শনিবার, ২৭ এপ্রিল, ২০১৩

আমার লাশের গন্ধ




আমার ঘাম ঝরানো শ্রমে তোমারা আজ অনেক অর্থ বৈভবের মালিক ।

তোমরা অনেক নামি দামি লোক । তোমরা রাজনৈতিক নেতা । দামি শয্যায় তোমাদের রাত্রি যাপন । বাতাসে আতর লোবানের ঘ্রান । কি দামি তোমাদের  তৈজস পত্র । 

এখন আমি লাশ , তোমাদেরি অবহেলা ও অতি লোভের কারনে । আমি যেখানে মরে আছি সেখানে কি অসহ্য পচা লাশের গন্ধ । তোমাদের ঘুনে ধরা সমাজকে লাথি মেরে চলে গেলাম না ফেরার দেশে । 

এখন শুকে দেখ তোমাদের হাত , তোমাদের সব টাকা কড়ি ও আসবাব পত্রে , যা আমার ঘামে কেনা । শুধুই লাশের গন্ধ ।

এখন শুধুই লাশের গন্ধ । আমার সহকর্মীদের আহাজারি । কি আহ্লাদে ছিল তোমাদের বসবাস । আমি ছড়িয়ে দিয়েছি আমার লাশের গন্ধ তোমাদের সকলের মাঝে ।

আমাকে করুনা করোনা । আমি করুণা চাই না । চাই না তোমাদের শোক ।  

শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০১৩

Pouter Pigeon কবুতর পালনে ব্যাবসায়িক দিক





Pouter কবুতর পালনে ব্যাবসায়িক দিক ।

বাংলাদেশের সর্বত্র এসকল কবুতর রয়েছে। বাংলাদেশের জলবায়ু এবং বিস্তীর্ণ শষ্যক্ষেত্র কবুতর পালনের জন্য অত্যন্ত উপযোগী। পূর্বে কবুতরকে সংবাদ বাহক, খেলার পাখি হিসাবে ব্যবহার করা হতো। কিন্তু বর্তমানে এটা পরিবারের পুষ্টি সরবরাহ, সমৃদ্ধি, শোভাবর্ধনকারী এবং বিকল্প আয়ের উস হিসাবে ব্যবহৃত হচেছ। 




একটি পূণাঙ্গ বয়সের কবুতর ডিম দেবার উপযোগী হতে ৫ থেকে ৬ মাস মসয় লাগে। এই অল্প সময় অতিক্রান্ত হবার পর থেকেই কবুতর বছরে প্রায় ১২ জোড়া ডিম প্রদানে সক্ষম। ২ মাস বয়সেই কবুতরের বাচ্চা বিক্রির  উপযোগী হয়ে থাকে বা এই বাচ্চাকে বাজারজাত করা যায়। 

কবুতরের ডিম থেকে মাত্র ১৮ দিনেই বাচ্চা সাধারণ নিয়মে ফুটে থাকে। এই বাচ্চা আবার পরবর্তী ৫ থেকে ৬ মাস পরে নিজেরাই ডিম প্রদান শুরু করে।
জন্মের প্রথম দিন থেকে ২৬ দিন বয়স পর্যন্ত কবুতরের বাচ্চার ক্রমবর্ধমান অবস্থা থাকে। প্রথমে সারা দেহ হলুদ পাতলা বর্ণের লোম দ্বারা আবৃত থাকে।  এই সময় নাক ও কানের ছিদ্র বেশ বড় দেখায়। প্রায় ৪-৫ দিন পর বাচ্চার চোখ খোলে বা ফুটে। পনের দিনে সমস্ত শরীর পালকে ছেয়ে যায়। প্রায় ১৯-২০ দিনে দু'টো ডানা এবং লেজ পূর্ণতা লাভ করে ও ঠোঁট স্বাভাবিক হয়। এই ভাবে ২৬-২৮ দিনে কবুতরের বাচ্চা পূর্ণতা লাভ করে। তবে ২ মাস বয়সে তা বিক্রির উপযোগী হয় ।



পৃথিবীতে প্রায় ২০০ জাতের কবুতর রয়েছে । আমাদের দেশে ২০ টিও অধিক জাতের কবুতর আছে বলে জানা যায়।
১। গোলা, ২। গোলী, ৩। টাম্বলার, ৪। লোটান, ৫। লাহোরী, ৬। কিং, ৭। ফ্যানটেল, ৮। জ্যাকোবিন, ৯। মুকি, ১০। পোটার  ইত্যাদি ।

এর মধ্যে একটি জাত হল  পোটার,  ব্লু-হেনা । এরকম এর মধ্যে এক জোড়া হলুদ-হেনা কবুতরের বাচ্চার দাম-ই ৭০,০০০ টাকা।
এই জাতের কবুতর উড়তে পারে না । এদের খাচায় পালতে হয় । 




