বৃহস্পতিবার, ১৭ ডিসেম্বর, ২০১৫

গাজর চাষ ও পুষ্টিমান



শীতকালীন সবজিগুলোর মধ্যে গাজর একটি। এ ফসলটি সারা বছর হলেও শীতে ফলন দেয় বেশি। অন্যান্য সময়ে এর ফলন হয় কম। তাই শীতকালীন সবজি হিসেবে গাজর যেমন পরিচিত তেমন জনপ্রিয়ও বটে।

এর ইংরেজি নাম Carrot ও বৈজ্ঞানিক নাম Daucus carota. আমাদের দেশের প্রায় সব জায়গায় গাজর চাষ করা হয়।




গাজর ভিটামিন-এ সমৃদ্ধ পুষ্টিকর সবজি। তাছাড়া এতে ক্যালসিয়াম, লৌহ, ফসফরাস, শ্বেতসার এবং অন্যান্য ভিটামিন যথেষ্ট পরিমাণে রয়েছে।
 গাজর  ক্যারোটিন, ভিটামিন , থায়ামিন ও রিবোফ্লোবিন সমৃদ্ধ সবজি। এর সবুজ পাতা ও পুষ্টিকর, প্রোটিন, ভিটামিন ও খনিজ সমৃদ্ধ। কালোরঙা গাজর দিয়ে এক রকম সুধাবর্ধক পানীয় তৈরি হয়।

পুষ্টিতথ্যঃ
১০০ গ্রাম (এক কাপ) পরিমাণ গাজর থেকে ৮২৮৫ মাইক্রোগ্রাম বিটাক্যারোটিন এবং ১৬৭০৬ ওট ভিটামিন '' পাওয়া যায়। এ ছাড়া ৪১ কিলোক্যালোরি খাদ্যশক্তি, ২.৮ গ্রাম খাদ্যআঁশ, ভিটামিন 'বি-১' ০.০৪ মিলিগ্রাম, ভিটামিন 'বি-২' ০.০৫ মিলিগ্রাম; ২.২ মিলিগ্রাম লৌহ, ৫.৯ মিলিগ্রাম ভিটামিন 'সি', ১৩.২ মাইক্রোগ্রাম ভিটামিন 'কে', ১৯ মাইক্রোগ্রাম ফলেট, ৩২০ মিলিগ্রাম পটাশিয়াম, ৩৩ মিলিগ্রাম ক্যালসিয়াম, ১২ মিলিগ্রাম ফসফরাস, ১২ মিলিগ্রাম ম্যাগনেসিয়াম পাওয়া যায়।

স্বাস্থ্যতথ্যঃ
১।  গাজরের বিটা ক্যারোটিন ভিটামিন-''-তে রূপান্তরিত হয়ে দৃষ্টিশক্তি ভালো রাখে। এটি অ্যান্টি-অক্সিড্যান্ট হিসেবেও কাজ করে।
২। গবেষণায় দেখা গেছে, গাজরে বিদ্যমান ফ্যালক্যারিনল ও ফ্যালক্যারিডিওল ফুসফুস ও অন্ত্রের ক্যান্সারসহ অন্যান্য ক্যান্সার প্রতিরোধ করে।
৩। গাজরের আলফা ক্যারোটিন ও লুটিন নামক উপাদান হৃদরোগ প্রতিরোধে বিশেষ ভূমিকা পালন করে।
৪। গাজর থেকে প্রাপ্ত ভিটামিন-'' রক্তের ক্ষতিকর টঙ্কি উপাদানগুলো দেহ থেকে বের করে দিতে সাহায্য করে।
৫। গাজর শ্বাসনালির প্রদাহ নিরাময় করে।
৬। গাজর দাঁত ও মাড়ির সুস্থতা রক্ষা করে।
৭। গর্ভবতী মায়েরা গাজরের রস খেলে শিশুর জন্ডিস হওয়ার ঝুঁকি কমে।
৮। এটি কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে।
৯। গাজর শরীরের যেকোনো ক্ষত নিরাময় করে। গাজরের পাতা মধুর সঙ্গে মিলিয়ে খেলে উপকার পাওয়া যায়।
১০। গাজরের স্যুপ ডায়রিয়া রোগে কার্যকরী ভূমিকা পালন করে।
১১। গাজর কৃমিনাশক হিসেবে কাজ করে।
১২। গাজরের সঙ্গে কয়েক কোয়া রসুন মিশিয়ে খেলে উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করা যায়।
১৩। দেড়শো গ্রাম গাজর কুঁচি এক টেবিল চামচ মধু এবং হাফ-বয়েল ডিমের সঙ্গে মিশিয়ে দুমাস খেলে আপনার শারীরিক  অক্ষমতা হ্রাস পেতে পারে।

