যায়।
(২) গুণাবলী। যে সকল গুণের কথা পুস্তকের প্রথম দিকে লেখা আছে।
(৩) যৌবন। যৌবন না থাকলে সুন্দর পুরুষ কোন নারীকে প্রেমে ফেলতে পারে না।
(৪) হৃদয়ের ঔদার্য্য।


নারীর সৌন্দর্য চর্চা
১। প্রত্যহ স্নান। সুগন্ধি সাবান দিয়ে স্নান করলে আরো ভাল হয়।
২। প্রত্যহ মাথা আঁচড়ে বেণী বাঁধা।
৩। মালা বা ফুল ব্যবহার।
৪। অলঙ্কার পরিধান।
৫। গন্ধ দ্রব্য ব্যবহার।
৬। মুখে পান।
৭। লিপষ্টিক ঠোঁটে দেবে।
৮। প্রত্যহ পরিষ্কার বস্ত্রাদি পরবে।
৯। যে ভাবে প্রসাধন করলে ভাল হয় বা নিজেকে সুন্দর দেখায় তা করবে।
১০। সর্বদা পরের রুচিমত ভাল পোষাক পরিধান করবে।

পুরুষের সৌন্দর্য চর্চা
যাতে মুখে দুর্গন্ধ না থাকে, সেজন্য রোজ সকালে বিকালে মুখ ধোবে।
২। রোজ স্নান করবে।
৩। সাবান দিয়ে গাত্রমার্জন করবে।
৪। সুগন্ধ দ্রব্য ব্যবহার করবে।
৫। কেশ আঁচড়াবে।
৬। দাড়ি মুন্ডিত করবে
৭। সর্বদা ভাল পোষাক পরিচ্ছদ পরবে।

বশীকরণ কাম উপদেষ্টগণ বলেন- পুরুষ ও নারীর কাম অভিযানের আগে প্রয়োজন যৌবন সাধনা। বাৎস্যায়নের মতে সৌন্দর্য বৃদ্ধির জন্য নিম্নলিখিত দ্রব্যাদি ব্যবহার করা যেতে পারে-
 
১। টগর ফুল, সাদা কূজ এবং তুলসী পত্র একত্রে মাড়িয়া সর্বাঙ্গে প্রলেপ দেবে। এতে কুৎসিত মানুষকেও সুন্দর করে তোলে।
২। উপরোক্ত তিন প্রকার উপাদান সূক্ষ্ম ভাবে গুঁড়া করতে হয়। তারপর পশম বস্ত্রের সলতেতে লাগিয়ে আগুনে পোড়াবে। আগুনে পোড়াবার পূর্বে ঐ সলতে অক্ষ তেল দিয়া ভিজাবে। এই সলতে পোড়ানো ধুন বা কালি নর-কঙ্কালে লাগাতে হবে। এইকাজলপুরুষ কপালে লাগালে, তার কামনার নারী অবশ্যই বশীভূত হবে।
৩। পুনন বা, সহাদেবী, কুরন্টক, সরিষা গাছ, নীল পদ্ম এক সঙ্গে শিশোমাস্‌ তেলে ফুটিয়ে মলম তৈরী করবে। এই মলম অঙ্গে প্রলেপ দিলে কুৎসিৎ ব্যক্তিকেও সুন্দর করে তোলে। এতে বাঞ্ছিতা নারীও বশীভূত হয়।
৪। শ্বেত পদ্ম, নীল পদ্ম ও নাগ গাছের শুষ্ক ফুল একত্রে গুঁড়া করে ঘৃত ও মধুসহ সেবন করলে মানুষ সুন্দর হয়। সে রমণীগণের প্রিয় হয়ে ওঠে।
৫। শ্বেত পদ্ম, নীল পদ্ম, নাগ গাছের শুকনা ফুল, টগর পাতা, তুলসী পাতা ও তামল গাছের পাতা এক সঙ্গে চূর্ণ করে মলম তৈরী করবে। এই মলম গাত্রে প্রলেপ দিলে মানুষকে সুন্দর করে তোলে।

 

সঙ্গম ক্ষমতা বৃদ্ধির উপায়-  
১। কামশাস্ত্র অধ্যাপকরা বলেন, ধুতুরা, কালো মরিচ ও পিপুল সমপরিমাণ একত্রে গুঁড়া করবে। তাপর সমপরিমাণ মুধুর সঙ্গে একত্রে মিশিয়ে মলম করবে। এই মলম লিঙ্গ মুণ্ডে লাগিয়ে পরে তাহা পরিষ্কার করে ফেলতে হয়। এখন এই পুরুষ যে নারীর সঙ্গে সঙ্গমে ব্রতী হবে, সে নারী, এ পুরুষ ব্যতীয় অন্য কোন পুরুষকে পছন্দ করবে না। সঙ্গমও দীর্ঘস্থায়ী হয়।
২। ঝড়ে ফেলে যাওয়া গাছের তেজ পাতা, শবের মাথার পুড়ে যাওয়া অবশিষ্টাংশ ও ময়ূরের অসিএক সঙ্গে বেঁটে গুঁড়া করবে। এই গুঁড়া যদি নারী পুরুষের পায়ে, কিংবা পুরুষ নারীর মাথায় মেখে দিতে পারে, তা হলে ঐ পুরুষ বা নারী অবশ্যই বশীভূত হবে।
৩। যদি কোন স্ত্রী লোক শকুনের স্বাভাবিক মৃতদেহ সংগ্রহ করে শুকিয়ে গুড়ো করে নেয়। তারপর সেই গুঁড়ো মধুর সহিত মিশিয়ে ্লানের পূর্বে আপন অঙ্গে মর্দন করবে। কয়েক দিন এর রকম করলে বাঞ্ছিত পুরুষ অবশ্য তার বশীভূত হবে। ইহাতে প্রেম ভালবাসা সুদৃঢ় হয়।
৪। যদি কোন লোক সুনুহ (Cuphortra Nellifolia) গাছের শিকড় ও গন্ড (acacic catechu) গাছের পল্লব মিশিয়ে বিশুদ্ধ গন্ধক সহ Red Arsenic -এ সাত বার ডোবাবে ও সাত বার শুকোবে। তারপর ঐ গুড়ো মধুর সহিত মিশিয়ে প্রলেপ দেবে। ইহার পর সে যে নারীর সহিত সুরত কার্যে রত হবে সে নারী চিরদিন এই পুরুষের দাসী য়ে থাকবে।
৫। কোনও শিংশপা (শিশু) গাছে একটি ফুটো করবে (যেখান থেকে পাতা গজিয়েছে এমন জায়গা)। শেষে ঐ ফুটাতে আম্রফলের আঁটির তেল কতকগুলি বচার (বচের) (Acorus calamus) খণ্ড দিয়ে ফুটো বন্ধ করে দিতে হবে। ছয় মাস পরে, ঐ দ্রব্যগুলি ফুটা খুলে বের করতে হবে। তারপর এ দিয়ে একটি মলম তৈরী করতে হবে। ঐ মলম যদি কোনও পুরুষ তাহার সমস্ত অঙ্গে প্রলেপ লাগায়, তাহা হলে সে দেবতার মত দেখতে সুন্দর হয় এবং সমস্ত নারীর মনাকর্ষণ করতে পারে।
৬। উদর্‌ কিডল (Phascolus Radiatus) তার ভূষি না বাদ দিয়ে, পরিষ্কার করে, ভেজে নেবে ও গো দুগ্ধে ইহা স্‌দ্িধ করতে হয়। তারপর ইহা অর্ধেক ঝোলে (soup) পরিণত করে তাহা মধু ও ঘৃতে মিশ্রিত করতে হয়। কামসূত্ররূপী অধ্যাপকগণ বলেন, ইহা ভোজন করলে পুরুষকে বহু নারীর সঙ্গে সুরতে ক্ষমতাশালী করে তোলে।

 
৭। ভিদারি এবং স্বায়ংগুপ্তর শিকড় এক সঙ্গে গুঁড়া করে ময়দার সহিত মিশিয়ে চিনি, মধু ও ঘৃতের সহিত মিশিয়ে লেচি তৈরি করতে হয়। ইহা হতে পিষ্টক তৈরী করে খেতে হবে। ইহা খেলে একসঙ্গে বহু নারীর সহিত সুরত কার্য করতে সক্ষমতা লাভ করে।
৮। চাউল, চটক (চড়ুই পাখীর) ডিম্বের সহিত চটকে তারপর শুষ্ক করতে হবে। পরে দুগ্ধে সিদ্ধ করে পায়েসে পরিণত করতে হবে। এই পায়স মধু এবং ঘৃতের সহিত মিশিয়ে খেলে সুরতে যথেষ্ট শক্তি দান করে।
৯। সিসেমাম্‌ (sesamum) বীজের খোসা ছাড়িয়ে, চাতক পাখির ডিমের সহিত মিশ্রিত করতে হবে। পরে শুষ্ক করে নিতে হবেতারপর শৃঙ্গাটক, কেসুর ও স্বয়ংগুপ্ত বীচির সহিত মিশ্রিত করে ময়দা বা আটায় মিশিয়ে দুগ্ধ এবং ঘৃতে সিদ্ধ করতে হবে। এই সুপ (soup) তৈরী করতে হবে। ইহা সেব করলে বীর্য কামশক্তি ও দীর্ঘ জীবন লাভ করে
। শতভরি, (asparagus saaramantosus) এবং গোক্ষুর গাছের ছালের রস গুড়ের সহিত মিশ্রিত করে, পিপুল ও দারুচিনি গুঁড়া করে মেশাবে। গোদুগ্ধ ও ভেড়ার ঘৃত দিয়ে সিদ্ধ করে চাটনী তৈরী করতে হবে। পুষ্যা নক্ষত্রের সঙ্গে যে দিন চন্দ্রের মিলন হয়, সেই দিন থেকেই ইহা খেতে আরম্ভ করতে হয়। ইহাও খুবই শক্তি বর্ধক বীর্য প্রসবক।
। সমান ভাগ শতভরি, গোক্ষুর এবং শ্রীপর্নি ফল নিতে হবে। তাহা জলে সিদ্ধ করতে হবে। যখন মাত্র সিকি ভাগ থাকবে, তখন আগুন থেকে নামাবে। ইহা পুষ্যা নক্ষত্র যুক্ত চন্দ্রের দিনে খেতে হয়। ইহা খেলে শরীরে বীর্য ও গুণ বাড়তে দেখা যায়।
 । গোক্ষর এবং বার্লি সমান বাগে মিশাবে। প্রত্যেক দিন সকালে ঐ মিশ্রিত দ্রব্যের ক্কথ এক পলা করে খেলে ইহাতে বুদ্ধি, আয়ু এবং রতি শক্তি বৃদ্ধি পায়। এ সকল ব্যবস্থা আয়ুর্বেদ, অর্থববেদ এবং তর্কশাস্ত্র হতে গৃহীত হয়েছে। তবে এ সকল উপাদান খেতে হলে, শরীরে যাহাতে কোনও ক্ষতি না হয়, এমনভাবে খেতে হবে। আধুনিক যুগে উপরোক্ত উপাদান, পর্বত অরণ্য ইত্যাদি স্থান থেকে সংগ্রহ করা খুবই দুষ্কর। শুধু-যে সকল বস্তু মহর্ষি বাৎস্যায়ন সকল বেদ ও তন্ত্রশাস্ত্র হতে উল্লেখ করেছেন

রতি কার্যে নানাবিধ ব্যবস্থা যে সকল পুরুষ রতিকার্য করে নারীর কাম উত্তেজনা শান্ত করতে পারে না তাহাদিগের উচিত আয়ুর্বেদ, অথর্ব বেদ ও তন্ত্রশাস্ত্র হতে উদ্ধৃত উপাদান ব্যবহার করা তাহাদিগের কর্ত্তব্য, সুরত আরম্ভ করবার আগে, নারীর যোনিরন্ধ্রে আপনার দ্বিতীয় ও তৃতীয় করাঙ্গুলি একত্রিত করে তাহার দ্বারা ইহা সুগম করে নেওয়া। পরে ঐ নারীর রস্তক্ষয় আম্ভ হবার মত হবে তখন আপনার লিঙ্গ মুন্ড যোনিতে প্রবেশ করিয়ে দেবে। এইভাবে নারীর যৌন কন্ডুয়ন নিবারিত হতে পারে। কৃত্রিম লিঙ্গ যে সকল পুরুষ খুব দুর্বল স্থুল শরীর ও বার্ধক্যবশতঃ ক্লান্তিবোধ করে, ইহারা পুরুষাঙ্গ শক্ত করতে পারে না। তাহারা কৃত্রিম লিঙ্গ মুন্ড ব্যবহার করে। ইহা লিঙ্গে লাগিয়ে নারীর যোনির মধ্যে প্রবেশ করাইয়া দিতে পারে।

 

আচার্য্য বাভ্রব্য বলেন-ইহার উদ্দেশ্যে সুবর্ণ বা রৌপ্য, তাম্র বা লৌহে প্রস্থত লিঙ্গ-মুন্ড ব্যবহার করা যেতে পারে; বাৎস্যায়ন বলেন, কাষ্ঠের নির্মিত লিঙ্গ মুন্ডও ব্যবহার করা চলে। যে কৃত্রিম লিঙ্গ মণ্ডু ব্যবহার করতে হবে, তা যেন পুরুষের স্বাভাবিক লিঙ্গ মুণ্ডের মত দীর্ঘ হয়, এবং তার বাইরের দিকটা অমসৃণ হবে। ছোট ছোট উঁটু-নীচু কাঁকরের মত থাকবে। যথা, একটি বাঁশের পিপ তেল মেখে, তাহা কোমরের সহিত একটি সূতা দিয়ে বেঁধে রাখবে এবং রতিকালে তা লাগিয়ে নেবে। তারপর আমলকির ছোট ছোট দানা লিঙ্গের মূলে (গোড়ায়) লাগিয়ে তার সহিত কৃত্রিম লিঙ্গমুণ্ড জুড়ে দেবে। দক্ষিণ দেশে এক প্রকার প্রথা আছে। যেমন কারো লিঙ্গমুণ্ড ক্ষুদ্র হলে, তার ফুটার মধ্যে একটু তীক্ষ্ম সূচ দিয়া ফুটা করে দিতে হয়। যেমন বালক বালিকার কর্ণে ফুটা করে দেওয়া হয়, সেইরূপে লিঙ্গ মুন্ডের ফুটা বাড়িয়ে দিতে হয়। তাতে ক্রমশঃ লিঙ্গ মুন্ড স্ফীত হতে পারে। যে কৃত্রিম লিঙ্গ মুন্ডের কথা বলা হয়, তাহা নানা প্রকারের করা যায়। কোনটা অর্দ্ধগোলাকার, কোনটা গোলাকার, কোনটা পদ্মের মত, আবার কোনটা হস্তিদন্তর মত করা যায়।




 

বৃহস্পতিবার, ৭ মে, ২০১৫

কামসূত্র যৌন মিলন__কামসূত্রঃ পর্ব – ৬

 

৬.১ নর-নারীর শ্রেণী বিভাগ ও সঙ্গম


পুরুষদের শ্রেণীবিভাগ ও সঙ্গম নারী ও পুরুষের সংযুক্ত রতিক্রিয়ায় উভয়ের যে চরম উল্লাস হয় তার অধিকাংশ নির্ভর করে মন ও শরীরের ওপর। মনস্তত্ত্বের দিক দিয়ে বলা যায় নারী ও পুরুষের মন পরস্পরের দিকে যথেষ্ট আকৃষ্ট থাকলে অর্থাৎ উভয়ের ভালবাসা পরস্পরের প্রতি প্রবল হলে এই যৌন সঙ্গমের সূখ খুব উচ্চস্তরের হয়। কিন্তু দেহাংশের ওপরেও এই সুখ কোধ অনেকটা নিভর করে। কেননা পুরুষের পুরুষাঙ্গ নারীর যোনির ভেতর প্রবেশ করে ঘর্ষণ করলে পুরুষের বীর্যপাত ঘটে এবং সেই সময়ই পুরুষের সুখ সর্বোচ্চ মাত্রায় ঘটে। নারীরও যোনি ঘর্ষণে ও তথা থেকে রস স্খলনেই অধিক মাত্রায় সুখ অনুভূত হয়। সুতরাং পুরুষাঙ্গের দৈর্ঘ্য ও নারীর যোনির বিস্তারের ওপরেই নারীর সুখ বোধ নির্ভর করে।

 
পুরুষের পুরুষাঙ্গ সাধারণতঃ তিনভাবে বিভক্ত।
১। শশকীয়।
২। বৃষকীয়।
৩। অশ্বকীয়।
১। শশকীয় লিঙ্গঃ  তার বচন হবে মিষ্ট, মন সদা প্রফুল্ল, সে দেখতে সুন্দর এবং কোঁকড়ানো চুল বিশিষ্ট, তার মুখ গোলাকার এবং দেহ মধ্যাকারের। তার হাত পা খুব হালকা এবং সুন্দর। তার আত্নসম্মান জ্ঞান আছে। গুরু ও জ্ঞানীজনে ভক্তি থাকে। এর পুরুষাঙ্গ ছয় আঙ্গুল লম্বা এবং বীর্য থেকে সুরভিগন্ধ বের হয়। সে খুব হালকাভাবে বেড়ায় এবং কামেচ্ছা মাঝে মাঝে উদ্ভূত হয়।
 