এই কবুতর প্রতিপালন এখন শুধু শখ ও বিনোদনের মধ্যে সীমাবদ্ধ নেই বরং তা এখন একটি লাভজনক ব্যবসা হিসাবে পরিগণিত হয়েছে। কবুতর বাড়ি ও পরিবেশের সৌন্দর্য বৃদ্ধি করা ছাড়াও অল্প খরচে এবং অল্প ঝামেলায় প্রতিপালন করা যায়।
 




সাধারনত ২ মাস বয়সি একজোড়া ব্লু পোটারের বাচ্চার দাম ১০,০০০ টাকা থেকে ১৫,০০০ টাকা । এরকম এর মধ্যে এক জোড়া হলুদ-হেনা কবুতরের বাচ্চার দাম-ই ৩০,০০০ থেকে ৪০,০০০ টাকা।  তবে যে কোন পোটার একজোড়া ৩০,০০০ থেকে ৫০,০০০ টাকা বিক্রি করা যায় খুব সহজেই ।




এখন আসা যাক এর প্রতিপালনের আয় ব্যায় এর হিসাবেঃ
এই জাতের কবুতর উড়তে পারে না বলে খাচায় পরিপালন করতে হয় ।  
একটি ১০ ফুট x ১২ ফুট রুমে অনায়াসেই ২ টি খাচায় ১২ জোড়া কবুতর পালন করা যায় ।

ব্যায়  
  এক জোড়া ব্লু পোটার কবুতরের বাচ্চা ( মাস বয়সী ) এর দাম  = ১০,০০০ টাকা ।  ১২োড়া ব্লু পোটার   কবুতরের দাম পরবে = ১,২০,০০০/ টাকা
২ঃ  ১৮ জোড়া ব্লু পোটার  কবুতরের খাবার বাবদ প্রতি মাসে আনুমানিক = ২০০০/ টাকা ।   ৬ মাস খাবার বাবদ খরচ পরবে আনুমানিক = ১২,০০০ টাকা ।
  ৬ মাসে ভেক্সিন ও ভিটামিন বাবদ খরচ পরবে আনুমানিক = ,০০০/ টাকা ।
৪ ঃ  ৬ ফুট x   ৬ ফুট x  ২ ফুট  মাপের প্রতিটি খাচার দাম পরবে = ৭,৫০০/ টাকা । ২ টি খাচার দাম পরবে = ১৫,০০০/ টাকা

৬ মাস পর্যন্ত আনুমানিক খরচ = ( ১+২+৩ ) = ১,৫০,০০০/ টাকা ।
( উল্লেখ্য যে, এই ব্যায় শুধু নিজের বসত বা ফ্লাটের  একটি রুমে করলে,
  কটি ১২/১০ ফুট রুমে প্রায় ১২ জোড়া ব্লু পোটার  কবুতর পালন করা যাবে । )
   




লাভের দিক

ব্লু পোটার  কবুতরের বয়স যখন ৬ মাস হবে তখন থেকেই ডিম দেয়া শুরু করবে ।
অর্থাৎ কবুতর কিনে আনার ৪ মাস পর ঘড়ে পরিপালনের বয়স যখন ৬ মাস হবে তখন জোড়া কবুতর থেকে ২ জোড়া বাচ্চা পাওয়া যাবে । 
মাস বয়সী প্রতি জোড়া বাচ্চা বিক্রি করা যাবে = ১০,০০/ টাকা করে ।
২ জোড়া বাচ্চা বিক্রি করা যাবে =  ১,২০,০০০/ টাকা ।

এই হিসাবে মোট ব্যায় তোলে আনতে সময় লাগবে আনুমানিক + =   মাস ।





যদি একটি রুমে ১২ জোড়া ব্লু পোটার  কবুতর পরিপালন করা যায় ____
ব্যায় হবে কবুতর ও ( ৬ মাসের খাবার ও ভ্যাক্সিন সহ ) আনুমানিক ১,৫০,০০০/ টাকা ।
মোট প্রাক্কলিত ব্যায় উঠে আসতে সময় লাগবে মাত্র + = মাস ।
২ মাসের ১২ জোড়া বাচ্চা বিক্রি করা যাবে ১২ x ১০,০০০ = ১,২০,০০০ টাকা ।
প্রাক্কলিত ব্যায় উঠে আসার পর থেকে প্রতি মাসে খাবার ও ভ্যাক্সিন বাবদ আনুমানিক ব্যায় হবে = ৫,০০০/ টাকা । 

লাভ হবে প্রতি মাসে প্রায় = ১,১৫,০০০/ টাকা  ( ঘড় ভাড়া বাদে )