সৌন্দর্য রক্ষায় গাজরঃ
১। গবেষণায় পাওয়া গেছে, গাজরে ক্যারোটিনয়েড রঞ্জক পদার্থ রয়েছে। এ উপাদানটি ত্বকের কোষ পরিষ্কার করে ত্বককে করে তোলে আকর্ষণীয়।
২। ত্বকের রোদে পোড়া ভাব দূর করতে গাজর কার্যকরী।
৩। গাজর চুল, ত্বক ও নখের সৌন্দর্য রক্ষা করে।
৪। এটি ত্বকের ভাঁজ, খসখসে ভাব ও ব্রণ দূর করে।
৫। গাজরের সঙ্গে মধু মিশিয়ে ত্বকের প্রলেপ হিসেবে ব্যবহার করলে ত্বক উজ্জ্বল হয়।


চোখের জ্যোতি বৃদ্ধিঃ  গাজর চোখের জ্যোতি বৃদ্ধিতে কার্যকর ভূমিকা পালন করে। গাজরে উপস্থিত বিটা ক্যারোটিন পরবর্তিতে ভিটামিন এতে রূপান্তরিত হয়।  ভিটামিন এ দৃষ্টিশক্তি বৃদ্ধি করে, চোখের কোষকলা তৈরীতে সাহায্য করে।  রাতকানা, গ্লুকোমা ইত্যাদি রোগ প্রতিরোধ করে।

ক্যান্সার প্রতিরোধ করেঃ  বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গিয়েছে যে গাজরে উপস্থিত পুষ্টি উপাদান গুলো ক্যান্সার প্রতিরোধে সহায়ক।  নিয়মিত গাজর খেলে ব্রেস্ট ক্যান্সার, কোলোন ক্যান্সার ও ফুসফুসের ক্যান্সারের ঝুঁকি কমে। কারণ গাজরে আছে পলি-এসিটিলিন অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, যা ক্যান্সারের কোষ তৈরীতে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে।

হৃদরোগ প্রতিরোধ করেঃ  গাজরের অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও পলিএসিটিলিন হৃদরোগ প্রতিরোধ করে। গাজরের উচ্চমান সম্পন্ন ক্যারোটিনয়েডস হৃদরোগের ঝুঁকি কমায়। নিয়মিত গ্রহণে গাজরের বিটা ও আলফা ক্যারোটিন রক্তনালী সংকোচন, অ্যাসিডিটির প্রকোপ কমায়।

 বয়স ধরে রাখেঃ  নিয়মিত খাবার তালিকায় গাজর রাখলে শরীরের বয়সজনিত ক্ষতিগুলো কম হয়। বয়সের কারণে কোষের ক্ষতি রোধ করতে গাজরের ভূমিকা অনেক। মাতৃকালীন স্বাস্থ্য সুরক্ষায় গাজরে উপস্থিত পলিএষ্টেরন গুরুত্বপূর্ন ভুমিকা পালন করে।

 ইনফেকশন কমায়ঃ  কোথাও কেটে ছিঁড়ে গেলে অনেক সময় ইনফেকশন হয়ে যায়। কাটা ছেঁড়া জনিত ইনফেকশন এড়াতে গাজর খুবই কার্যকরী। তাই ইনফেকশন এড়াতে কাঁটা ছেঁড়া জায়গায় গাজর ব্লেন্ড করে লাগিয়ে নিন।

 ওজন কমায়ঃ  গাজরের যেহেতু প্রচুর পুষ্টি গুণ আছে এবং খেতেও মজা তাই ওজন কমাতে গাজরের জুড়ি নেই। সপ্তাহে কমপক্ষে ছয়টি গাজর খেলে তা স্ট্রোকের ঝুকিঁ কমায়। তাই ওজন কমাতে বেশি বেশি গাজর খান। দাঁত ও মাড়ির স্বাস্থ্য রক্ষায় গাজরের ভূমিকা আছে।
সৌন্দর্য চর্চায় গজরের রয়েছে খ্যাতি, বিশেষ করে ত্বক ও চুলের যত্নে গাজরের উপযোগিতা রয়েছে।