২। বৃষকীয় লিঙ্গঃ  এরূপ ব্যক্তিও কিছু পরিমাণে মধুরভাষী হয়। তার ঘাড় গর্দান বলিষ্ঠ, কর্কশ কণ্ঠস্বর, রক্তবর্ণ হস্ত পদ এবং গতি চমৎকার। তার ভ্রু খাড়া এভং পেট কচ্ছপাকারে গোলাকার। তার বীর্য এবং দেহ থেকে লবণাক্ত আস্বাদ বের হয়। তার গতি মাঝারি রকমের কিন্তু তিক্ত স্বাভাব। তার পুরুষাঙ্গ নয় আঙ্গল দীর্ঘ।
 
৩। অশ্বকীয় লিঙ্গঃ  এরূপ লোক সাধারণতঃ বাচাল, মুখ হয় লম্বা। লম্বা ও সরু কান, মাথা ও অধর ওষ্ঠ সরু। তার কেশ ঘন সন্নিবিষ্ট ও বক্র। তার হাত পা খুব লম্বা এবং দৃঢ়। তার লম্বা অঙ্গলি কিন্তু নখের চেহারা সুগঠিত। তার স্বর যেন মেঘ গর্জন এবং সে দ্রুত পা ফেলে হাঁটে। তার শুক্র থেকে যেন মদের গন্ধ বের হয়। তার পুরুষাঙ্গ প্রায় বারো আঙ্গুল লম্বা হয়ে থাকে।

এইভাবে নারীর যোনিও তিনভাগে বিভক্ত।
১। হরিণী যোনি
ঘোটকী যোনি।
৩। হন্তিনী যোনি।
 
১। হরিণী যোনিঃ  এদের চটুল চক্ষুতে লাল রেখা থাকে। তাদের মুখ পদ্মের মত প্রফুল্ল, বাবলা জাতীয় গাছের ফুলের মত তাদের গাত্র চর্ম কোমল হয়। এদের স্তনও হয় কদম্ব গাছের ফুলের মত গোলকার বিশিষ্ট ও নরম। গাত্র চর্ম হয় চম্পা পুষ্পের মত শ্বেতবর্ণ, টিয়াপাখীর নাকের মত তাঁদের নাসিকা তীক্ষ্ণ ও লম্বা, দন্ত হয় মুক্তার মতো এবং গমনধারা হয় রাজহংসীর মত। কোকিলের মত কণ্ঠস্বর হয় সুমধুর। হরিণীর মত হয় গ্রীবা। তাঁরা গুরুজন ব্রাহ্মণ, শিক্ষক ও দেবদেবীর প্রতি বিশেষ ভক্তিমতী হয় শুভ্র বসন পরিধান করে। খায় খুব অল্প পরিমাণে। যদিও এরা বিলাসবর্তী হয় না। তথাপি অনুভূতিতে বেশ পারদর্শিনী। কথা বলে কম, ঘুমায় অল্প। তাঁদের যোনি ছয় আঙ্গুল গভীর এবং পদ্মগন্ধা।
 
২। ঘোটকী যোনিঃ  কৃশা ও স্থুলকায় হতে পারে। কিন্তু দীর্ঘকায় বহুবর্ণ বিশিষ্ট বেশভূষা এদের প্রিয় জিনিস। এরা ধৈর্যহীনা, এদের স্তন হয় শিথিল। চক্ষু হয় কাপর্দ ও শ্যামবর্ণ কিন্তু বাঁকা চোখে কটাক্ষ মারতে খুব পটু। এরা তাড়াতাড়ি হাঁটে। পুরুষের সঙ্গে সহবাসে বড়ই প্রিয় এবং রতি কলায় দংশন আঁচড় এবং চিমটিতে বড়ই অগ্রসর। সুবিধা হলে অত্যধিক মদ্য পান করতে পারে। এদের কণ্ঠস্বর কর্কশ এবং চিৎকার প্রবণ। লম্বা লম্বা দাঁত এবং খাঁড়া খাঁড়া চুল এদের বিশেষত্ব। অত্যন্ত নিদ্রালু। এদের যোনি হয় নয় আঙ্গুল গভীর এবং মৎস্যা গন্ধ্যা।
 
৩। হস্তিনী যোনিঃ  এদের গতি ভঙ্গী হস্তিনীর মত। এদের আঙ্গুল হয় মাংসল এবং বাঁকা বাঁকা। গ্রীবা হ্রস্ব এবং মাংসল হয়ে থাকে। ওষ্ঠাধর হয় পুরু পুরু। নিতম্ব বিশেষ চর্বিযুক্ত প্রচুর খাদ্য খেতে পারে। এরা হস্তিনীর মত নিদ্রা যায়। এদের অঙ্গে বহু লোম থাকতে দেখা যায়, আচরণ হয় নির্লজ্জ। এর সর্বদাই পুরুষ সহবাসের জন্য প্রস্থত কিন্তু বেশির ভাগই দেখা যায় অর্থের বিনিময়ে। এদের যোনি খুব প্রশস্ত এবং প্রয়োজন অনুযায়ী যে কোনও আকারের লিঙ্গ ধারণ করতে পারে। পুরুষাঙ্গের দৈর্ঘ্য পুরষের পুরুষাঙ্গ ছয়, নয় এবং বারো আঙ্গুল দীর্ঘ হয়ে থাকে এবং দৈর্ঘ্য অনুযায়ী স্থুলত্বও কম বেশী হয়ে থাকে।
 
নারীর যোনির দৈর্ঘ্য নারীর যোনিও ছয়, নয় ও বারো আঙ্গুল হতে পারে। কিন্তু প্রয়োজন অনুযায়ী বা উত্তেজনায় এদের যোনির ব্যাস মাংসপেশীর ক্রিয়ার দরুন কম বেশী হতে পারে। পুরুষের পুরুষাঙ্গ এবং নারীর যৌনাঙ্গ যদি সমান ব্যাসবিশিষ্ট ও দৈর্ঘ্যযুক্ত হয় তা হলে সঙ্গমকালে উভয়ে বেশ সমান আনন্দ পেতে পারে একে বলা হয় পূর্ণ মিলন বা সম আনন্দ। কোন শশকলিঙ্গ পুরুষ যদি হরিণী যোনিবিশিষ্ট্য নারীর সহিত সঙ্গম কার্য্য করে অথবা কোন বৃষ লিঙ্গ পুরুষ যদি হস্তিনী নারীর সঙ্গে সহবাস করে-তা হলে পুরুষাঙ্গ ও যোনি ঠিক খাপে খাপে লাগতে পারে।


 
অসমান রতি এই অসমান রতিক্রিয়া পাঁচ ভাগে বিভক্ত হয়-
১। শশকীয় পুরুষ ও ঘোটকীয় নারী।
২। ঘোটকীয়া পুরুষ ও হস্তিনী নারী।
৩। বৃষকীয় পুরুষ ও হস্তিনী নারী।
৪। ঘোটকীয় পুরুষ ও হরিণী নারী।
৫। ঘোটকীয় পুরুষ ও ঘোটকীয়া নারী।
 
অসমান সহবাসের অন্য বিভাগ অসমান সহবাস আবার দুই শ্রেণীতে বিভক্ত যথা- যদি পুরুষের লিঙ্গ নারী যোনির গভীরতাকে ছাড়িয়ে যায় যেমন বৃষ জাতীয় পুরুষ হরিণী জাতীয় পরুষ হরিণী জাতীয়া নারীর যদি সঙ্গম হয় তাকে বলা হয় কলিন যোগ। কিন্তু ঘোটকীয় পুরুষাঙ্গ এবং হরিণীর যোনিকে বলা হয় কঠিনতর যোগ কেননা এই শ্রেণীর পুরুষ ও নারীর সহবাস অত্যন্ত কষ্টকর হয় ও বেদনাদায়ক হতে পারে। অপরপক্ষে শশকীয় পুরুষ ও ঘোটকীয় নারীর সহবাস অথবা বৃষ ও হস্তিনীর সহবা হয় শিথিল যোগ। 

এই দুই প্রকার রতিক্রিয়ার মধ্যে বৃষ ও হস্তিনীর সহযোগ শিথিলতর যোগ হয় কারণ যদিও পুরুষাঙ্গ সম্পূর্ণভাবে যোনির মধ্যে হয়তো অর্ধেকের বেশি প্রবেশ করতে পারে না। এক্ষেত্রে পুরুষাঙ্গ ও যোনির দৈর্ঘ্য-প্রস্থ এমন ব্যবধান হয় যে এরূপ সহবাসে সাধারণত সুখ ও ও অনুভূতি কিছুই হতে পারে না। আরামপ্রদ সঙ্গম সর্বপ্রকার সঙ্গমের মধ্যে কেবল তিন প্রকার সঙ্গম সবচেয়ে বেশি আরামদায়ক। কিন্তু কঠিন যোগ ও শিথিল যোগ সহবাস মাত্র মাঝামাঝি আনন্দ দান করতে পারে। কিন্তু কঠিনতর যোগ ও শিথিলতর যোগ সব প্রকার রতির মধ্যে অধম প্রকৃতির। এতে সম্পূর্ণ সঙ্গম সুখ সম্ভবপর হয় না। কিন্তু কঠিন যোগ ও শিথিল যোগের মধ্যে কঠিন যোগ অধম প্রকৃতির। এতে সম্পূর্ণ সঙ্গম সুখ সম্ভবপর হয় না। কিন্তু কঠিন যোগ ও শিথিল যোগের মধ্যে কঠিন যোগ অপেক্ষকৃত ভাল, কারণ এতে যোনি অঙ্গ পুরুষাঙ্গের ঘর্ষণ বিশেষ আনন্দপ্রদ ও নারীর তৃপ্তিদায়ক।
 
এ সব সঙ্গমে নায়কের পুরুষাঙ্গ আরও কঠিনতর সন্নিবেশিত হলেই নারী তার উরুদ্বয় ছড়িয়ে দেয়-তাতে পুরুষের দীর্ঘাকার ও বৃহদাকার লিঙ্গ ভালভাবে প্রবেশ করতে পারে। স্থুলাকার পুরুষাঙ্গ সংকীর্ষ যোনির মধ্যে প্রবেশ করাতে যোনির আগে ঘর্ষণ হয়-তাতে নারীর কাম অনেকটা শান্ত হয়- নারীর প্রবল সুখ ঘটে থাকে। কিন্তু যদি তার উল্টো হয় অর্থাৎ পুরুষাঙ্গ যদি যোনির দৈর্ঘ্য অনুযায়ী ছোট হয় তাতে নারীর সুখবোধ কিছুটা কম হয়ে থাকে সন্দেহ নেই। কামোত্তজনার প্রভাব নারী পুরুষের যৌন মিলনের সুখ, কাম উত্তেজনার প্রভাবের উপর অনেকটা নির্ভর করে। পুরুষের কাম উত্তেজনা যদি প্রবল না হয়, তাদের সঙ্গমকাল যদি বেশীক্ষণ স্থায়ী না হয় অথবা সঙ্গমকালে যদি পুরুষের শুক্র কম বের হয়, তা হলে এই সহবাসে অংশভাগিনীর সুখ বেশী হয় না।
কিন্তু যাদের কাম তীব্র তাদের রতিক্রিয়ায় নারী বেশি তৃপ্তি পেয়ে থাকে। দুর্বলকাম, মধ্যমকাম ও তীব্রকাম পুরুষ যে সব পুরুষ নারীর চুম্বন, অধর দংশন, আঁচড়ানো, কামড়ানো বিশেষ পছন্দ করে না বা তাতে উত্তেজিত হয় না, সে সব পুরুষের দ্বারা যৌন মিলন করলে, নারী সুখী হয় না। এরূপ পুরুষকে বলা হয় দুর্বল কাম পুরুষ। যে পুরুষের কাম উত্তেজনা মাঝারী রকমের তাকে বলা হয় মধ্যম কাম। আর যে সব পুরুষের কাম উত্তেজনা খুব প্রবল রকমের এবং যার বীর্য্যপাত প্রচুর পরিমাণে ঘটে এবং যে পুরুষ তার সঙ্গে রতি ক্রিয়াকারিণী নারী চুম্বন, আলিঙ্গন ও আঁচড়ানো কামড়ানোতে বেশ আনন্দে যোগদান করে সে পুরুষকৈ বলা হয় কামুক পুরুষ বা তীব্র কাম হতে পারে
 
বিভিন্ন প্রকার সমকাম ও অসমান কাম সমকাম বিভিন্ন প্রকার হয়ে থাকে। দুর্বল, মধ্যম ও প্রবল কাম পুরুষের সঙ্গে যথাক্রমে দুর্বল, মধ্যম ও প্রবল কাম নারীর মিলন। অসমান কাম নারী ও পুরুষের মিলন হয় ছয় ধরনের।
সেগুলি হলো-
(ক) দুর্বল কাম পুরুষের সঙ্গে মধ্যমা কাম নারীর মিলন।
(খ) দুর্বল কাম পুরুষ, তীব্র কাম নারীর মিলন।
(গ) মধ্যম কাম পুরুষ, দুর্বল কাম নারীর মিলন।
(ঘ) মধ্যম কাম পুরুষ, তীব্র কাম নারীর মিলন।
(ঙ) তীব্র কাম পুরুষ, দুর্বল কাম নারীর মিলন।
(চ) তীব্র কাম পুরুষ, মধ্যম কাম নারীর মিলন।
 
রতিক্রিয়ার সময় কতো সময় ধরে যৌনাঙ্গ মিলন হতে পারে সেই সময়ের ওপরেও নারী ও পুরুষের প্রভেদ নিরূপণ করতে পারা যায়। কেউ অল্পক্ষণ স্থায়ী সঙ্গমকামী; কেউ মধ্যকাল সঙ্গমকারী; কেউ বা বহুক্ষণ ব্যাপী সঙ্গমকারী। একই সময় ব্যাপী সঙ্গম উভয় পক্ষে হলেই সেই সঙ্গম সর্বোৎকৃষ্ট বলে ধরা হয়। স্ত্রী পুরুষ উভয়েরই দীর্ঘকাল স্থীয় সঙ্গম, মধ্যকাল ব্যাপী সঙ্গম বা অল্পকাল স্থীয় সঙ্গম হতে পারে। উভয় পক্ষেই কাল সমান হলে উভয়েরই সমস্থষ্টি ঘটে।


 
নারীর উল্লাস কামশাস্ত্র লেখক উদ্দলক বলেন পুরুষের যেমন সঙ্গম শেষে বীর্য্যপাত ঘটে, নারীর সেরূপ ঘটে থাকে। পুরুষ যেমন রতিক্রিয়া আরম্ভ হওয়ার সময় থেকেই স্নায়বিক আনন্দ অনুভব করতে থাকে এবং কিছুক্ষণ ধরে রতিক্রিয়া করার পর তার স্থানীয় স্নায়ুগুলি এমন উল্লাসের সৃষ্টি করে যে বীর্য্যপাত হবার সঙ্গে সঙ্গে তার দেহ মনে সুখ বোধ চরম হয়ে ওঠে। সে আনন্দ ও স্নায়ু চাঞ্চল্য একেবারে অভূতপূর্ব ও সর্বাধিক হয়ে থাকে। নারীর রতি ক্রিয়ার সঙ্গে সঙ্গে বা আরম্ভে ততটা সুখ ও উল্লাস অনুভব করে না। শুধু যোনি নালীর মধ্যে যে কন্ডুতি বা চুলকানি তারই কথাঞ্চিত উপশম ঘটতে থাকে
 
কিন্তু পুরুষের মত নারীর কোনও বীর্য্যপাত ঘটে না, শুধু রসস্রাব হয়। সেই রসস্রাবেও তাদের আনন্দ উপলব্ধি হয় বটে, কিন্তু পুরুষের বীর্য্যপাতকালীন আনন্দের মত অতোটা হয় না। নারীদের চরম উল্লাস অনেক সময় বীর্য্যপাতের আগে বা পরে ঘটতে পারে। যদি ঠিক একই সময়ে তা হয়, তা হলে ঐ রতি ক্রিয়ায় নারী ও পুরুষের উভয়ের পক্ষেই খুব উল্লাসপ্রদ হয়। রসস্রাব ও বীর্য্য নারীর রসস্রাবেও কোন সন্তান সম্ভারক বীজ থাকে কিনা, ইহাই প্রশ্ন। 

যে সময় বাৎস্যায়ন তাঁর কামশাস্ত্র লেখেন, তখন কামশাস্ত্রবিদদের মধ্যে এ বিষয়ে অনেক মতভেদ ছিল। অনেকে বলতেন যে, স্ত্রী যোনি পরিসৃত রসেও সন্তান উৎপাদক জীবাণু থাকে। তা না হলে স্ত্রী ও পুরুষের রতির ফলে সন্তান জন্মায় কি করে? আবার একদল কামশাস্ত্রবিদ বলতেন নারীর যোনি নিঃসৃত রসে কোনও গর্ভ সঞ্চারক বস্তু থাকে না। এর মীমাংসায় অনেকদিন পর্যন্ত কেউ পৌছাতে পারেনি। নারীর রস ও পুংবীর্য্যে পার্থক্য আসল কথা পুরুষদের বীর্য্যপাতকালে যথেষ্ট আনন্দ সঞ্চায় হয় এবং সেই বীর্য্যে সন্তান উৎপাদক বীজ থাকে। 