খাদ্যঃ  
  •  ছোট আকারের কবুতরের জন্য ২০-৩০ গ্রাম, মাঝারী আকারের জন্য ৩৫-৫০ গ্রাম এবং বড় আকারের জন্য ৫০-৬০ গ্রাম খাদ্য প্রতিদিন দিতে হবে। দানাদার জাতীয় খাদ্যের মধ্যে গম, ধান, ভূট্টা, সরগম, ওট শতকরা ৬০ ভাগ এবং লেগুমিনাস বা ডাল জাতীয় খাদ্যের মধ্যে সরিষা, খেসারী, মাটিকলাই শতকরা ৩০-৩৫ ভাগ সরবরাহ করতে হবে।
  • কবুতরের ভিটামিন সররাহের জন্য বাজারে প্রাপ্ত ভিটামিন ছাড়া সবুজ শাকসবজি, কচি ঘাস সরবরাহ করা প্রয়োজন।
  • প্রতিদিন ২ বার খাদ্য সরবরাহ করা ভাল। মাঝে মাঝে পাথর, ইটের কণা (গ্রিট) এবং কাঁচা হলুদের টুকরা দেয়া উচি কারণ এ গ্রিট পাকস্থলীতে খাবার ভাঙতে এবং হলুদ পাকস্থলী পরিষ্কার বা জীবাণুমুক্ত রাখতে সাহায্য করে।
  • কবুতরের ডিম দেয়ার সময় গ্রিট মিশ্রণ বা খনিজ মিশ্রণ, ডিম এবং ডিমের খোসা তৈরী এবং ভাল হ্যাচাবিলিটির জন্য অতীব প্রয়োজনীয়। এই খনিজ  মিশ্রণ বোন মিল (সিদ্ধ) ৫%, ঝিনুক ৪০%, লাইম স্টোন ৩৫%, গ্রাউন্ড লাইম স্টোন ৫%, লবণ ৪%, চারকোল ১০% এবং শিয়ান রেড ১% তৈরী করতে হবে 
পানিঃ প্রতিদিন পানির পাত্র ভালভাবে পরিষ্কার করে ৩ বার পরিষ্কার পরিচছন্ন ও বিশুদ্ধ পানি সরবরাহ করা উচিত। দুই সপ্তাহ পর পর পটাশ মিশ্রিত পানি সরবরাহ করলে পাকস্থলী বিভিন্ন জীবাণুর আক্রমণ থেকে রক্ষা পাবে।




রোগ প্রতিরোধঃ  

১। কবুতর উঠানোর আগে খামারসহ ব্যবহার্য্য সকল যন্ত্রপাতি সঠিকভাবে জীবাণুমুক্ত করতে হবে। প্রথমে পানি দিয়ে পানির সাথে কার্যকরী জীবানুনাশক (  সোডিয়াম হাইপোক্লোরাইড বা আয়োডিন দ্রবণ) মিশিয়ে স্প্রে করতে হবে।
২। সুস্থ্য সবল কবুতর সংগ্রহ করতে হবে। প্রয়োজনে বাহ্যিক পরজীবি নিধনের জন্য ০.৫% ম্যালাথিয়ন দ্রবণে কবুতরকে গোসল করিয়ে নিতে হবে। এক্ষেত্রে কবুতরের মুখ এই দ্রবণে ডুবানো যাবে না। হাত দিয়ে মাথায় লাগিয়ে দিতে হবে। অন্তঃপরজীবি প্রতিরোধের জন্য কৃমিনাশক ঔষধ সেবন করাতে হবে।
৩। কবুতরের খোপ, দানাদার খাদ্য ও খনিজ মিশ্রণ সরবরাহের পাত্র, পানির পাত্র ও গোসল করার পাত্র এবং কবুতর বসার স্ট্যান্ড নিয়মিত পরিষ্কার ও জীবাণুমুক্ত করতে হবে। জীবাণুমুক্ত খাবার এবং বিশুদ্ধ পানি সরবরাহ করতে হবে।

রোগবালাই
কবুতরের একটি অতিপরিচিত রোগ হলো রানিক্ষেত। এটি একটি ভাইরাসজনিত রোগ। এ রোগ প্রতিরোধে কবুতরকে তিন দিন বয়সে একবার, ২১ দিন বয়সে একবার, এরপর প্রতি দুই মাস অন্তর প্রতিষেধক টিকা দিতে হয়। বসন্ত একটি পরিচিত রোগ। এ রোগের জন্য ডিম পাড়ার আগে মা কবুতরকে এবং বাচ্চাকে ২১ দিন বয়সে টিকা দিতে হয়। কলেরা রোগের জন্য জন্মের দুই মাস বয়সে টিকা দিতে হয়। এ ছাড়া কবুতরের ঠাণ্ডা-জ্বর হতে পারে। এ ক্ষেত্রে রেনামাইসিন ট্যাবলেটের সঙ্গে মাল্টিভিটামিন ট্যাবলেট খাওয়ানো হয়। কবুতরের আরেকটি পরিচিত অসুখ হলো বদহজম। বদহজম হলে কবুতরকে এজাইম ট্যাবলেট বা  বিট লবণের পানি খাওয়াতে হয়।