ত্বকের শুষ্কতা দূর করেঃ  ত্বকে পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি এবং পটাশিয়াম না থাকলে ত্বক শুষ্ক হয়ে যায়।  প্রতিদিন গাজরের জুস খেলে ত্বকে পটাশিয়ামের অভাব দূর হবে এবং ত্বকের আর্দ্রতা বজায় থাকবে। তাই ত্বকের শুষ্কতা দূর করতে নিয়মিত গাজরের জুস খান।

ত্বককে বলিরেখা থেকে রক্ষা করেঃ   একটু বয়স হলেই ত্বকে বলিরেখা দেখা দেয়। এছাড়াও ত্বক অনুজ্জ্বল ও দাগ হয়ে যায়। তাছাড়া সূর্যের আলোতেও ত্বক অনেক ক্ষতির সম্মুখীন হয়।  নিয়মিত গাজর খেলে বাহ্যিক ক্ষতি থেকে ত্বক রক্ষা পায় এবং ত্বকে সহজে বয়সের ছাপ পড়ে না। গাজর মুখের বলিরেখা, দাগ ছোপ ও পিগমেন্টেশন প্রতিরোধ করে।

ত্বক ব্রণমুক্ত রাখেঃ  গাজর খেলে ত্বকের স্বাস্থ্য ভেতর থেকে ভালো থাকে। এছাড়াও গাজরে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন ও অ্যান্টি অক্সিডেন্ট আছে যেগুলো ত্বককে ব্রণ থেকে রক্ষা করে।  এছাড়াও ব্রণ উঠলে সে জায়গাটায় নিয়মিত গাজরের রস লাগালে দাগ দূর হয়ে যায় বেশ তাড়াতাড়ি।

ত্বককে উজ্জ্বল করেঃ   গাজরের ত্বক উজ্জ্বল করার ক্ষমতা আছে। গাজরের ভিটামিন এ ও বিটা ক্যারোটিন ত্বককে উজ্জ্বল করে। গাজর বেটে এর সঙ্গে মধু মিশিয়ে নিয়মিত লাগালে ত্বক উজ্জ্বল হয়।

চুল পড়া রোধঃ  চুল পড়া রোধে গাজরে উপস্থিত ভিটামিন ও মিনারেল অতি কার্যকর। গাজর চুল পড়া কমায়, চুলকে শক্ত, মজবুত ও ঝলমলে করে। নিয়মিত গাজরের জুস খেলে চুলের গোড়া মজবুত হয়।

নতুন চুল গজায়ঃ  গাজরের ভিটামিন সি, ভিটামিন বি ও ভিটামিন ই মাথার ত্বক ও চুলের গোড়ায় পুষ্টি প্রদান করে। রক্ত চলাচল বৃদ্ধি করে ও নতুন চুল গজাতে সাহায্য করে।
 

সতর্কতাঃ
যাঁরা নিয়মিত ওষুধ সেবন করেন, তাঁদের জন্য গাজরের রস সেবনে সাবধানতা অবলম্বন করা উচিত। কারণ এতে যকৃতে toxic উপাদান তৈরি হতে পারে। তাই সকাল ও রাতে খাওয়ার পর এবং ওষুধ সেবনের দুই থেকে তিন ঘণ্টা পর গাজর খাওয়া ভালো।

জাতঃ  আমাদের দেশে গাজরের অনুমোদিত কোনো জাত নেই। বিভিন্ন জাতের গাজরের বীজ বিদেশ থেকে আমদানি করে চাষ করা হয়। এসবের মধ্যে রয়েছে- রয়েল ক্রস, কোরেল ক্রস, কিনকো সানটিনে রয়েল ও স্কারলেট নান্টেস। গ্রীষ্ম ও নাতিশীতোষ্ণ ২ ভাগে ভাগ করা যায়। কালো, লাল, বেগুনে ও হলদে বিভিন্ন রঙে পাওয়া যায়।

গ্রীষ্মকালীন জাতঃ   পুসা কেশর, পুসা মেঘালি ও অরেঞ্জ জিনো।
চাষের সময়ঃ  সমতল অঞ্চলে আগস্ট থেকে ডিসেম্বর ও পাহাড়ি এলাকায় মার্চ থেকে জুলাই মাস পর্যন্ত বোনা যায়। গাজর বীজ থেকে অঙ্গুর বের হতে ৭-১০ দিন সময় লাগে।

মাটিঃ    পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা আছে এমন- বেলে-দোআঁশ ও দোআঁশ মাটি গাজর চাষের জন্য উপযোগী।