নারীর যৌন অঙ্গ থেকে রসস্রাব হলে তাকে orgasm বলা হয়। ঐ নারীর যথেষ্ট পুলক সঞ্চায় হয় বেট কিন্তু যতক্ষণ না তাদের যোনি দেশ থেকে উক্ত স্রাব বের হচ্ছে ততক্ষণ লিঙ্গ সঞ্চালন করাবার অভিলাষ চরিতার্থ হয় না। কিন্তু উহার সঙ্গে সঞ্চারের কোনও মৌলিক কারণ থাকে না। এমনও দেখা যায়-নারীর যতক্ষণ না পর্যন্ত পুলক ঘটছে, ততক্ষণ পর্যন্ত হয়তো পুরুষ রতিক্রিয়া চালাচ্ছে। তাতে নারীর যোনিদেশ থেকে প্রচুর পরিমাণে আনন্দদায়ক রসস্রাব ঘটল। কিন্তু তথাপি এরূপ ঘটনা বারবার অনেক দিন ধরে ঘটলেও উক্ত নারী গর্ভবতী হয় না।
 
সুতরাং গর্ভ হবে কিনা এটা সম্পূর্ণ নির্ভর করে পুরুষের বীর্য্যপাতের ওপর। ঐ বীর্য্যে সন্তান উৎপাদক বীজ থাকলেই তবে নারী গর্ভবতী হতে পারেন। পূর্ণ তৃপ্তি এমন ঘটনা প্রায় দেখা যায় যে, পুরুষের বীর্য্যপাতের পরেও নারীর সম্পূর্ণ যৌন তৃষ্ণা মেটে নাতখন এক পুরুষের বীর্য্যপাত ঘটলেও অন্য পুরুষকে সে ইচ্ছা করে, কাম চরিতার্থ বশতঃ নিজের উপরে সংলগ্ন করে। পুরুষের বীর্য্যপাত ঘটলেই তার পুরুষাঙ্গ শিথিল হয়ে পড়ে এবং সে আর সেই নারীতে বা অন্য নারীতে সঙ্গম করতে চায় না।
 
              নারীর কিন্তু অন্য রকম ঘটে। তার যোনি দেশ থেকে রস বের না হওয়া পর্যন্ত সে আবার রমণ আকাঙ্খা পরিতৃপ্ত করতে চায়। অনেক ক্ষেত্রে এ হেন নারীরা অন্য পুরুষও গ্রহণ করে থাকে। সুতরাং বেশ কিছু বিলম্বে তার চরিতার্থ ঘটে। যখন তার যোনিদেশে যথেষ্ট পরিমাণে রসস্রাব ঘটে তখনই তার তৃপ্তি হয়ে থাকে। নারী ও পুরুষের উত্তেজনায় পার্থক্য পুরুষ রতি ক্রিয়ার প্রথমে যথেষ্ট উত্তেজিত হয়। কিন্তু একবার বীর্য্যপাত ঘটে গেলে সঙ্গে সঙ্গে আবার রতিক্রিয়ায় আর তার পূর্বের মত উত্তেজনা থাকে না। নারীর উত্তেজনা কিন্তু ভিন্ন প্রকারের। প্রথম রতিক্রিয়ায় সে বিশেষ আগ্রহ দেখায় না। কিন্তু যখন রতি ক্রিয় কিছুক্ষন চলে তখন ক্রমশঃ তার আগ্রহ বাড়তে থাকে। পর পুরুষের বীর্য্যাপাত ঘটলেও নারীর রতি ক্রিয়ার আগ্রহ ক্রমশঃ বাড়তে থাকে।

 
এইজন্য কামশাস্ত্র লেখকেরা বলেন- নারীর সহিত রতিক্রিয়া আরম্ভ করতে হলে একেবারেই প্রথম থেকেই রতিক্রিয়া করা উচিত নয়। প্রথমে নারীর সঙ্গে কথাবার্তা বলা দরকার, তারপর তাকে চুম্বন, দংশন, নখচ্ছেদ ও আলিঙ্গন ইত্যাদি প্রাথমিক ক্রিয়া করা উচিত। এ সকল প্রাথমিক রসালাপ অঙ্গ-মর্দন, অধর, চুম্বন ইত্যাদিতে যখন নারীর কামেচ্ছা প্রবল থেকে প্রবলতর হবে। তখন সঙ্গমের জন্য প্রস্থত হওয়া দরকার। একেবারে দর্শন মাত্রেই রতিক্রিয়া আরম্ভ করা উচিত নয়। তাতে নারীর কামেচ্ছা তেন জাগ্রত হয় না। কাজেই উভয়ের পক্ষে রতিক্রিয়া তেমন আনন্দদায়ক হয় না।
রসাস্বাদন এছাড়া একথাও মনে রাখা দরকার যে, নারীদেহ মন সাধারণতঃ খুব কোমল ও রসাস্বাদনে আগ্রহশীল হয়ে থাকে। তাদের সঙ্গে মধুর ও মিষ্টি আলাপ জমাতে হবে। তাদের মন সাময়িকভাবে অনেক কঠিন ও হিংস্র হলেও মাটি যেমন জল সেচন করতে করতে কোমল ও কর্ষণোপযোগী হয়ে পড়ে- তেমনি ঐসব হৃদয়গ্রাহী মিষ্ট কথা শুনে শুনে অন্ততঃ তাদের কঠিন মনও সঙ্গমে আকৃষ্ট হয়ে ওঠে। তাই প্রত্যেক রতি ক্রিয়ার উপক্রমণিকা হিসেবে তাদের সঙ্গে মিষ্ট কথা, অঙ্গ মর্দন, চুম্বন ইত্যাদি আরামপ্রদ কাজ করে শেষে রতি ক্রিয়ায় ব্রতী হওয়া উচিত।
 
সমস্ত প্রিয় কার্যের শেষ কাজ হলো সঙ্গম বা দৈহিক মিলন। অন্যান্য অঙ্গ প্রত্যঙ্গ অলঙ্কারে ভূষিত না হলে যেমন মাথার মুকুট পরানো যায় না- এও ঠিক তেমনি। শ্রেষ্ঠ কামতৃপ্তির উপায় যাঁরা কাম বিজ্ঞানে বিশেষভাবে পারদর্শী, তাঁরা বলেন সাধারণতঃ চার রকম উপায়ে কামের পূর্ণ তৃপ্তি ঘটতে পারে।
 
১। কোনও কাজ অবিরত করতে থাকলে অনেকের নেশার উদয় হয়, যেমন শিকার করা, সঙ্গীত চর্চা করা, মদ্যপান করা, খেলাধূলা করা ইত্যাদি।
২। কাল্পনিক সঙ্গম সুখ-সত্যি সত্যিই যোনি প্রদেশে লিঙ্গ প্রবেশ ক্রিয়া ছাড়াও মনে মনে রতিক্রিয়ার চিন্তা করলে….আলিঙ্গন, চুম্বন ইত্যাদি করতে থাকলে-সুখ অনুভব হয়।
৩। কোন নারীর প্রতি কামক্রিয়া করা সুযোগ না থাকলেও সেই নারী বা অন্য কোন নারীর সঙ্গে কামনার সঙ্গম করলেও শ্রেষ্ঠ তৃপ্তি হতে পারে।
৪। ইন্দ্রিয় ভোজ জনিত সুখ- শরীরে পাঁচটি ইন্দ্রিয় আছে। যথা- চক্ষু, কর্ণ, নাসিকা, জিহ্বা, ত্বক এদের তৃপ্তির উপায় করলেও মিলনের মত শ্রেষ্ঠ সুখ হতে পারে।




  ৬.২ আলিঙ্গন শিল্প


কামশাস্ত্রে আছে প্রকৃত যৌন মিলনের আগে কতকগুলি কাজ করা একান্ত প্রয়োজন। তার মধ্যে সর্ব প্রধান হলো আলিঙ্গন। তাই আলিঙ্গনকে একটি শিল্প হিসাবে বর্ণনা করা হয়েছে। কামশাস্ত্রবিদরা বলেন- সাধারণতঃ আট রকমের আলিঙ্গন পুরুষ ও নারী পরস্পরের প্রতি হতে পারে। এই আটভাবে নারী ও পুরুষ প্রাথমিক সুখ পায়। প্রত্যেকটি আলিঙ্গন আবার আট রকমের হয়- তাহলে মোট ৬৪ প্রকার আলিঙ্গন হতে পারে।
 
বাৎস্যায়ন বলেন- আলিঙ্গন ঠিক ৬৪ রকম। ইহাতে এক রকমের সঙ্গে অন্য রকমের কিছুটা মিল হতে পারে। তবুও কিছু না কিছু তফাৎ থাকবেই। যেমন ছাতিম ফুল ভিন্ন ভিন্ন ধরনের হলেও প্রত্যেক ফুলে সাতটি করে পূর্ণ থাকবেই- আলিঙ্গনও ঠিক তাই। রতিক্রিয়ার প্রথম কাজ হলো আলিঙ্গন। একে অনেকে শৃঙ্গারও বলে থাকেন। 



 মোটামুটি আলিঙ্গন দুই ভাগে বিভক্ত-
(১) যে নারী কখনো রতিক্রিয়া করেনি তার সঙ্গে আলিঙ্গন।
(২) যে নারী রতিক্রিয়ায় অভিজ্ঞ তার সঙ্গে আলিঙ্গন
 
প্রথম প্রকার আলিঙ্গন একটু চর্চা বা অভ্যাস করে সুসম্পন্ন করা হয়ে থাকে। দুইভাবেই দুজনের মধ্যে ভালবাসা হতে পারে। কিন্তু দ্বিতীয় ভাবে ভালবাসা হতে দেরী হয়। প্রথম প্রকার আলিঙ্গন চার প্রকার-
(১) স্পৃষ্টক (মৃদু স্পর্শ)
(২) বিদ্ধক (স্তনাগ্র দ্বারা খোঁচা দেওয়া)
(৩) উদ্‌ঘৃষ্টক (আস্তে ঘর্ষণ পূর্বক)
(৪) অবপীড়িতক (সজোরে ঘর্ষণ পূর্বক) স্পৃষ্টক আলিঙ্গন এতে নারী ও পুরুষের অঙ্গ পরষ্পরকে সমান স্পর্শ করতে পারে। 

কোনও নায়কা ঘটনাক্রমে কোনও লোকের সঙ্গে থাকতে পারে। তখন নায়ক নায়িকাকে সামান্য স্পর্শ করে উঠে যায়। এই যে স্পর্শ আলিঙ্গন হয় তাকেই বলে স্পৃষ্টক আলিঙ্গন। এতে শুধু বোঝা যায় দুজনের মধ্যে কোন আকর্ষন আছে কি-না। বিদ্ধক বা বক্ষচাপ আলিঙ্গন এই আলিঙ্গন সাধারণতঃ নারীর প্রথমে হয়ে থাকে। পুরুষকে নারী প্রথমে কোন নির্জন জায়গায় দেখতে পায়। যে কোন অছিলায় নায়িকা সেখানে যায়। সেখান থেকে কোন কোন জিনিস মাটি থেকে কুড়িয়ে নেবার সময় সে পুরুষের সঙ্গে তার স্তন ঘর্ষণ করে- এতে তার আলিঙ্গনের সুখ অনুভব করে। এটি সামনের বা পেছনের দিক থেকেও হতে পারে।
 
ঘর্ষণ বা উদ্‌ঘৃষ্টক আলিঙ্গন এই আলিঙ্গণে নারী ও পুরুষ পরস্পর পরস্পরের সঙ্গে ঘর্ষণ করতে পারে। এই ঘর্ষণ আস্তে আস্তে কিন্তু অনেকক্ষণ হতে পারে। যখন এটি দুই পক্ষেই খুব জোরে চলে তখনই একে বলা হয় উদ্‌ঘৃষ্টক আলিঙ্গন। যখন শুধু একজন চালায় তখন তাকে বলা হয় ঘৃষ্টক দৃঢ় ঘর্ষণ বা অবপীড়িতক আলিঙ্গন যখন পুরুষ বা নারী কোনও দেওয়াল বা স্তম্ভে হেরান দিয়ে দাঁড়ান এবং জোরে জোরে পরস্পরকে ঘর্ষণ করে তাকে বলা হয় অবপীড়িতক আলিঙ্গন। এত দুজনেই বেশ ভালভাবে অংশ গ্রহণ করে থাকে। দুজনে পরস্পরকে জাপটে ধরলেও পূর্ণ আনন্দ হয় এই তৃতীয় ও চতুর্থ প্রকার আলিঙ্গন হয়, তখন দুজনের মধ্যে প্রেম ভাব হয়েছে ।  

এমতাবস্থায় একজন অন্যজনকে ডেকে আনে বা তাকে বশে আনতে পারে। কিন্তু প্রেমিক প্রেমিকা সাক্ষাৎ যৌন ক্রিয়ায় যে যে আলিঙ্গন করে থাকে তাহা হলো নিম্নোক্ত চার প্রকার। লতাবেষ্টিত আলিঙ্গন এতে পুরুষ দাঁড়িয়ে থাকে এবং নারী লতার মত তাকে জড়িয়ে ধরে থাকে। নায়িকা নায়ককে গলা জড়িয়ে ধরে থাকে। তার মুখ তুলে পুরুষের চোখের দিকে প্রেমাতুর ভাবে তাকায়। চুমু খাবার জন্যে পুরুষের মুখ নিচু করে ধরে। সে নিজের স্তন তখন তুলে ধরে পুরুষের বাসনা বৃদ্ধি করে।
 
বৃক্ষাধিরূঢ় আলিঙ্গন পুরুষ দাঁড়িয়ে থাকে প্রেমিকা তার পায়ের উপর উঠে অন্য পা দিয়ে উরুদেশ জড়িয়ে ধরে। এই অবস্থায় নারী নিজের যোনি পুরুষের লিঙ্গ মুণ্ডের কাছে ঘর্ষণ করার চেষ্টা করে। অথবা সে পুরুষের কোমর জড়িয়ে ধরে মুখে ভালবাসার গুঞ্জন করতে থাকে। এই সময় নায়িকা তার শরীর তুলে পুরুষকে চুম্বন করতে থাকে।
তিলতন্ডুল আলিঙ্গন এই আলিঙ্গন নায়ক নায়িকা বিছানায় শুয়ে শুয়ে সম্পন্ন করে থাকে। পুরুষ ও স্ত্রী উভয়ে উভয়ের দিকে ফিরে থাকে। নারী বা-হাত পুরুষের ডানদিকে গলিয়ে দেয়- ডান হাত পুরুষের বাঁ অঙ্গের উপরে রেখে দুই উরুদেশ পরস্পর সংযুক্ত করে। তাতেও নারী ও পুরুষ তাদের যোনি ও পরুষাঙ্গ পরস্পরের সান্নিধ্যে এনে ঘর্ষণ করতে পারে। এতে প্রচুর আনন্দ হয়। ক্ষীর নীরক দুধ আর জল যেমন একসঙ্গে মিশলে আলাদা করা যায় না- পুরুষ ও নারী এমনভাবে সংযুক্ত হবে যেন একজনে অন্যের অঙ্গ থেকে পৃথক করা না যায়। এতে নারী পুরুষটির কোলের উপর এসে এবং নারী পুরুষের উপর শুয়ে নিজেকে তার দেহের মধ্যে মিশিয়ে নেয়। পুরুষ ও নারী রতিক্রিয়া আরম্ভ করার পর তৃতীয় ও চতুর্থ প্রক্রিয়া শুরু করে। এই সময়ে পুরুষের রুরুসাঙ্গ দৃঢ় ও আকারে বৃদ্ধিপ্রাপ্ত হয় এবং নারীর যোনিদেশ তখন রসস্রাব হতে থাকে। যাতে লিঙ্গমুন্ড বেশ আরামে যোনিরন্ধ্রে প্রবশ করতে পারে।
 সুবর্ণাভ নামক লেখক আরও চার প্রকার আলিঙ্গনের কথা বলেছেন তাঁর প্রন্থে। তা হলো-
 
ঊরুপগৃহণ আলিঙ্গন নারী পুরুষ পাশাপাশি শুয়ে থাকে। একজন অন্যের উরুদেশ বেশ আরামদায়কভাবে আঁকড়ে জড়িয়ে ধরে। যার উরু বেশী মাংসল সেই বেশী জোর দিয়ে জড়াতো পারে।
 
জগনোপগূহন আলিঙ্গন এতে পুরুষ বিছানার উপরে চিৎ হয়ে শয়ন করে থাকে। নারী তার বুকের উপরে শুয়ে তার পদদ্বয় ও নিতম্ব বেশ কোর করে আঁকড়ে ধরে- তার যোনি পুরুষের পুরুষাঙ্গের উপর ঘর্ষণ করতে থাকে। এই সময় প্রেমিকা পুরুষকে চুম্বন, নখাঘাত ও অধর দংশন রে উল্লাস অনুভব করে থাকে। স্তন আলিঙ্গন এই সুরত ক্রিয়ায়, নারী পুরুষের বুকের ওপর শুয়ে তার স্তনদ্বয় দ্বারা জোরে জোরে চাপ দেয়, পুরুষের বুকের ওপর নিজের দেহভার ন্যস্ত করে। কোমল স্তন মর্দনের জন্য পুরুষের বেশ আরামবোধ হয়ে থাকে। এরূপ রতিক্রিয়া দুজনে সম্পাদন করতে পারে। পাশাপাশি শুয়ে এরূপ করা যায়।
 
ললাটিকা আলিঙ্গন এরূপ রতিক্রিয়াতে নারী পুরুষের বুকের ওপর শয়ন করে অথবা পাশাপাশি শয়ন করে। চোখে চোখে মিলন হয় নারীর ওষ্ঠাধর চুম্বন করে পুরুষ আংটির মত জড়িয়ে ধরে। দুজনের কপালে কপালে ঘর্ষণ হয়। তাই এর নাম হয়েছে ললাটিকা। পুরুষ ও নারী তাদের সমস্ত শরীর অপরের সঙ্গে মিশিয়ে যথেষ্ট আনন্দ উপভোগ করে। এইসব নানা বিধ আলিঙ্গন ইত্যাদি দ্বারা নরনারীর কামেচ্ছা চূড়ান্ত জাগ্রত য়ে থাকে- এতে রতি কাজের সুখ অনেক বেশী বৃদ্ধি পায়।




  ৬.৩ চুম্বন শিল্প


চুম্বন একটি শিল্প নায়ক নায়িকা পরস্পরকে জড়িয়ে ধরার পরেই দুজনের মধ্যে শুরু হয় কামক্রিয়া। এই কামক্রিয়ার মধ্যে চুম্বন, স্তন নিপীড়ন, নখাঘাত ও দংশন আছে। বাৎস্যায়ন বলেন- এসব কাম-ক্রিয়ার মধ্যে কোনটি সবার চেয়ে প্রশস্ত বা কার্যকরী তা নির্ভর করে নারী ও পুরুষ দুজনের ইচ্ছার উপরে। যে অঙ্গটি যে সুন্দর বলে বিবেচনা করে, তেমনি সেই অঙ্গকে উপভোগ করতে বেশি আগ্রহান্বিত হয়।

 
তবে এ্সব কাম-ক্রিয়া-যেমন চুম্বন, স্তন নিপীড়ন, নখাঘাত, দংশন, এ সব সাধারণতঃ মৈথুনের আগেই দুজন করে থাকে। মৈথুনের পর এসবের প্রতি আর্কষণ থাকে না। যখন কাম উত্তেজিত হয়, তখন কোন ক্রিয়া আগে বা পরে সে জ্ঞান থাকে না। তখন যে কাম-ক্রিয়া ভাল লাগে নায়ক নায়িকা তাই শুরু করে দেয়। নারীর ইচ্ছা এতে ধীরে ধীরে বাড়তে থাকে।
 
চুম্বনের স্থান বাৎস্যায়ন বলেন- চুম্বন আরম্ভ হয় ললাট, সিঁথি, গন্ড, চঞ্চু আর পুরুষের বক্ষে, নারীর স্তনে, তারপর অধরে, তটে এবং মুখের ভেতরে। এ ছাড়াও বিভিন্ন দেশের লোকেরা কেউ উরু, কেউ বাহু, কেউ বা যোনিও চুম্বন করে থাকে। আসলে যে দেশে যে প্রথা সেইমত হয়ে থাকে। চুম্বন পদ্ধতি বাৎস্যায়ন চুম্বনের পদ্ধিতি ভালভাবে নির্দেশ করেছেন। তা হলো অধর দুটি ফুলের মতই প্রস্ফুটিত ও কুঞ্চিত হয়ে প্রেমিক বা প্রেমিকার অধর বা স্তন সংলগ্ন হয়ে থাকবে। অনেক রকমের চুম্বন আছে। অঙ্গের যে স্থানে ওষ্ঠধর দিয়ে চুম্বন কার্য করা হয় তার উপরেই তা নির্ভর করে। ওষ্ঠ বা অধরের সঙ্গে ওষ্ঠ বা অধরের যোগ হলো শ্রেষ্ঠতম চুম্বন।
 
প্রাথমিক চুম্বন যে নর-নারী কখনও কোনও যৌন সংসর্গ করেনি, তাদের পক্ষে চুম্বনের কতকগুলি নিয়ম আছে। তা একে একে বলা হচ্ছে। নিমিতক চুম্বন যখন কোনও পুরুষ কোন নারীকে প্রথম স্বীকার করিয়েছে একটি একটি চুম্বন দিতে- তা হলো নিমিতক চুম্বন। তখন নারী লজ্জায় অভিভূতা হয়ে পড়বে। লজ্জার মধ্যেও সে সঙ্কুচিতা ভাবে মুখ বাড়িয়ে চুম্বন করতে তার ঈস্পিত পুরুষকে সুযোগ দেবে। অধর বা ওষ্ঠ এগিয়ে দিতে কিন্তু বিশেষ আগ্রহ দেখায় না।
 
স্ফুরিতক চুম্বনঃ  পুরুষ তার ওষ্ঠ অধরের মধ্যে নারীর অধর ধারণ করে। নারীও এরূপ করতে পারে- কিন্তু সামান্য পরিচয়- তাই লজ্জায় কামড়াতে পারে না। থর্‌থর্‌ করে কাঁপতে থাকে। পুরুষ জোর করে চুম্বন করে, নারী যেন তা এড়িয়ে নিতে চেষ্টা করে, কিন্তু তা নিজের ইচ্ছায় না। একেই বলে স্ফুরিতক চুম্বন।
 
ঘট্টিতক চুম্বনঃ  ঘট্টিতক এমন একটি চুম্বন যাতে নারীই প্রধান অংশ গ্রহণ করে থাকে। সে তখন একটু পরিচিত হয়েছে, লজ্জা তার সামান্য কমে গেছে। সে তখন প্রেমিকের চোখ দুটি নিজের করতল দ্বারা আবৃত করে দেয়। সঙ্গে সঙ্গে নিজের দুটি চোখ বন্ধ করে। তারপর অতি ধীরে অতি লজ্জায় দুজনে পরস্পর পরস্পরকে চুম্বন করে থাকে। নারী তারপর নিজের সুখে পুরুষের দুটি ওষ্ঠ নিয়ে ধীরে ধীরে চুষতে থাকে এতে সে অনির্বচনীয় আনন্দ লাভ করে।


 
চুম্বনের অন্যান্য প্রকাভেদ সাধারণ ভাবে পুরুষ নারীর মধ্যে পরিচয় গভীর হলে তারা যে কয় প্রকারে পরস্পরকে চুম্বন করে থাকে তা এবারে বলা হলো সাধারণ রতি ক্রিয়ার আগে যেগুলি হয়ে থাকে, তা নিম্নে দেওয়া হলো।
 
সম চুম্বনঃ  প্রেমিক, প্রেমিকা সোজাসুজি মুখে মুখ, ঠোঁটে ঠোঁট লাগিয়ে চুম্বন করে থাকে। সেজন্য একে বলে সমচুম্বন।
তর্য্যক চুম্বনঃ  এরূপ চুম্বনে পুরুষ নারীকে দৃঢ়ভাবে জড়িতে ধরে- তারপর চুম্বন করে। দুজনের ঠোঁট পরস্পর আড়াআড়ি ভাবে থাকে- তারপর সজোরে চুম্বন হয়। তাই তাকে বলে তির্য্যক চুম্বন।
উদভ্রান্ত চুম্বনঃ  পুরুষ একটি হাত দিয়ে নারীর অধর নিজের দিকে ফিরিয়ে ধরে অন্য হাত দিয়ে তার চিবুক ধরে রাখে। তারপর তার দুটি ঠোঁটে চুমু খায়।
 অবপীড়িতক চুম্বনঃ  যখন পুরুষ তার দুটি ঠোঁট দিয়ে বেশ পীড়ন করে বা সজোরে চাপ দিয়ে নারীকে চুম্বন করে থাকে থাকে তখন তাকে বলে অবপীড়িতক চুম্বন। আর যখন জিহ্বা দ্বারা সেই চোষণ করে তখন তাকে বলে অধর পান।
আকৃষ্ট চুম্বনঃ  যখন পুরুষ তার বুড়ো আঙ্গুল ও অন্যান্য আঙ্গুল নিয়ে নারীর অধর একটি গোলাকার বলের আকারে পরিণত করে- তারপর তা নিজের জিহ্বা দিয়ে চুষতে থাকে- তখন তাকে বলা হয় আকৃষ্ট চুম্বন।
 
চুম্বন প্রতিযোগিতা বাৎস্যায়ন বলেন, কামক্রিয়ার আনন্দ পাবার জন্যে পুরুষ ও নারী চুম্বন প্রতিযোগিতা করতে পারে। এর অর্থ হলো, পুরুষ ও নারী পরস্পর পরস্পরকে চেপে ধরে ঠোঁটে ঠোঁট লাগিয়ে চুম্বন করবে। তার আগেই প্রতিযোগিতা স্থির করে, কে বেশিক্ষণ চুম্বন করতে পারে। সাধারণতঃ পুরুষ জয়ী হবে- তখন নারী কৃত্রিম তর্ক করবে। বলবে-অন্যায়ভাবে আমাকে হারানো হয়েছে। তখন পুরুষ তাকে মিষ্ট বাক্যে ভুলিয়ে আবার চুম্বন প্রতিযোগিতা শুরু করবে। এবারে নারীকে ইচ্ছা করে জয়ী করা হবে। তখন সে আনন্দে হাসবে, নাচবে, অঙ্গভঙ্গী করবে। কিন্তু তখন সে যদি পুরুষকে ঠাট্টা করে, তখন রাগলে চলবে না।
 
উত্তর চুম্বিতা এর উত্তরে অর্থাৎ পুরুষ হেরে গেলে সে রাগ করবে না। বরং নায়িকাকে আদর করে চুম্বন করবে- তাকেই বলে উত্তর চুম্বিতা। সম্পুটক চুম্বন দুজনে ঠোঁটে ঠোঁট মিলিয়ে এক প্রকার শিষ দেবার মত শব্দ করে চুম্বন করে- তাকে বলে সম্পুটক চুম্বন। রাগোদ্দীপক চুম্বন পুরুষ ঘুমোলে বা নায়িকা ঘুমোলে, অন্যজন ঘুম থেকে জাগাবার জন্য ঘন ঘন হাল্কা চুম্বন করে- তাকে বলে রাগোদ্দীপক চুম্বন। অনেক সময় মিলন কালেও প্রেম বর্ধিত করার জন্যে এটি হতে পারে। প্রতিবোধিক চুম্বন নিজের মনের ভাব প্রকাশ করতে না পারলে- কোনও মূর্তি, ছবি বা শিশুকে চুম্বন করে অপরকে বোঝান হয়। আমি তোমায় ভালবাসি। তাকে প্রতিবোধিক চুম্বন। জিহ্বা যুদ্ধ যখন পুরুষ বা নারী একজন অন্যজনের মুখে পরস্পর জিহ্বা প্রবেশ করিয়ে চুম্বন করতে থাকে, তখন বলা হয় জিহ্বা যুদ্ধ। এতে একে অন্যের মুখে জিহ্বা প্রবেশ করায়- দুইজন বার বার এই রকম করতে থাকে।
 
নারীর শরীরের কোন্‌ কোন্‌ স্থানে পুরুষ চুম্বন করতে পারে, তার নির্দেশও দিয়েছেন বাৎস্যায়ন।
১। গাল বা গণ্ডদ্বয়।
২। ওষ্ঠ-অধর।
৩। কপাল বা ললাট।
৪। মাথা ও চুল।
৫। চক্ষুদ্বয়।
৬। স্তনদ্বয় ও দন্তবৃন্ত সজোরে চুম্বন।
৭। কাঁধ, ঘাড়, বুক।
৮। নিতম্বদ্বয়।
৯। জঘনদ্বয়।
১০। কামাদ্রি ও যোনিপ্রদেশ।
 
শরীরের বিভিন্ন স্থান চুম্বন অবস্থা অনুযায়ী আরও বিভিন্ন প্রকার চুম্বন প্রচলিত আছে-সেগুলির সম্বন্ধেও এখানে আলোচনা করা হচ্ছে। অবস্থা অনুযায়ী চুম্বন
১। উদ্দীপক চুম্বন ঘুম থেকে জাগাবার জন্য।
২। চলিতক চুম্বন পুরুষ যখন কাজে ব্যস্ত থাকে তখন তাকে বিব্রত করার জন্যে চুম্বনকে চলিতক বলে।
৩। সঙ্কেত চুম্বন যখন বাড়ি ফিরে পুরুষ দেখে নায়িকা রাগ করেছে বা কটট রাগে মুখ আচ্ছন্ন তখন ঘন ঘন চুম্বন।
৪। ছায়া চুম্বন পরস্পর পরস্পরকে মনের ভাব জানাবার জন্যে ছায়াকে চুম্বন করা।
 ৫। জিজ্ঞাসার চুম্বন যখন নারী পুরুষ পরিচিত, দুজনে পাশাপাশি বসে বা শুয়ে আছে, তখন একজন অন্যজনের মনের ভাব জানবার জন্যে নারীর দেহে মৃদু হাত বুলোতে পারে, কিংবা কোনও স্থানে মৃদু চুম্বন করতে পারে। একে বলা হয় জিজ্ঞাসা চুম্বন।
৬। সুরত চুম্বন সুরত চলার সময় দ্রুত বা ঘন ঘন পরস্পর পরস্পরকে চুম্বন করলে তাকে সুরত চুম্বন বলে।



৬.৪ নখাঘাত বা নখচ্ছেদ্য


নারী ও পুরুষ আলিঙ্গন ও চুম্বনের দ্বারা রতি ক্রিয়ায় যথেষ্ট উৎসাহী হয় ও তাতে অনুরাগ বৃদ্ধি হয়। এখন এই দুটি প্রক্রিয়া ছাড়া আরও বিভিন্ন প্রক্রিয়া আছে বা রতি ক্রিয়ার আগে দুজনের মধ্যে যথেষ্ট আনন্দ ও উল্লাস সঞ্চার করতে পারে। এগুলি হলো নখাঘাত বা নখচ্ছেদ্য, দংশনচ্ছেদ্য বা দংশন ইত্যাদি। কখন নখাঘাত প্রয়োজন নখাঘাত কখন কখন প্রয়োজন সে বিষয়ে এবারে বেশ ভালভাবে আলোচনা করা হচ্ছে। 


 নিম্নলিখিত সময় নখাঘাত করা প্রয়োজন
১। সুরতের জন্য প্রথম মিলনে।
২। অনেকদিন পর পুরুষ বা নারী ফিরে এলে যে প্রবল মিলনেচ্ছা জাগে সে সময়।
৩। দীর্ঘ প্রবাস যাত্রার আগে।
প্রেমিক প্রেমিকার মধ্যে কেউ কেউ ক্রুদ্ধ হলে।
৫। মদ্যপান করে নারী অত্যন্ত কাম বিহ্বল হয়ে পড়লে।
৬। ব্যক্তিগত ইচ্ছা।

যারা কাম ক্রিয়া করতে অত্যন্ত উত্তেজিত হয় তারা এ কাজ করতে পারে। নখাঘাতের পরই কামুক ব্যক্তিরা মিলনের সময় দংশন করে। বিভিন্ন প্রকার নখাঘাত বাৎস্যায়ন নখাঘাতকে কতকগুলি বিভিন্ন ভাগে ভাগ করে তা বর্ণনা করেছেন। সে বিষয়ে এবারে একে একে আলোচনা করা হচ্ছে। অঙ্কুরিত নখাঘাত যে পুরুষের নখ মাঝারি রকমের, তারা নারীর চোয়ালে, অধরে বা স্তনাগ্রে নখ রেখে এসব স্থানে একটু ধীরে ধীরে চাপ দিতে পারে। তাতে নারীর অঙ্গে ব্যথা লাগে না-বরং এতে আনন্দকর ঝিনঝিনি লাগে-ঐ বিশেষ স্থানে বা সারা গায়ে কাঁটা দেয়। এতে নারীর কামোদ্রক তীব্র হয়। নারীর যে সব স্থান খুব কোমল সেখানেই এটি করা যায়। অনেক সময় কাম কলহের সময় এটি করা হয়।
 
অর্ধচন্দ্র নখাঘাত এতে নখগুলি বাঁকা ও খুব ধারালো হয়- নারীর যৌনাঙ্গ এবং স্তনে এর দ্বারা আঘাত দেয়া হয়। এতে খানিকটা দাগ হতে পারে। 
বৃত্তাকার নখাঘাত যদি দুটি অর্ধবৃত্তাকার আঘাত পরস্পর মুখোমুখি হয় তখন তা সম্পূর্ণ অঙ্কিত করে। এটি শরীরের যে কোন অংশে-বিশেষ করে কোমরে, নিতম্বে, নাভির তলায় হতে পারে।
সমরেখ নখাঘাত এটি শরীরে যে কোনও স্থানেই ঘটতে পারে। সমান রেখায় একবার সামনে একবার পেছনে এইভাবে নখাঘাত ঘটে থাকে।
ব্যাঘ্র থাবা নখাঘাত যখন নখাঘাত স্তনবৃন্তেরর উপর বাঁকা রেখায় অঙ্কিত হয়। ব্যাঘ্র থাবার মত দেখতে হয়- এটি সজোরে হতে পারে।
ময়ুর পদ নখাঘাত যখন পুরুষের পাঁচটি আঙ্গুল স্তরে আঘাত করে বৃন্তে মিলিত হয়, আবার পিছিয়ে যায়, তখন তা দেখতে ঠিক ময়ুরের পায়ের চিহ্নর মত হয়, তাই এই নামকরণ।
লম্ফমান হরিণ আঘাত প্রথমে নারীর স্তনে নখাঘাত করা হয়, তারপর স্তনাগ্রে বা বক্ষে করা হয়। এইভাবে তা যখন কুব জোরে চাপ দেয়, তখন নারী ও পুরুষের কাম উত্তেজনা বাড়তে থাকে। তখন তাকে এই নাম দেয়া হয়।
পদ্মপাতা আঘাত যখন স্তনাগ্রে নখের আঘাত, নিতম্বের আঘাত, কোমরের আঘাত, উরু ও জঘনের আঘাত, এই পাঁচটি যখন একসঙ্গে থাকে তখন তা দেখতে পদ্মপাতার মত হয়তখন তাকে এই নাম দেওয়া হয়।
স্মারক নখাঘাত যখন কোন পুরুষ বিদেশ যাত্রার আগে তার প্রিয়া নারীকে তিন চারটি স্থানে জোরে জোরে নখাঘাত করে, তখন তাকে বলে স্মারক নখাঘাত। এর অর্থ হলো, আমি যে নখাঘাত করলাম তা তোমাকে যেন আমার কথা বার বার স্মরণ করিয়ে দিতে থাকে।

নারীদেহের বিভিন্ন নখাঘাতের স্থান নারীদের নিম্নলিখিত স্থানগুলিতে নখাঘাত হয়ে থাকে। তা হলো
১। বগল
২। নারীর স্তন
৩। ঘাড় ও কাঁধ
৪। পৃষ্ঠ দেশের সর্বত্র
৫। নিতম্ব
৬। উরুদ্বয়ের সংযোগ স্থান
৭। যোনি স্থান
৮। গলা

কিন্তু সুবর্ণাভ বলেন্তনারী পুরুষ কামে উন্মত্ত হয়ে উঠলে তখন কোনও স্থান জ্ঞান থাকে না- তখন যে কোন স্থানে নখাঘাত করা যায়। নখের আকৃতি কামোন্মত্ত পুরুষের নখের আকৃতি খুব লম্বা হয়। সেগুলি করাতের মত ধারালো হয়-দু একটি জায়গায় কাটা দাগও থাকতে পারে। কিন্তু যারা বেশি কামোন্মত্ত নয় তাদের নখ অর্ধচন্দ্রাকার হয়ে থাকে। তাদের নখ ভোঁতা হয়-ধারালো হয় না।
 
উৎকৃষ্ট নখ বাৎস্যায়নের মতে নিম্নলিখত নখগুলি খুব উৎকৃষ্ট প্রকৃতির হয়ে থাকে।
 ১। যাদের নখে সবুজ বা কালো দাগ নেই।
২। নখের উপরিভাগ সমতল।
৩। উজ্জ্বল নখ।
৪। পরিষ্কার নখ।
৫। খুব চওড়া নখ।
৬। যেগুলি শীঘ্র গজায় বা বাড়ে।
৭। খুব নরম নখ।
৮। বেশ চকচকে নখ
বাৎস্যায়ন আরও বলেছেন, যারা বেশি নখাঘাত করতে পারে, রতিকালে তারা নারীদের কাছে বেশি আদরনীয় হয়যে সব নারী স্বামীর অজ্ঞাতে প্রেম করে, তারা যাতে শরীরে নখাঘাত না পায় তা দেখা কর্তব্য-তরুণী নারীদের নখাঘাত করা উচিত নয়-কারণ তাতে ধরা পড়ে যাবার সম্ভাবনা থাকে। নখাঘাতের চিহ্ন ও দংশনাঘাতের চিহ্ন মানুষের কাম বাসনাকে প্রবল করে তোলে, কথা কামশাস্ত্রকাররা বলেছেন।






৬.৫ দংশন বা দংশনচ্ছেদ্য ও দেশাচার


যখন নারী পুরুষের কাম খুব চূড়ান্তস্তরে, তখন তারা শুধু নখাঘাত করেই তৃপ্ত থাকে না- সেই সঙ্গে তারা দংশনও করে থাকে। স্নায়ুর উত্তেজনা খুব বেশী হলেই মানুষ দংশন করে- তা ছাড়া করে না। কপাল, অধর, ঘাড়, গলা, বুক, স্তন, নিতম্ব, উরুদ্বয় ও যোনিদেশে দংশন করতে পারে। দাঁতের গুণাবলী দাঁত দিয়ে দংশন করে প্রেম চরিতার্থ করতে গেলে দাঁতের কতকগুলি গুণ থাকা উচিত। 

তা হলো-
১। দাঁতগুলি এক পংক্তিতে থাকেব।
২। পরিষ্কার ও উজ্জ্বল হবে।
৩। পান খেলে যেন সহজেই তা রক্তিম হয়ে পড়ে।
৪। আকৃতি যেন ভাল হয়, খুব বড় বা ছোট না হয়।
৫। বেশ সাজানো থাকবে।
৬। একটু তীক্ষ্ণ ধার হবে।

 

কিন্তু দাঁত বড় বা ছোট, এক পংক্তিতে নয় বা দেখতে কদাকার। দাঁত নষ্ট হয়েছে, পোকায় খাওয়া, মুখে দুর্গন্ধ বের হয়, এমন থাকলে কখনও প্রিয়াকে দংশন করা উচিত নয়।
 
দন্ত দংশনের প্রকারভেদ সাধারণতঃ দন্ত দংশন আট প্রকারের হতে পারে।  গূঢ় দংশন যখন দংশিত স্থানে অল্প পরিমাণে দাঁতের চাপ দেওয়া হয়, তখন তাকে গূঢ় দংশন বলা হয়ে থাকে।
স্ফীত দংশনঃ  যখন একটু জোরে দংশন করা হয় এবং তার ফলে দংশিত স্থান ফুলে ওঠে তখন তাকে বলে স্ফীত দংশন।
বিন্দুমালা দংশনঃ  নিচেকার সামনে দাঁত ও ঠোঁটের দ্বারা এমনভাবে দংশন করা হয় যে, সবগুলি দাঁতের দাগ দেখা যায়, তখন তাকে বলে বিন্দুমালা দংশন।
প্রবালমণি দংশনঃ  যখন অধর ও ওপরের দাঁতগুলি দিয়ে দংশন করা হয়, তখন সেখানে ছোট একটি লাল দাগ হয়-দেখতে ঠিক প্রবালের মত তাই এই নাম।
প্রবাল মালা দংশনঃ  যখন অনেকগুলি প্রবাল দংশন পাশাপাশি হয়ে একটি প্রবালের মালার মত দেখায়, তখন তাকে বলা হয় প্রবাল মালা দংশন।
ভগ্নমেঘ দংশনঃ  যখন মুখ দিয়ে স্তন নিপীড়নর করে মাঝে মাঝে দংশন করা হয়, তখন ছোট বড়, ভিন্ন ভিন্ন নানা আকৃতির দাগ হয়- তা দেখতে ছিন্ন মেঘের মত। তাই এই নাম দেওয়া হয়েছে।
বরাহ চর্বিক দংশনঃ  যখন নারীর দেহের কিছুটা স্থান মুখে নিয়ে অনেকক্ষণ ধরে চর্বণ করা হয় এবং তারপর আবার অন্য অংশ এই ভাবে চর্বণ করা হয় তখন তাকে শূকর চর্বণ বা বরাহ চর্বিক দংশন বলে।
 
শেষ দুটি দংশন অবশ্য কাম খুব প্রকটিত হলে করা হয়-তা না হলে হয় না। ভিন্ন ভিন্ন প্রদেশে ভিন্ন ভিন্ন কামক্রিয়া বাৎস্যায়ন বলেন, যে দেশে যেমন কামক্রিয়ার প্রথা চালু আছে, সেই প্রথা অনুযায়ী নারীর সঙ্গে সহবাস করা পুরুষের উচিত-আবার নারীরও উচিত পুরুষের নিজ দেশে ব্যবহৃত বিভিন্ন অনুসরণ করে চলা। তিনি বিভিন্ন উদাহরণ দিয়ে তা বুঝিয়ে দিয়েছেন।
মধ্যপ্রদেশের অধিবাসীরা সুনীতির সঙ্গে সঙ্গম করে। নারীরাও খুব স্বাভাবিক সঙ্গম চায়, আঁচড়ানো, কামড়ানো ইত্যাদি পছন্দ করে না। তারা ওগুলি অসভ্য কাজ বলে মনে করে। বাহলীক ও অবন্তী দেশের (উত্তরপ্রদেশ) নারীরা চুম্বন, দংশন ইত্যাদির কার্য্য পছন্দ করেন, কিন্তু রতি ক্রিয়ায় নিত্য নূতন নায়ককে বেশী পছন্দ করেন।
 কুরুক্ষেত্র, পূর্ব মালব প্রভৃতি দেশের নারীরা আলিঙ্গন, চুম্বন, দংশন ইত্যাদি খুব ভালবাসে-কিন্তু কোন ক্ষত চিহ্ন রাখতে চায় না। কঙ্কন ও গুজরাটের নারীরা অত্যন্ত কাম প্রবল ও প্রচুর পরিমাণে উপাচার পছন্দ করে। প্রসাধন এদের অতি প্রিয় জিনিস।
পাঞ্চাব ও সিন্ধু প্রদেশের নারীরা খুবই কামুক হয়-তারা যোনি-দেশে পুরুষের পুরুষাঙ্গ আমূল প্রবেশ অত্যন্ত পছন্দ করে। এমন কি পায়ু প্রদেশেও লিঙ্গ প্রবেশ করিয়ে আনন্দ পায়। আচড়ানো, কামড়ানো, নিপীড়ন সবই তারা খুব ভালবাসে। এমন কি একাধিক পুরুষকেও মাঝে মাঝে চায়।
অন্ধ্রপ্রদেশের নারীরা বড় কোমলমনা। তারা শুধু চুম্বন ও মিলন চায়। অন্যান্য উপাচারগুলি তারা মোটেই ভালবাসে না। কিন্তু পুনঃ পুনঃ মিলন তারা পছন্দ করে। মহারাষ্ট্র এ দেশের নারীরা সহবাসের কালে স্তনমর্দন, চুম্বন, দংশন ইত্যাদি কাম পরিচর্যায় বড় চতুরা হয়- তারা সহবাসকালে নানা অশ্লীল অঙ্গভঙ্গী ও বাক্যালাপ পছন্দ করে। যে পুরুষ এসব বেশী করতে পারবে সে মেয়েদের তত ভালবাসা পাবে। তারা বিহার (অর্থাৎ পুরুষের উপরে উঠে বিহার) সঙ্গম বেশ পছন্দ করে।
পাটনা এ দেশের নারীরা যদিও খুব বেশি কামুক, তবে একটু লাজুক। দ্রাবিড় দেশের- নারীরা সামান্য চুম্বন বা আলিঙ্গনেই খুব দ্রুত উত্তেজিত হয় ও সঙ্গম কামনা করে। তাদের যোনিও খুব দ্রুত সিক্ত হয়ে ওঠে।
উত্তরবঙ্গের-নারীরা কোমল আকৃতির। তারা হয়ত অশ্লীল কথা বলা, বেশি কঠিন উপাচার পছন্দ করে না। পূর্ব কঙ্কন এই অঞ্চলের নারীরাও খুব লাজুক ও নরম স্বভাবের। তারা সজোরে চুম্বন পছন্দ করে-কিন্তু সামান্য উপাচার চায় না। তারা প্রতি রাত্রে একবার সঙ্গম চায়- তার বেশী নয়। বাৎস্যায়ন বলেছেন, বিবাহ বা মিলনকালে এইসব কথা মনে রেখে কামতৃপ্তি ও উপাচার স্থির করা অবশ্য উচিত।




৬.৬ প্রত্যক্ষ মিলন ও মিলনের আসন


সংবেশন বা প্রত্যক্ষ মিলন বাৎস্যায়ন বলেন, নারী ও পুরুষের পরস্পর মিলনের আনন্দ উচ্ছাস পেতে হলে, প্রথমে পরিচয় লাভ, মৈত্রী, ক্রমে আলিঙ্গন, চুম্বন, নখচ্ছেদ্য, স্তন নিপীড়ন ইত্যাদি শৃঙ্গার করে, শেষে রতিক্রিয়া আরম্ভ করবে। এই রতিক্রিয়াই চরম আনন্দ (অন্য শরীরের) দান করায় একমাত্র প্রধান বস্তুএ না হলে কোন পুরুষ বা নারীর চরম সুখ লাভ ঘটে না। নর-নারীর সাধারণ মিলনের আসন সাধারণতঃ নারী ও পুরুষের আঙ্গিক মিলন অর্থাৎ রতিক্রিয়ায় এইরূপ ঘটেঃ- নারীর কোন বিছানার উপরে (মাটিতে পাতাই হোক বা চৌকি বা খাটের উপরেই হোক) শয়ন করবে। তার বুকের ওপর শয়ন করবে পুরুষ। সঙ্গে সঙ্গে চুম্বন, আলিঙ্গন, নখচ্ছেদ্য করতে পারে ।


কিন্তু পুরুষের কর্তব্য নারীকে কাম উন্মত্ত করে নেওয়া। তারপর পুরুষ নারীর বক্ষ আবরণ ও কটি আবরণ একে একে উন্মোচন করে তাকে আও উত্তেজিত করে তার আবরণহীন যোনির মধ্যে নিজের পুরুষাঙ্গ প্রবেশ করাবার চেষ্টা করে। অনেক সময় এতে সফল হবার জন্যে পুরুষ তার শক্ত পুরুষাঙ্গ নারীর ভগাঙ্কুর ঘর্ষণ করে। নারীর এই ভগাঙ্কুর-যেখানে যোনি অঙ্গের দুটি ওষ্ঠ মিলিত হয়েছে- যেখানে একটি মটরের আকারের ক্ষুদ্র মাংসপিণ্ড থাকে। তাকে বলা হয় ভগাঙ্কুর।  এটি নারীর একটি উত্তেজনাপূর্ণ প্রত্যঙ্গ- এই ভগাঙ্কুর মর্দনে নারী চরম উত্তেজিত হয়ে থাকে। পুরুষের পুরুষাঙ্গ স্পর্শে বা ঘর্ষণে এটি প্রবল উত্তেজিত হয়ে উঠে। পুরুষের দৃঢ় পুরুষাঙ্গ ঘর্ষণ করলে ভগাঙ্কুরে যে অনুভূতি হয়, তাতে যোনির মধ্যে রসঃস্খলন হয়ে থাকে। তখন পুরুষ অনেক সহজে নারীর যোনির মধ্যে নিজের কঠিন পুরুষাঙ্গ প্রবেশ করাতে পারে।
এতে ক্রিয়াশীল পুরুষ ও নারীর বেশ আনন্দ হয়। এই সঙ্গে একবার সামনে একবার পেছনে পুরুষাঙ্গ সঞ্চালন করলে তাতে নারীর আনন্দ আরও বেশি হয়ে থাকে। এইভাবে কিছুকাল সাধারণ রতিক্রিয়া চালালে পুরুষাঙ্গ থেকে বীর্য্য নামক পদার্থ বের হয়ে যায়। এতে যে কেবলমাত্র পুরুষের আনন্দ হয় তা নয়-নারীরও যথেষ্ট আনন্দ বোধ হয়ে থাকে। পুরুষের বীর্য্যপাতের সময় নারীর শরীর থেকেও এক প্রকার রসস্রাব ঘটে থাকে। অন্যান্য সংবেদন ভঙ্গী অন্যান্য সংবেদন ভঙ্গী প্রয়োজন হয় দুটি কারণে-
১। যদি পুরুষাঙ্গ বড় বা মোটা হয় এবং স্ত্রী যোনি ছোট হয়।
২। যদি যোনি শিথিল বা বড় হয় এবং পুরুষাঙ্গ ছোট হয়ে থাকে।

বড় পুরুষাঙ্গের উৎফুল্লক আসন নারী যদি পিঠের উপরে শয়ন করে তার নিতম্ব বা পাছা তুলে ধরে- উরুদ্বয় পরস্পর থেকে ছড়িয়ে থাকে- তা হলে তাকে বলা হয় উৎফুল্লক আসন। এই অবস্থায় নারী তার পাছার তলে একটি বালিশ রেখে যোনি বেশ ফাঁকা করতে পারে । এই অবস্থায় পুরুষ নারীর কোমর দুহাতে জাপটে ধরে জোরে করে তার লিঙ্গকে যোনি মধ্যে আমূল প্রবেশ করাতে পারে। নারী যোনির গভীরতল প্রদেশে প্রবেশ করিয়া একবার সামনে একবার পেছনে ইন্দ্রিয় সঞ্চালন করলে নারী খুব বেশি আনন্দ পায়। তবে যাতে নারীর যোনিতে আঘাত না লাগে তা দেখতে হবে।
বিজুমিভক আসন এই ভঙ্গিমায় নারীকে তার জানু গুটিয়ে তুলে, উরুদ্বয় তুলে, উরুদ্বয় উঁচু করে এবং পরস্পর থেকে ছড়িয়ে দিয়ে তার যোনি একেবারে ব্যাদিত মুখ করে দিলে পুরুষের সুবিধে হতে পারে। ইন্দ্রানিক আসন ইন্দ্র পত্নী শচীদেবী এই আসন করতেন বলে তার এই নাম। নারী তার হাঁটু এবং উরুদ্বয় এমনভাবে জড়িয়ে ধরবে, যাতে নারীর কোমরের দিকে সেগুলি গিয়ে লেগে যায়। এতে একটি সাধারণ নারী, হস্তিনী জাতীয় নারীর মত সুখদান করতে পারে। শিথিল যোনির আসন এবারে শিথিল যোনি রতির বিভিন্ন ভঙ্গির কথা বলা হবে। এই রতিতে প্রধান যা দেখা উচিত তা হলো-নারী বা পুরুষের মধ্যে ব্যবধান। 

নারীর যোনি শিথিল না পুরুষাঙ্গ অস্বাভাবিক ছোট। এই অবস্থায় পুরুষাঙ্গ যদি ঢল্‌ ঢলে ভাবে যোনির ভেতরে প্রবেশ করে এতে তা বলে নারী পূর্ণ তৃপ্তি পেতে পারে না। এখানে উচিত হলো নারীর যোনিতে পুরুষাঙ্গ প্রবেশ করার পর যোনি শক্ত করা-যেন এঁটে পড়ার জন্য পুরুষ আনন্দ পায়। এই অবস্থায় আরও বিভিন্ন আসন আছে। সম্পূটক আসন এতে নারী ও পুরুষ তাদের উরুদ্বয় ও পদদ্বয় সম্পূর্ণ ছড়িয়ে দেবে (অর্থাৎ লম্বা করে দেবে)-তারপর পরস্পরকে জড়িয়ে ধরে শয়ন করবে। যদি পাশাপাশি শুয়ে জড়িয়ে ধরে তা হলে পুরুষাঙ্গ যোনিতে প্রবেশ করিয় উরু-পা লম্বা করে ছড়িয়ে ধরবে। একে ইংরাজীতে Side Clasping attitude লে অনুবাদ করা হয়েছে। আর যদি নারীর বুকের উপরে পুরুষ শয়ন করে তাকে বলা হয় Back clasping attitude. প্রচাপ আসন যদি নারী পুরুষের সঙ্গে জড়াজড়ি করে শুয়ে পুরুষের পুরুষাঙ্গ নিজের যোনির মধ্যে প্রবেশ করিয়ে দিয়ে উরুদ্বয় খুব জোরে চেপে ধরে, তাহলে তাকে বলে প্রচাপ আসন। এই ভঙ্গিতে সঙ্গমকালে অনেক সময় পুং ইন্দ্রিয় বেরিয়ে আসে-তখন পুরুষের উচিত আবার তা যোনির মধ্যে প্রবেশ করানো।
 
অর্দ্ধবৃত্ত আসন পুরুষ আপন লিঙ্গ নারীর যোনি মধ্যে প্রবেশ করিয়ে তাকে ভাল ভাবে জড়িয়ে ধরবে। নারীও তাই দুই উরু বিপরীত দিকে রেখে পুরুষাঙ্গ খুব জোরে চেপে ধরবে। যাতে লিঙ্গ বের হয়ে যেতে না পারে, এই আসনকে বলা হয় অর্দ্ধবৃত্ত আসন। এতে যোনি বেশ সঙ্কুচিত হয়ে আসে ও নারী বেশ আরাম অনুভব করে। ক্রান্তাসন এই ভঙ্গিতে ঘোটকির মত নারীও পুরুষের পুরুষাঙ্গ যোনির ভেতরে প্রবেশ করিয়ে এত জোরে উরু দুটি বিপরীত দিকে এনে উরু দিয়ে চেপে ধরে, যে পুরুষাঙ্গ কিছুতেই যোনি থেকে বের হতে পারে না। বাৎস্যায়নের মত অন্ধ্র প্রদেশের নারীরা এরুপ বিহার করতে খুবই অভ্যস্ত ছিল।
 
উপরের লেখা আসনগুলি ছারাও আরও নানা আসনের বিষয়ে এবার বলা হচ্ছে।
১। ভগ্নক আসন এই ভঙ্গিমায় যখন কোনও হস্তিনী নারী তার উরুদ্বয় একতিএত করে পা দুটি মাথার দিকে উল্টে দেয় এবং পুরুষ তার উরুদ্বয়কে ফাঁকা করে নিজ লিঙ্গ যোনিত প্রবেশ করায়, তাকে বলা হয় ভগ্নক আসন।
২। জৃম্ভিতক আসন এই ভঙ্গিতে পুরুষ নারীর উরু দুটি বেঁকিয়ে নিজের উপর তুলে নেবে তারপরে রতি সুরু করবে।
৩। উৎপীড়িতক আসন এতে নারী উরুদ্বয় ও জানু বেঁকিয়ে পুরুষের বুকের ওপর রাখে এবং পুরুষও তার হাত দুটি দিয়ে নারীর কটিদেশে চেপে দরে এই ভঙ্গিমায় রতি সুরু করে। তাই এর নাম দেওয়া হয়েছে উৎপীড়িতক।
৪। অর্দ্ধ উৎপীড়িতক আসন যখন নারীর এক পা লম্বা থাকে আর এক পা পুরুষের বুকের ওপর থাকে, তখন তাকে অর্দ্ধ উৎপীরিতক বলা হয়।
৫। বেনু বিদারিতক আসন এই ভঙ্গিতে নারী তার এক পা পুরুষের কাঁধের ওপর চাপায় আর এক পা লম্বা করে রাখে। এই ভঙ্গিমায় একবার এক পা, আর একবার অন্য পা পুরুষের কাঁধের ওপরে চাপান চলে।
৬। শূল চিত্রাতক আসন এই ভঙ্গিতে নারী এক পা লম্বা করে বিছানায় রাখেবে আর এবং অন্য পা বেঁকিয়ে তার নিজের মাথায় ঠেকবে। এই ভঙ্গিমা আয়ত্তে আনতে একটু অভ্যাসের প্রয়োজন হয়ে থাকে সন্দেহ নাই।
৭। কর্কটক আসন যখন নারী তার পা গুটিয়ে উরুর সঙ্গে যোগ করে এবং পুরুষের পাছার তলদেশ জড়িয়ে ধরে তার গোড়ালি নিজের পাছায় রাখে এবং অনেক সময় হাঁটু গেড়ে সুরত আরম্ভ করে। তখন এই ভঙ্গির নাম কর্কটক আসন।
৮। পীড়িতক আসন যখন নারী বিছানায় শুয়ে তার উরুদ্বয় তুলে ছড়াইয়া দেয় এবং একবার এক উরু অন্য উরুর ওপর অদলবদল করে চাপিয়ে দেয়, তখন তার নাম হয় পীড়িতক আসন।
৯। পদ্মাসন এই আসনে নারী বাঁ পা মুড়ে পায়ের পাতা ডানদিকের উরুর ভাঁজে লাগিয়ে দেয় এবং তার ডান পাও মুড়ে বাঁ পায়ের উরুর ভাঁজে লাগিয়ে থাকে। তারপর পুরুষ তার ইন্দ্রিয়টি যোনি মধ্যে প্রবেশ করায়, এর নাম পদ্মসন।
১০। পরাবৃত্তক আসন এই অবস্থায় নারী উপুড় হয়ে বুকের ওপর শয়ন করবে। পুরুষ তার উপরে শয়ন করে পেছন দিক থেকে যোনির মধ্যে পুরুষাঙ্গ প্রবেশ করাবে। দন্ডায়মান বিভিন্ন আসন উপরের সব কটি ভঙ্গিই হয়ে থাকে বিছানায় শোয়া অবস্থায়।
আরও নানা প্রকার মিলন করা যায়। এগুলি আবার জলের মধ্যে দণ্ডায়মান ভাবেও করা যায়- তবে বাৎস্যায়ন জলকেলি পছন্দ করেন না।  

এই সব দণ্ডায়মান আসনগুলি এবারে বলা হবে।
১। ব্যায়ত সম্মুখ আসন দণ্ডায়মান নারী ও পুরুষ মুখোমুখি থাকবে। নারী এক পা তুলে ধরবে-পুরুষ তার যোনিতে লিঙ্গ প্রবেশ করাবে-এর নাম ব্যায়ত সম্মুখ আসন।
 ২। দুতল আসন উপরের অবস্থায় নারী তার হাঁটু দুটি মুড়ে তার পা দুটি পুরুষের পায়ের উপর রাখবে। এই অবস্থায় পুরুষাঙ্গ যোনি মধ্যে প্রবেশ করাবে।
৩। জানু কর্পূরা আসন নারী তার নিজ হসে- দ্বারা হাঁটু দুটি মুড়ে ধরবে- পুরুষ তার কনুই দিয়ে নারীকে তুলে ধরে সঙ্গম শুরু করবে। এর নাম জানু কর্পূরা আসন।
৪। অবলম্বিতক আসন যখন পুরুষ কোনও দেয়ালে বা থামে আশ্রম করে- বা তাতে হেলান দিয়ে দাঁড়াবে-নারী এগিয়ে গিয়ে পুরুষের সামনে দাঁড়াবে। পুরুষ তার নিতম্ব ধরে তুলে নেবে। তারপর যোনিতে লিঙ্গ সংযুক্ত করে কটি চালনা করবে।
৫। ধেনুক আসন নারী তার হাত পা চারটিই মাটির উপরে রেখে দেবে এবং পুরুষ তাকে দুই হাতে পিছন থেকে জড়িয়ে ধরবে। ধেনুর মত থাকে বলে একে বলা হয় ধেনুক ।  
৬। আসন্ত অর্থাৎ গাভীদের মত আসন।
৭। সংঘটক আসন যখন একজন পুরুষ দুটি নারীকে একই বিছানায় শুইয়ে রমণ করে তখন তার নাম সংঘটক আসন। এখানে দুজনেই উপুড় হয়ে শোবে পাশাপাশি ভাবে। পুরুষ একবার একজনের সঙ্গে শৃঙ্গার করবে অন্যবার ওর সঙ্গে শৃঙ্গার করবে আর একজনকে রমণ করবে। একাধিক নারী একত্রে সঙ্গম এটি বর্তমানে আইন অনুযায়ী নিষিদ্ধ হলেও বাৎস্যায়নের কালে চালু ছিল। এই অবস্থায় একটি নারী চিৎ অন্যটি উপুড় হয়ে শোবে এই ভাবে সঙ্গম করতে হলে খুব দ্রুত লিঙ্গ চালনা করতে হতো- অথচ পুরুষের বীর্য্যপাত হতো না-বিশেষ করে রাজারা একাধিক পত্নীর সঙ্গে এইভাবেই সঙ্গম করে থাকতেন। এর সবচেয়ে আশ্চর্য বিষয় হচ্ছে, এতে দ্রুত একাধিক নারীকে তৃপ্ত করা যায়।
 
বাৎস্যায়নের সময়ে স্ত্রীরাজ্য আসামে আবার একই নারীর বহু পুরুষ সঙ্গমও চালু ছিল-যেমন দ্রৌপদীর পাঁচজন স্বামী ছিল। বর্তমানে তা নেই-তাইও বিষয় আলোচনা করা হলো না।




৬.৭ শীৎকার ধ্বনি

 

 সঙ্গমকালে মুখে নানারকম শব্দ নারী পুরুষের মিলনের সময় নারী থাকবে ক্রিয়াহীন্তপুরুষ নারীর বিভিন্ন অঙ্গ সংবাহন করবে-তার সঙ্গে মিলন চলবে। পূর্ণ আনন্দ নারী পেলে তার মুখ দিয়ে নানারকম ধ্বনি বা আনন্দ শব্দ বের হবে। যেমন আঃ আঃ ইঃ ইঃ ওঃ ওঃ ইত্যাদি।


 
নারীর দেহে টিপুনীর স্থান
১। হাতে চেটো।
২। সম্পূর্ণ বাহু।
৩। পায়ের চেটো।
৪। উরুদ্বয় ও পায়ে মাংসল ভাগ।
৫। ভগদেশ বা যোনি স্থান।
৬। ভগাঙ্কুর। যখন মিলনের পূর্বে বা সঙ্গে সঙ্গে এই মৃদু শীৎকার ধ্বনি হয়-তখন নারী ও পুরুষ নানা প্রকার শব্দ করে থাকে। একে আনন্দের শীৎকার ধ্বনি বলে। 

নারী ও পুরুষ ভীষণ কামোন্মত্ত হলে এ রকম শব্দ হতে পারে। নানা প্রকারের শীৎকার ধ্বনি
১। হিঙ্কার যা নাসিকা উত্থিত।
২। স্তনিত- অনেকটা মৃদু মেঘ গর্জনের মত শব্দ।
৩। কৃজিত-আসে- আসে- হং হং বা হিং হিং ধরণের শব্দ।
৪। রুদিত-এটি আসে- আসে- কান্নার শব্দের মত।
৫। সুৎকৃত-এটি রতি কার্যের পর পরিশ্যান্ত হবার শব্দ-সেই সঙ্গে বের হবে কথা-শিগগীর শিগগীর’-কিন্তু কথাও শীৎকৃতের মধ্যে গণ্য।
৬। দ্যুৎকৃত-জিহ্বা ও তালুর মিলিত শব্দ
৭। ফুৎকৃত- ঠিক ফু দেবার মত এই শব্দ-সেই সঙ্গে বের হবে ঠিক কিছু কথা- ও গো মা-ছেড়ে দাও-মরি মরি আঃ-পারছি না ইত্যাদি নানা শব্দ।
 
এছাড়া বিভিন্ন শব্দ হতে পারে-যেমন পাখির কূজনের শব্দ-মৌমাছির শব্দ-হরিণীর শব্দ-আরও নানা শব্দ। অবশ্য বীর্য্যপাত হয়ে যাবার সময় বা পরেও পুরুষ অনুরূপ নানা শব্দ করতে পারে কিন্তু পুরুষের লক্ষ্য রাখতে হবে-যেন নারীর শব্দ আগে বের হয়। শীৎকারের প্রয়োজনীয়তা পুরুষ সাধারণতঃ নারীর চেয়ে বলশালী, তাই সে সহসা উত্তেজিত হয়। নারীকে শৃঙ্গার তৃপ্তি যে যত তাড়াতাড়ি পরিপূর্ণ করতে পারে, শীৎকার তত আগে বের হবে নারীর মুখ থেকে শীৎকার বা রতির আনন্দ শব্দ নারীর মুখ থেকে বের হলে তা সার্থক রতি। তা যদি না হয়, তবে রতি অসার্থক।

বভিন্ন উপাচার বা অত্যাচার শীতকার বের হবার জন্যে নারী দেহে বিভিন্ন উপাচার বা অত্যাচার প্রয়োগ দরকার।
(১) কিল ব্যবহার।
(২) বিদ্ধক স্তনে আঙ্গুল বিদ্ধ করা।
(৩) করতলি-একসঙ্গে অনেকগুলি আঙ্গুল দ্বারা নারীর মাথায় আঘাত করা হয়।
(৪) সঙ্গম শিখা-আঙ্গুল দিয়ে নারীর স্তনবৃন্ত নিপীড়ন ও স্তন তুলে ধরা। বাৎস্যায়ন বলেন- মিলনে এসব উপাচার প্রয়োগ করা উচিত কেবল নারী যেন বেশী ব্যথা না পায়।




  ৬.৮ বিপরীত বিহার

 

নারী পুরুষের মিলনের সাধারণ নিয়ম হলো এই যে, নারী বিছানার উপরে চিৎ হয়ে শেঅবে-উপরে উঠে পুরুষ বিহার করবে। কিন্তু যদি পুরুষ চিৎ হয়ে শয়ন করে-নারী তার উপরে উঠে বিহার করে থাকে, তবে তাকে বলা হয় বিপরীত বিহার।

 

বিপরীত বিহারের কারণ
১। পুরুষের অনিচ্ছা বা সামান্য ইচ্ছা।
২। পুরুষের রতি ক্লান্তি।
৩। পুরুষ রতি অনিচ্ছা।
৪। পুরুষ নিজেকে নারীর হাতে ছেড়ে দিতে চায়।
৫। একই পদ্ধতির পরিবর্তন।
৬। অনেক পুরুষেরই এই বিহার পছন্দ হয়।

বিপরীত বিহারের বিভিন্ন পদ্ধতি
১। শুয়ে শুয়ে ইন্দ্রিয় উত্তেজিত করবে নারী তার বুকের উপর শয়ন করে, যোনি মধ্যে লিঙ্গ প্রবেশ করাবে।
২। পুরুষ শায়িত, নারী বসে তার যোনিতে লিঙ্গ প্রবেশ করাবে
৩। পুরুষ দণ্ডায়মান নারী কায়দা করে যোনি মধ্যে পুরুষাঙ্গ প্রবেশ করাবে।
পুরুষ বসে নারী তার উপরে বসে পুরুষাঙ্গ নিজ যোনিতে প্রবেশ করাবে।








৬.৯ নারীর কাম উত্তেজনা ও তৃপ্তি

 

 নারীর কাম উত্তেজনা দ্রুত কি ভাবে বৃদ্ধি করা যায় সে বিষয়েও কামশাস্ত্রে আলোচনা করা হয়েছে। নিম্নলিখিত উপায়গুলি অবলম্বন করলে দ্রু নারীর কাম উত্তেজনা বৃদ্ধি পায়।  
তা হলোঃ-
১। মুখ, কপাল, গাল ইত্যাদি স্থানে ঘন ঘন চুম্বন করা ও ধীরে ধীরে ঘর্ষণ করা।
২। সঙ্গমের পূর্বে নারী দেহের বিভিন্ন স্থান স্পর্শ করলে, ধীরে ধীরে নাড়াচাড়া করলে কাম উত্তেজনা জাগে।
৩। নারীর যৌন ইন্দ্রয়গুলি স্পর্শ, ঘর্ষণ ও মর্দন করা উচিত।
৪। বিশেষ করে স্তন ও ভগাঙ্কুর মর্দন কাম উত্তেজনার সহায়ক।
৫। প্রয়োজন হলে ধীরে ধীরে আঘাত করা, দংশন করা বা নিপীড়ন করা চলে।
৬। সহবাসের আগে উপরোক্ত বিষয়ে স্ত্রীকে ভালভাবে উত্তেজিত কারা একান্ত আবশ্যক-অন্যথায় স্ত্রীর অতৃপ্তি থেকে যেতে পারে।

 
নারীর উত্তেজনার লক্ষণ নারী উত্তেজিত হলে তার কি কি লক্ষণ পেতে পারে তা এবারে বলা হচ্ছে।
১। নারী উত্তেজিত হয়ে পড়লে এবং কামবিহ্বল হলে তার দুটি চোখ অর্দ্ধনিমীলিত ও রক্তবর্ণ ধারণ করে।
২। জোরে জোরে নিশ্বাস পড়তে থাকে।
৩। চেহারার মধ্যে উত্তেজনার ভাব স্পষ্ট ফুটে ওঠে।
৪। হাত পা শিথিল হয়ে পড়ে।
৫। চোখ বুজে থাকতে চায়।
৬। তার লজ্জা কমে যায়, পুরুষ তার অঙ্গস্পর্শ করলে সে তাতে বাধা দেয় না।
৭। পুরুষ তার গোপন স্থানে হাত দিলে বা চাপ দিলে সে তা উপভোগ করে।
৮। সব রকম ভয়, সঙ্কোচ কাটিয়ে সারাটা দেহই সে পুরুষকে অর্পণ করে।

নারীর তৃপ্তির লক্ষণ নারী যৌন তৃপ্তি লাভ করলে তার মধ্যে কি কি লক্ষণ প্রকাশ পায় তা এবারে আলোচনা করা হচ্ছে।
১। দেহ নুইয়ে পড়ে।
২। সারাটা দেহে যেন অবসান আসে।
৩। দ্রুত হৃৎস্পন্দন হতে থাকে।
৪। আবেশে চোখ বুজে থাকে।
৫। যোনি থেকে রসস্রাব নির্গত হয়।
৬। নারীর সারা দেহে পুনঃপুনঃ শিহরণ হতে থাকে।
৭। অনেকে পূর্ণ তৃপ্তির আবেশে অজ্ঞান পর্যাপ্ত হতে পারে এমন ঘটনাও জানা যায়।
৮। ধীরে ধীরে গোঁ গোঁ বা প্রাণীর অনুরূপ শব্দ বের হতে পারে।
৯। সে পুরুষকে জোর করে বুকে চেপেও ধরে রাখতে পারে।




৬.১০ সহবাসের আগে ও পরে


সম্ভোগের আগে স্বামীর কর্তৃব্যঃ  
১। পতির কর্তব্য হলো, পত্নীকে প্রিয়তমা জ্ঞানে বা সত্যিকারের ধর্মপত্নী জ্ঞানে নিজের তৃপ্তির সঙ্গে সঙ্গে তারও দৈহিক ও মানসিক তৃপ্তি বিধান করা। নিজের কামনা পরিতৃপ্ত করাই সম্ভোগের একমাত্র লক্ষ্য হওয়া উচিত নয়।
২। কোন প্রকার বল প্রয়োগ করা আদৌ বাঞ্ছনীয় নয়। একথা মনে রাখতে হবে।
৩। চুম্বন, আলিঙ্গন, নিপীড়ন ইত্যাদি নানাভাবে স্ত্রীর মনে পূর্ণ কামাব জাগিয়ে তারপর তার সঙ্গে সহবাসে রত হওয়া প্রতিটি পুরুষের কর্তব্য।
৪। নারী ধীরে ধীরে আত্নসমর্পণ না করা পর্যন্ত তার সঙ্গে কখনও সহবাসে লিপ্ত হওয়া উচিত নয়।
 ৫। নারী কখনও নিজের যৌন উত্তেজনাকে মুখে প্রকাশ করে না। তবে সেটা অনেকটা লক্ষণ দেখে বুঝে নিতে হয়।
৬। নারীর কর্তৃব্য সর্বদা পতির প্রতি শ্রদ্ধা ও ভালবাসার ভাব ফুটিয়ে তোলা।
৭। পতিকে ঘৃণা করা, তাকে নানা কু-কথা ইত্যাদি বলা কখনই উচিত নয়। সহবাসের অনিচ্ছা থাকলে তা তাকে বুঝিয়ে বলা উচিত। ঘৃণা বা বিরক্তিসূচক তিরস্কার করা কখনও উচিত নয়। এতে পতির মনে দুঃখ ও বিরক্তি জাগতে পারে।
 ৮। নারীর কর্তৃব্য স্বামীর চুম্বন, দংশন ও আলিঙ্গনের প্রতিউত্তর দেওয়া।
৯। নারীর পূর্ণ কামভাব জাগলে পতিকে কৌশলে তা বুঝিয়ে দেওয়া উচিত।
১০। নারীর উত্তেজনা ধীরে ধীরে আসে-আবার তা ধীরে ধীরে তৃপ্ত হয়। 


পুরুষের উত্তেজনা আসে অকস্মাৎ আবার তা অকস্মাৎ শেষ হয়। তাই নারীর পূর্ণ কামভাব না জাগিয়ে সঙ্গমে মিলিত হলে নারী পূর্ণ তৃপ্তি পেতে পারে না। এরকম করা রিধিবিরুদ্ধৃ। এতে নারী পূর্ণ তৃপ্তি পায় না- এর জন্যে সে পর-পুরুষ পর্যন্ত গমন করতে পারে। দাম্পত্য জীবনে অনেক বিপর্যয় এর জন্যে আসতে পারে। স্ত্রীকে দ্রুত তৃপ্তির উপায়
১। গালে ঠোঁটে ঘন ঘন চুম্বন করা।
২। স্ত্রীর ঊরুদেশ জোরে জোরে মৈথুনের আগে ঘর্ষণ করা।
সম্ভোগের আগে যোনিদেশ, ভগাঙ্কুর কামাদ্রি আলতো ভাবে ঘর্ষণ করা।
ভগাঙ্কুর মর্দন।
৫। মৈথুনকালে স্তন মর্দ্দন।
৬। সহাবাসের আগে যদি পুরুষাঙ্গের আগায় খুব সামান্য পরিমাণ কর্পূর লাগানো হয় তবে স্ত্রী দ্রুত তৃপ্তি লাভ করে থাকে। তবে কর্পূর যেন বেশি না হয়, তাতে স্ত্রী যোনি ও পুরুষাঙ্গ জ্বলন অনুভূত হতে পারে।

সহবাসের কালঃ  
মেয়েদের একটু ঘুমোবার পর রাত্রির দ্বিতীয় প্রহর শ্রেষ্ঠ মৈথুন সময়।
২। দিনের বেলা সহবাস নিষিদ্ধ।
৩। ভোরবেলা সহবাস শরীরের পক্ষে ক্ষতিকর হতে পারে
৪। গুরু ভোজনের পর সঙ্গে সঙ্গে সহবাস নিষিদ্ধ।
৫। ক্রুদ্ধ বা চিন্তিত মেজাজে স্ত্রী সহবাস উচিত নয়। প্রফুল্ল মনে সহবাস উচিত।

কোন ঋতু মৈথুনের পক্ষে কতটা উপযোগী তার বিচার করা হচ্ছে।
ক। বসন্তকাল-৯০%।
খ। শরৎকাল-৭০%।
গ। বর্ষাকাল-৫০%।
ঘ। হেমন্তকাল-৪০%।
ঙ। গ্রীষ্মকাল-৩০%।
চ। শীতকাল-২০%।
 
প্রহরণ বা মৃদু প্রহার মৈথুনকালে মৃদু প্রহার-শৃঙ্গারও কামের একটি অঙ্গ হিসাবে স্বীকৃত হয়েছে। কথাটা শুনতে অনেকটা আশ্চার্য্য বোধ হয়, কিন্তু কামসূত্রে তার ব্যাখ্যা প্রদত্ত হয়েছে। নারী কিছুটা উৎপীড়িত হতে চায় যৌন মিলনে-তাই মনোবিজ্ঞান স্বীকার করে যে, পুরুষ কিছুটা উৎপীড়ন করতে পারে নারীকে। কিন্তু প্রহরণ ঠিক শৃঙ্গার নয়-কারণ মিলনের আগে এর প্রয়োজন নেই।
 
পূর্ণ মিলনের সময় আনন্দ বৃদ্ধির জন্যে পুরুষ ধীরে ধীরে নারী-দেহের কোমল অংশে মৃদু প্রহার করতে পারে। পুরুষ অথ্যাচারী-মনোবিজ্ঞানের মতে যে প্রহার করা হয় তা আনন্দের। তাই বলে এতে দুজনেই যে আনন্দ পাবে এমন নয়। এটা দুজনের মানসিক অবস্থার উপর নির্ভর করে।
প্রহরণের মধ্যে আবার প্রকারভেদ আছে-
১। মুষ্টি প্রহার-হাত মুষ্টি বদ্ধ করে দেহের বিভিন্ন অংশে মৃদু প্রহরণ।
২। চপেটাঘাত (হাত খুলে রেখে ধীরে ধীরে।)
৩। দুটি অঙ্গুলির সাহায্যে প্রহরণ।
৪। প্রহরণ ও সংবহন মিশ্রিত করে প্রহরণ।
 
মর্দন বা সংবাহন যদিও মর্দন শৃঙ্গার কালে মাঝে মাঝে হয়- তবে এই মর্দন প্রকৃত শৃঙ্গার নয়। মর্দন বেশি হয় রতিকালে বা রতির পূর্বে। নারীদেরহর কোমল অংশে যেমন স্তন, নিতম্ব, ঊরুদ্বয় প্রভৃতির মর্দন হয়ে থাকে। রতিক্রিয়াকালে স্তন ও নিতম্ব মর্দন করেও পুরুষ ও নারী উভয়ে আনন্দ পায় বলে বাৎস্যায়ন বলেছেন। তবে যারা পছন্দ করেন তাঁরাই এটা করবেন। যদি একজন বা দুজনেই পছন্দ না করেন তবে এর প্রয়োজন নেই।
 
ঔপরিষ্ঠক বা মুখমেহন মুখমেহন স্বাভাবিক মিলন হিসাবে বাৎস্যায়ন স্বীকার করেন নি। স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে এটি সর্বদা চলতে পারে না। তবু শাস্ত্রে এটি উল্লিখিত হয়েছে। শাস্ত্রে উল্লিখিত হবার অর্থ অবশ্য এই নয় যে, এটি খুব ভাল আসন বা এটি সম্মান পেয়েছে। শাস্ত্রে কেবল এটাকে একটি অস্বাভাবিক মিলন বলেই এর নাম উল্লিখিত হয়েছে। ভারতের কোন কোন জাতির মধ্যে ঔপরিষ্ঠক স্বীকৃত ও বেশ প্রচলিত-কিন্তু তাই বলেই তাকে উচ্চ স্থান দেওয়া হয় না। মুখমেহন সব পণ্ডিতের মতেই ঘৃন্য-তাই এ বিষয়ে বেশি আলোচনা করা হলো না।
 
বাৎস্যায়ন বলেন নারী শুধু তিনটি শ্রেণীরই নয়-তাছাড়াও আছে আর এক শ্রেণী-তার নাম হলো নপুংষক শ্রেণী। এই নপুংষক শ্রেণীর যোনি ঠিকমত গঠিত নয়-তাই এদের সঙ্গে যৌন ক্রিয়া সম্ভব নয় এদের দ্বারা কেবল মুখমেহন করানো চরতে পারে। এই শ্রেণীর নপুংষক অনেক সময় অর্থের বিনিময়ে মুখমেহনে রাজী হয়। এই মুখমেহন আট প্রকার হয়ে থাক-
১। নিমিত-এতে নপুংষক তার করতলে পুরুষাঙ্গ ধরে আসে- আসে- তার ওষ্ঠাধারে ঘর্ষণ করে।
২। পার্শ্ব-লিঙ্গ মুণ্ডের আবরণ খুলে আসে- আসে- মুখে প্রবেশ করানো।
৩। বহিঃসংদংশন্তদাঁত ও ঠোঁট দিয়ে পুরুষাঙ্গের আবরণ উন্মোচন।
৪। পুরুষাঙ্গ বারে বারে মুখের ভেতরে নেওয়া ও বের করা। বহুক্ষণ এরূপ করা।
৫। অন্তঃসংদংশন্তওষ্ঠাধর দিয়ে চোষণ করা।
৬। জিহ্বা দ্বারা চোষণ।
৭। আম্রচোষণ-পুরুষাঙ্গ আম্রের মত চোষণ করা।
৮। আকন্ঠীত-সম্‌সত পরুষাঙ্গ গিলে ফেলার মত। মুখের মধ্যে সুরতের সঙ্গে সঙ্গে আলিঙ্গনাদিও চলতে পারে।
অনেক নীচজাতীয়া নারীদের দ্বারা এ কাজ করানো যেতে পারে। কামশাস্ত্রে মুখে সুরত নিষিদ্ধ। তবে অনেকে এটি পছন্দ করেন। বা কোন রাবাঙ্গনা রাজী হলে তার দ্বারা এটি করান। কিন্তু অন্তঃপুর চারিনীদের এটি করা উচিত নয়।

সহবাসের পরের কথা সহবাসের পরে দুজনেরই উচিত কমপক্ষে এক পোয়া গরম দুধ, একরতি কেশন ও দুই তোলা মিশ্রি সংযোগে সেবন করা। সহবাসে কিছু শক্তির হ্রাস হতে পারে। এতে করে কিঞ্চিৎ পূরণ হয়। অন্যথায় সহবাস করা উচিত নহে। এই কারণেই মনীষীরা মাসানে- একবার রতিক্রিয়া ব্যবস্থা করে দেন। যাতে উপরোক্ত সামগ্রীর যোগাড় করতে গরীব বা মধ্যবিত্ত শ্রেণীর লোকের পক্ষেও কষ্টকর না হয়। 



পুষ্টিকর খাদ্য না খেলে পুরুষ অচিরেই শক্তিহীন হয়ে পড়ে ও তার কর্মশক্তি লোপ পায়। অত্যধিক মৈথুনের জন্য হজমশক্তি লোপ পায়। ফলে অম্ল, অজীর্ণ প্রভৃতি নানা প্রকার রোগ দেখা দেয়। এই সমস্ত রোগের হাত থেকে নিশ্চিত ভাবে নিষকৃতির জন্য মৈথুনের পর দুগ্ধ পান অত্যাবশ্যাক। 

অবস্থায় সম্ভব হলে নিম্নের টোটকাগুলি ব্যবহার করলে ভয়ের কারণ থাকবে না।
(১) বাদাম দুই তোলা ভালভাবে বেটে নিয়ে তা মিশ্রি সংযোগে মৈথুনের পর গরম করে খেলে বিশেষ উপকার হয়।
(২) দুতোলা ঘি, দু তোলা মিশ্রি কিংবা গুড়ের সঙ্গে মিশিয়ে সেবন করলে সহজে ক্ষয় পূরণ হয়।
(৩) মুগের ডাল ভালভাবে বেটে নিয়ে ভেজে নিন, পরে মিশ্রি কিংবা চিনি মিশিয়ে নাড়ার মত করে চার তোলার মত মৈথুনের পর খেয়ে নিলে উপকার হয়।
 
সহবাসের সঙ্গে সঙ্গে পুরুষাঙ্গ ধৌত করলে নপুংষকতার লক্ষণ প্রকাশ পায়। সেজন্য রতিক্রিয়ার কিছু সময় পরে পুরুষাঙ্গ ধৌত করা বিধেয়। এ বিষয়ে সতর্ক দৃষ্টি রাখা প্রত্যেকের উচিত। সহবাসের পর দেহের বিষয়ে কি কি যত্ন নিতে হবে এ বিষয়ে শাস্ত্রে কতগুলি নিয়ম বিধিবন্ধ আছে। আমরা তা একে একে আলোচনা করছি।
১। সহবাসের পর দুজনের কিছুক্ষণ পরস্পর সংলগ্ন হয়ে অবস্থান করবে। এতে মানসিক তৃপ্তি হয়। ধীরে ধীরে দেহ শীতল হয়। এতে প্রেম দীর্ঘস্থায়ী হয়ে থাকে।
২। তারপর অবশ্য প্রত্যেকেই নিজ নিজ যৌনাঙ্গ ভালভাবে ধৌত করবে-এটি অবশ্য পালনীয়। তবে কিছুক্ষণ পর।
৩। অনেক শাস্ত্রে দুজনের ্লান করা বিধান আছে তবে তা সকলে পালন করে না
 ৪। শর্করা মিশ্রিত এক গ্লাস জল কিঞ্চিৎ লেবুর রস বা দধি কিংবা শুধু ঠাণ্ডা জল কিছু খেতে হবে। এতে শরীরের মঙ্গল করে।
৫। প্রয়োজন হরে কোন পেটেন্ট ঔষধ সেব করা যাইতে পারে।
৬। সহবাসের পর ঘুম একান্ত আবশ্যক-তদাই শেষ রাতে সহবাস বাঞ্ছনীয় নয়।
৭। পরদিন প্রভাতে স্নান করা একান্ত আবশ্যক। তা না হলে মন শুচি হয় না- কর্মে প্রফুল্লতা আসে না। অন্যথায় পরদিন মন খারাপ থাকে, কর্মে একঘেয়েমি আসতে পারে।
৮। সহবাস প্রারম্ভে বা শেষে নেশা সেবন ভাল নয়। এতে দৈহিক ক্ষতি হয়-প্রেম দূরে যায়-মানসিক অসাড়তা আসতে পারে।
৯। রাত্রির প্রথম ও শেষ প্রহর বাদে মধ্যম অংশই সহবাসের পক্ষে উৎকৃষ্ঠ সময়, কথা সর্বদা মনে রাখতে হবে।
১০। সহবাসের পর অধিক রাত্রি জাগরণ, অধ্যয়ন, শোক প্রকাশ, কলহ কোন দুরূহ বিষয় নিয়ে গভীর চিন্তা ও মানসিক কোন উত্তেজনা ভাল নয়।

 
সফল মৈথুন এবারে আমরা একটি প্রয়োজনীয় বিষয় নিয়ে আলোচনা করব তা সফল মৈথুন। এমন প্রশ্ন অনেকে করতে পারে-মৈথুন আবার সফল অ-সফল কি? যথারীতি নর-নারীর মিলন। দৈহিক মিলনের পরিপূর্ণ আনন্দ ও রেতঃপাত। এই ত মৈথুন। আমরা বলব না, তা নয়। তবে? আমরা বলব শতকরা একটি কি দুটির বেশি মৈথুন সফল মৈথুন হয় না। কেন হয় না? তা বলতে গের সফল মৈথুন কি, সে বিষয়ে আলোচনা করতে হয়। স্ত্রীর কামনার তৃপ্তি কম বেশি হয়ত হয়ে থাকে। তথাপি স্ত্রী গর্ভবতী হয়ে সন্তানের জন্মও দিতে সুরু করে, তবু তা সফল মৈথুন হয় না।
 
 এর উত্তর হলো শৈথুন বা রেতঃপাত অনেকেই করে থাকেন। কিন্তু সফল মৈথুন খুব অল্প জনের ভাগ্যেই ঘটে থাকে। এবার সে বিষয়ে আলোচনা করব। সফল মৈথুনের পরিচয় যে মৈথুন করলে শারীরিক, মানসিক ও দৈহিক কোনও ক্ষতি হয় না। উলটে কর্মে আনন্দ ও একাগ্রতা আসে এবং মৈথুনের প্রতি আকর্ষণ বৃদ্ধি পায়; স্ত্রীর প্রতি আকর্ষণ বৃদ্ধি পায় এবং হৃদয় প্রফুল্ল ও শান্ত, ্লিগ্ধতায় পরিপূর্ণ হয়ে ওঠে-তাকে সফল মৈথুন বলে।
 
সফল মৈথুনের ফলঃ  
১। মনের শান্তি পায়। মন সর্বকাজে দৃঢ় হয়ে থাকে ও মনের উৎসাহ বাড়ে।
২। কাজকর্মে একাগ্রতা আনে। কাজকর্মের দিকে মন সংযোগ বৃদ্ধি পায়।
৩। দৈহিক ও মানসিক তৃপ্তির জন্যে কর্মক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। নিজেকে গর্ব অনুভব করে।
৪। স্ত্রীর প্রতি প্রেম বৃদ্ধি পায় ও স্ত্রীকে প্রকৃত ভালবাসতে পারে। স্ত্রীর আকর্ষণ আসে স্বামীর প্রতি।
৫। অন্য নারীর প্রতি আকর্ষণ থাকে না।

অসফল মৈথুনের ফলঃ  
১। মনে শান্তি থাকে না। মন ধীরে ধীরে অবসাদে ভরে ওঠে। মেজাজ হয়ে যায় খিটখিটে।
২। সব সময় মন উত্তেজিত ও বিরক্ত থাকে।
৩। মানসিক দুর্বলতা প্রযুক্ত কাজকর্মে ইচ্ছা কমে যায়।
৪। স্ত্রীর প্রতি ভালবাসা কমে আসে।
৫। পরনারীর প্রতি আকর্ষণজনিত চরিত্রদোষ ঘটতে পারে। পতিতারয় গমনও ঘটতে পারে।
৬। শরীর ম্যাজ ম্যাজ করে-সব সময় শরীর ভার ভার বোধ হয়। আহার ও নিদ্রার প্রতিও আকর্ষণ কমে যায়।
৭। বায়ুর প্রাবল্য, চোখ মুখ জ্বালা করতে থাকে।
৮। মাথা ঘোরে ও গা বমি বমি করে।
৯। ধীরে ধীরে মৈথুনের প্রতি ঘৃণাও জন্মাতে পারে।
 
এখন কথা হচ্ছে কি করলে মৈথুন সফল করা যায়। মৈথুন অ-সফল হওয়ার প্রধান কারণ হচ্ছে-উপযুক্ত পুরুষ ও নারীর মিলনের অভাব। অ-সফল মৈথুনের কারণ এবারে অ-সফল মৈথুনের কতকগুলি প্রধান কারণের বিষয় লেখা হচ্ছে-এগুলিও মনে মনে চিন্তা ও বিচার করে নিতে হবে।
১। মৈথুনের আগে নারীকে উত্তেজিত না করা।
২। মৈথুনে যোগ্যভাবে নিজেকে তৈরী না করা।
৩। উপযুক্ত আসন না করে মৈথুনে লিপ্ত হওয়া।
৪। শক্তির অভাবে মৈথুন পূর্ণ হতে পারে না।
৫। অসুস্থ অবস্থায় মৈথুন্তএতে তত পূর্ণ আনন্দ হয় না। দৈহিক ক্ষতি করে।
৬। ঘন ঘন মৈথুন্তএটি অবশ্য পরিত্যজ্য। ইহা শরীরের পক্ষে ক্ষতিকর।
অযোগ্য স্ত্রী-স্ত্রী উপযুক্ত না হলে পূর্ণ মৈথুন হয় না।
৮। অন্যান্য অসুবিধা বা মানসিক কারণ।
৯। স্বামী বা স্ত্রীর অন্য নারী বা পুরুষের প্রতি গোপন আসক্তি।
১০। প্রকৃত উত্তেজনা ছাড়া মৈথুন।
 
উত্তেজনার বিচার এবারে প্রকৃত উত্তেজনা কি ও কি তার লক্ষণ সে বিষয়ে বলা হচ্ছে। উত্তেজনা দুই প্রকার-
(১) আসল
(২) নকল বা বাহ্যিক।
 
যে যৌন উত্তেজনা সাধারণতঃ নর-নারীর মধ্যে দেখা যায় তা প্রায়ই নকল উত্তেজনা। নকল কেন তার প্রমাণ করে দেওয়া হবে-আগে আসল উত্তেজনার লক্ষণ কি তাই বলা হচ্ছে। নারী পুরুষকে বা পুরুষ নারীকে কাছে টেনে নিয়ে পরস্পর উত্তেজনা সৃষ্টির প্রয়াস পায় এবং তার ফলে যদি হৃদয়ে উত্তেজনা জাগে তা প্রকৃত উত্তেজনা নয়। হৃদয়ে আপনা থেকেই ভাবভঙ্গীর মুখে পরস্পরের সঙ্গে মিলিত হবার দুর্দমনীয় কামনা যদি জাগে তবে তা হলো আসল অর্থাৎ প্রকৃত উত্তেজনা।
 
প্রকৃত উত্তেজনা সম্বন্ধে বাৎস্যায়ন বলেছেন।- যদি কোন নারীর স্মৃতি (চেহারা) বা ধ্যান ছাড়াও আপনা থেকেই হৃদয় উত্তেজিত য়ে উঠে, তবে তা হরো প্রকৃত উত্তেজনা। কিন্তু এ হলো সেই যুগের কথা-মানুষ যখন প্রকৃতির উপর নির্ভর করে চলতো। প্রকৃতির উপর নির্ভর করে সে নিজের মানসিক অবস্থা নিরূপণ করতো। আজকাল যুগ পালটে গেছে। নারী মূর্তি দর্শন আজকাল হামেশাই করতে হয়। হাটে-বাজারে চারপাশে নারীর নানা ভঙ্গির নানা ছবি নানা বিজ্ঞাপন। নারীর দেহ আর যৌবনের নানারূপ ভঙ্গিমার বিজ্ঞাপন দিয়েই আজকাল প্রচুর জিনিস বিক্রি হয়। সাইনবোর্ডেও নারীর নানারূপ প্রতিকৃতি দেখা যায়। তবে আজকাল সেভাবে প্রকৃত উত্তেজনা বোজা সহজ কথা নয়।
 
প্রকৃত উত্তেজনা তাই আজকাল অন্যভাবে স্থির করা হয়ে থাকে। অর্থাৎ যখন চিত্তবৃত্তি আপনা থেকেই নারীর প্রতি আকৃষ্ট হয় এবং মনকে কিছুতেই আর সংযত করা যায় না, তখনই প্রকৃত উত্তেজনার সৃষ্টি হয় এবং তাকেই প্রকৃত উত্তেজনা বলে। এ কথা ঠিক যে প্রকৃত উত্তেজনা ছাড়া মৈথুন করা উচিত নয়। তেমনি প্রকৃত উত্তেজনা জাগলে তা দমন করা ঠিক নয়। তাতে দৈহিক ও মানসিন ক্ষতি হতে পারে। প্রকৃত উত্তেজনার সময় ব্যতীত মৈথুন করলে তা মৈথুন হতে পারে না।
 
মৈথুনের শক্তির স্বল্পতা মৈথুনে শক্তির স্বল্পতা আর শীঘ্র রেতঃপাত করলে একই কথা, কিন্তু দুটির কারণ কিছুটা ভিন্ন। শীঘ্র বীর্য্য পতন এক ধরনের রোগ। এ বিষয়ে আমরা এর পরে রোগের পরিচ্ছেদে বিশেষভাবে আলোচনা করব। কিন্তু মৈথুন শক্তির স্বল্পতা একটা প্রধান জিনিজ। এটি দৈহিক ও মানসিক অবস্থার ওপর হয়ে থাকে। কারণঃ-
১। অধিক উত্তেজনা।
২। ঘন ঘন উত্তেজনা কিন্তু কম পরিমাণে।
যখন উত্তেজনা আসে তখন স্ত্ররি সঙ্গে মৈথুন না করা।
৪। মৈথুনের সময় ভয়, লজ্জা ও কোন বাধা।
৫। বহুদিন বাদে মৈথুন করা।
৬। হস্তমৈথুন করা।
৭। দৈহিক অসুস্থতা।
৮। জন্মগত দুর্বলতা।
৯। যৌন ব্যাধি ইত্যাদি।
প্রতিকার-শীঘ্র পতন, যৌন ব্যাধি জন্মগত দুর্বলতা ইত্যাদি বিষয়ে এর পরে আলোচনা করা হয়েছে। প্রত্যেক রোগের কি ঔষধ তাও বলা হয়েছে। নেশা সেবন কোন প্রকার নেশা করা অবশ্যই অনুচিত বলে শাস্ত্রে বর্ণিত হয়েছে। তবে কিছু সংখ্যক লোক মৈথুন শক্তি বাড়াবার মত কিছু কিছু নেশা করে থাকেন। তবে নেশা যদি সামান্য হয় অর্থাৎ তাতে যদি ঠিক পুরা মাদকতা না আসে, অথচ যৌন ক্ষমতা যদি সামান্য বৃদ্ধি পায়, তবে তা নিশ্চয়ই উপকারী। নেশায় যৌন ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়? ঠিক তা নয়-নেশায় বীর্য্যকে কিছুটা শুকিয়ে গাঢ় করে দেয়, তাই কিছুটা বেশী সময় ধরে মৈথুন করা চলে।
শাস্ত্রের মতে মাদক দ্রব্য অল্প পরিমাণে অবশ্য ইন্দ্রিয় শক্তি ও দৈহিক শক্তি বৃদ্ধির জন্য প্রতিটি ঔষধের সাথে ব্যবহার করা হয়। যেমন-
(১) এ্যালকোহল।
(২) সিদ্ধি।
(৩) আফিং ইত্যাদি কিন্তু পরিমাণে তা ব্যবহৃত হয় খুব কম-ঠিক মাত্রা অনুযায়ী।

 কিন্তু লজ্জাশালী রমণী স্বামীর এ প্রস্তাব প্রকারান্তরে প্রত্যাখ্যান করে। এতে স্বামী অবশেষে মনঃক্ষুন্ন হয় এবং বেশ্যালয়ে যাওয়া সুরু করে। পেটের দায়ে যারা এ বৃত্তিকে স্বেচ্ছায় বরণ করে নিয়েছে, পয়সা রোজগারের জন্য যত নগ্ন ও গর্হিত কাজই হোক না কেন, এরা তা করে। আর একটা কথা। সাধারণ খাদ্য পানীয় দ্বারা যতটা সম্ভব ততটা যৌন ক্ষমতা আগে বাড়াবার চেষ্টা করা উচিত। তারপর অবশ্য ঔষধ। ঔষধের চেয়ে বেশী মাত্রায় নেশা ভাল নয়।
 
যৌন ইন্দ্রয়ের অক্ষমতা যৌন ইন্দ্রয়ের অক্ষমতা হলো সকল মৈথুনের আর একটা প্রধান অন্তরায়। মৈথুন শক্তির অক্ষমতা আর যৌন অক্ষমতার কারণ কিন্তু ঠিক এক নয়। মৈথুন শক্তির অক্ষমতা সক্ষম ইন্দ্রিয় শক্তি থাকলেও হতে পারে। কিন্তু অনেকের ইন্দ্রিয় আবার ঠিক তার মত দৃঢ় হয় না। আর ইন্দ্রিয় দৃঢ় না হলে মৈথুন ক্ষমতা স্বাভাবিক হয় না। এর প্রকৃত কারণ কি? এ বিষয়ে নানা আলোচনা আগে করা হয়েছে। এখনও করা হবে। ইন্দ্রিয় উত্তেজিত না হবার কারণ হলো অবশ্য শারীরিক দুর্বলতা। কিন্তু তা আসে কেন?
(১) অমিতাচার।
(২) জন্মগত অক্ষমতা।
(৩) যৌন ক্ষমতার অভাব।
(৪) হস্তমৈথুন অভ্যাস ইত্যাদি।
যাই হোক যৌন ইন্দ্রিয়ের অক্ষমতা উপযুক্ত চিকিৎসক দ্বারা অবশ্যই চিকিৎসা করান দরকার। তা না হলে যৌন ইন্দ্রিয়ের ক্রমশঃ আরও মারাত্নক হয়ে অন্য রোগের সূচনা করতে পারে। অযোগ্য স্ত্রী স্ত্রী, মৈথুনে অযোগ্য হয় কেমন করে? এর উত্তর হলো-মৈথুনের উপযুক্ত ভাবে সহায়ক না হলে সেই স্ত্রীকে অযোগ্য বলা হয়। স্ত্রী অযোগ্য কি করে হতে পারে।
১। মৈথুনে অনাসক্তি।
২। উপযুক্ত শ্রেণী হিসাবে মিল না হবার জন্য মৈথুনে অক্ষমতা। যেমন বৃষ বা অশ্ব জাতীয় পুরুষের সাথে পদ্মিনী জাতীয় স্ত্রীর।
৩। দৈহিক গঠনের জন্য মৈথুনে অতৃপ্তি।
৪। লজ্জা ও ভয় ইত্যাদি কারণে স্বামীর সঙ্গে মৈথুনে লিপ্ত না হতে ইচ্ছা।
৫। হৃদয়ে প্রেমের অভাব।
৬। গোপন প্রণয়ী-স্বামীর প্রতি আসক্তি বা প্রেমের অভাব। এর জন্যে উপযুক্ত ব্যবস্থা করা যেতে পারেমানসিক হলে তার জন্যে স্ত্রীকে ভালোবেসে তার হৃদয় জয় করতে হবে। দৈহিক হলে, চিকিৎসার প্রয়োজন। নারী পুরুষ উভয়েই সমশ্রেণীর না হলে মৈথুনকালীন বিবিধ অসুবিধার সৃষ্টি হয়। এই অসুবিধাই হলো অ-সফল মৈথুন।
 
মৈথুনে অন্যান্য অসুবিধা সফল মৈথুনের অন্যান্য অসুবিধা হলো-
(১) আর্থিক অস্বচ্ছলতা।
(২) যোগ্য স্থানের অভাব।
(৩) খাদাদির অভাব ও দৈহিক দুর্বলতা ইত্যাদি।
 
একথা অবশ্যই ঠিক যে সুবিধাজনক সময়, স্থান, খাদ্যদির অভাব হলে, মৈথুন, সফল তে পারে না। কোন গরীব বা অভাবী লোক আগে খাদ্যের যোগাড় করবে তারপর মৈথুন। এখানে আর একটি প্রয়োজনীয় কথা হলো-প্রাচীন শাস্ত্র কারক বলেছেন যে, সফল মৈথুন নর-নারীর আনন্দ প্রাপ্তির উৎস তা ঠিক। সফল মৈথুন না হলে, হৃদয়ে পূর্ণ আনন্দ প্রাপ্তি না হলে উপযুক্ত সন্তান হয় না। অ-সফল মৈথুনে যে সন্তান হয়, তা জাতির প্রতিবন্ধক স্বরূপ। সফল মৈথুনই প্রকৃত সন্তানের জন্ম দেয়। অবশেষে একটি প্রধান কথা হলো-মৈথুন যক কম হয় তত ভালো। তাতে রতিশক্তি বৃদ্ধি পায় ওসকল মৈথুনের জন্যে দেহমনকে শক্তি সঞ্চয়ী করে তোলে।




এর পর পড়ুনঃ
কামসূত্র বশীকরণ __কামসূত্রঃ পর্ব