জমি তৈরিঃ 
১.  গাজরের শেকড় মাটির বেশ ভেতরে প্রবেশ করে; তাই জমি ৮ থেকে ১০ ইঞ্চি গভীর করে চাষ          দিতে হবে।
২.  ৪ থেকে ৫টি চাষ ও মই দিয়ে জমি ভালোভাবে তৈরি করতে হবে।
৩.  জমির ঢেলা ভেঙ্গে মাটি ঝরঝরে করতে হবে।
৪.  জমিতে ৮-১০ ইঞ্চি দূরে দূরে সারি তৈরি করতে হবে।

৫.  গাজরের বীজ খুব ছোট বিধায় ছাই বা গুড়া মাটির সাথে মিশিয়ে বপন করা ভাল। এজন্য ভাল          বীজের সাথে ভাল শুকনা ছাই বা গুড়া মাটি মিশিয়ে বপন করা যেতে পারে।
সার প্রয়োগ কৃষকদের মতে গুণগত মানসম্পন্ন ভালো ফলন পেতে হলে গাজর চাষের জমিতে যতটুকু সম্ভব জৈব সার প্রয়োগ করতে হবে। মাটি পরীক্ষা করে মাটির ধরণ অনুযায়ী সার প্রয়োগ করতে হবে। তবে জৈব সার ব্যবহার করলে মাটির গুণাগুণ ও পরিবেশ উভয়ই ভালো থাকবে। বাড়িতে গবাদি পশু থাকলে সেখান থেকে গোবর সংগ্রহ করা যাবে। নিজের গবাদি পশু না থাকলে পাড়া-প্রতিবেশি যারা গবাদি পশু পালন করে তাদের কাছ থেকে গোবর সংগ্রহ করা যেতে পারে। এছাড়া ভালো ফলন পেতে হলে জমিতে আবর্জনা পচা সার ব্যবহার করা যেতে পারে। বাড়ির আশেপাশে গর্ত করে সেখানে আবর্জনা, ঝরা পাতা ইত্যাদি স্তুপ করে রেখে আবর্জনা পচা সার তৈরি করা সম্ভব।
বীজের পরিমাণঃ  একরে বীজ লাগবে দেড় থেকে ২ কেজি। বীজ বোনার ৮০-৯০ দিন পর প্রথম ফসল ওঠে। ২০×১০ সেন্টিমিটার দূরত্ব গাছ থাকবে।
পরিচর্যাঃ 
১. ঘন চারা গাছগুলো নিড়ানি দিয়ে বা চক্রবিদ্যা চালিয়ে গাছ পাতলা করে দিতে হবে। গাজর চাষে আগাছানাশক ওষুধ কার্যকরী। শুষ্ক ও বেশি আর্দ্র ২ রকম জমিই গাজর চাষের পক্ষে ক্ষতিকারক। কাজেই জমিতে পানির চাহিদা বুঝে সেচ দিতে হবে।
২. চারা গজানোর ৮-১০ দিন পর ৪ ইঞ্চি দূরে দূরে একটি করে সবল চারা রেখে বাকী চারাগুলো তুলে ফেলতে হবে।
৩. জমিতে আগাছা থাকলে পোকামাকড়, রোগ জীবাণু ও ইঁদুরের আক্রমণ বেশি হয়। তাই জমিতে আগাছা জন্মালে তা তুলে ফেলতে হবে।


সার প্রয়োগঃ   গাজর চাষে হেক্টরপ্রতি নিম্নরূপ হারে সার প্রয়োগ করতে হবে।

সার
সারেরপরিমাণ(প্রতিহেক্টরে)
১।গোবর/জৈবসার
২। ইউরিয়া
৩। টিএসপি
৪।এসওপি/এমপি
১০ টন
১৫০ কেজি
১২৫ কেজি
২০০ কেজি






সার  প্রয়োগ পদ্ধতিঃ  
১) সম্পূর্ণ গোবর ও টিএসপি এবং অর্ধেক ইউরিয়া ও এমপি সার জমি তৈরির সময় প্রয়োগ করতে হবে।
২) বাকি অর্ধেক ইউরিয়া সমান দুই কিসিৱতে চারা গজানোর ১০-১২দিন ও ৩৫-৪০ দিন পর উপরি প্রয়োগ করতে হবে।
৩) বাকি অর্ধেক এমপি সার চারা গজানোর ৩৫-৪০ দিন পর উপরি প্রয়োগ করতে হবে।


অথবা
মিশ্র সার প্রয়োগঃ   মিশ্র সার প্রয়োগ করলে নিম্নরূপ হারে প্রয়োগ করতে হবে।


সার
সারেরপরিমাণ(প্রতিহেক্টরে)
১।গোবর
২।এসপিকেএসমিশ্রসার (১২-১৫-২০-৬)
৩। টিএসপি
৪।এসওপি/এমপি
৫-৭ টন
২৫০ কেজি
৪০-৫০ কেজি
৫০-৬০ কেজি










অথবা
মাটি পরীক্ষা করেঃ   মাটি পরীক্ষা করে সার প্রয়োগ করলে নিম্নরূপ হারে প্রয়োগ করতে হবে।

সার
সুপারিশ
(কেজি
মাটির
উর্বরতামান
N
P
K
S
জৈব সার/গোবর
(টন/হেঃ)
পরিমিত
মধ্যম
নিম্ন
অতিনিম্ন
০-৪০
৪১-৪০
৮১-১২০
১২১-১৬০
০-১৩
১৪-২৬
২৭-৩৯
৪০-৫২
০-৩০
৩১-৬০
৬১-৯০
৯১-১২০
০-৮
৯-১৬
১৭-২৪
২৫-৩২
১.৫
৩.০
৪.৫
৬.০





  


পরিচর্যাঃ  মাটিতে রস কম হলে পানি সেচ দিতে হবে। সেচের পর জো এলে নিড়ানি দিয়ে চটা ভেঙ্গে মাটি আলগা করে দিতে হবে। আগাছা জন্মালে দমন করতে হবে।
রোগ বালাই গাজরের হলুদ ভাইরাস রোগঃ  গাজরে খুব একটা রোগ বালাই ও পোকামাকড় দেখা যায় না। তবে অনেক সময় লীফ হপার পোকার মাধ্যমে গাজরে হলুদ ভাইরাস রোগ দেখা যায়। এর আক্রমণে গাজরের ছোট বা কচি পাতাগুলো হলুদ হয়ে কুঁকড়িয়ে যায়। পাতার পাশের ডগাগুলো হলুদ ও বিবর্ণ হয়ে যায়।


জাবপোকাঃ  এই পোকা গাজরের পাতা ও গাছের কচি অংশের রস চুষে খেয়ে ফসলের অনেক ক্ষতি করে।
পোকা দমনঃ  জাব পোকা
১) এ পোকা ও গাছের কচি অংশের রস শুষে খেয়ে গাছের সমূহ ৰতি করে।
২) পোকা দমনের জন্য ২.৫ মিলি সাইফানন বা সেমটঙ ৫ ইসি ১ লিটার পানির সাথে মিশিয়ে স্প্রে  করতে হবে।
৩) অথবা রগোর এল -৪০, ক্লাসিক ২০ ইসি, টিডফেট ৭৫ এসপি, টিডো ২০ এসএল ইত্যাদি কীটনাশকের যে কোন একটি অনুমোদিত মাত্রায় ব্যবহার করা যেতে পারে।
৪) অথবা, বাইকাও-১ প্রয়োগ করতে হবে।

পচারোগঃ   মূল ও পাতার গোড়ায় ব্যাক্টেরিয়াজনিত পচন রোগ দেখা যায়। নাইট্রোজেন সার অতিরিক্ত প্রয়োগে এ রোগ বেড়ে যায়।
প্রতিকার স্থানীয়ভাবে উৎপাদিত জৈব কীটনাশক ব্যবহার করা যেতে পারে। এতে পোকা দমন না হলে স্থানীয় কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের ইউনিয়ন পর্যায়ে কৃষি কর্মকর্তা অথবা উপজেলা কৃষি অফিসে পরামর্শের জন্য যোগাযোগ করা যেতে পারে।
ফসল সংগ্রহঃ   বীজ বপনের ৭০ থেকে ৮০ দিন বা ৩ মাসের মধ্যে গাজর সংগ্রহের উপযোগী হয়। তবে ভালো ফলন পেতে হলে ১০০ দিনের আগে ফলস তোলা উচিত নয়। পুষ্ট ও ভালোমানের গাজর পেতে হলে বীজ বোনার ১০০ থেকে ১২৫ দিনের মধ্যে ফসল সংগ্রহ করতে হবে।
ফলনঃ   হেক্টরপ্রতি গাজরের ফলন ২০-২৫ টন। 






কোন মন্তব্য নেই: