বৃহস্পতিবার, ১৪ মার্চ, ২০১৩

নিশ্চয়ই আল্লাহ্‌ কাউকে ঠিকাদারি দেন নাই



এতদিন শুনেছি নাস্তিক , এখন শুনছি মুরতাদ ।

নাস্তিক, কাফের , মুরতাদ এর সাথে প্রজন্ম চত্বরের কি সম্পর্ক । যারা কথায় কথায় একজন মুসলমানকে নাস্তিক-মুরতাদ বানিয়ে দিচ্ছেন তিনি বা উনারা কি ?
কেউ নাস্তিক না মুরতাদ তা আল্লাহ্‌ তালাই ভাল জানেন । এ ব্যাপারে নিশ্চয়ই আল্লাহ্‌ কাউকে ঠিকাদারি দেন নাই ।

গত কিছুদিন যাবত জামাত- শিবির প্রজন্ম চত্বর সহ যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের পক্ষের জনতাকে নাস্তিক বলছিল । এখন হেফাজতে ইসলাম আবার যোগ করল মুরতাদ ।
হেফাজতে ইসলামের মৌলানাদের বলছি আপনারা কিভাবে বুঝলেন আপনারা আল্লাহ্‌র মুমেন বান্দা আর বাকি সবাই নাস্তিক-মুরতাদ । আপনারা এই নাস্তিক-মুরতাদ নির্ধারণের মাপকাঠি কোথায় পেলেন । কে আপনাদের নিযুক্ত করেছে এই সার্টিফিকেট প্রদানের জন্য । আপনারা যে মুমেন, এর সার্টিফিকেট কোথা থেকে পেলেন ।

আল্লাহ্‌ তায়ালা অহংকারীকে ঘৃণা করেন ও অহংকারী নিশ্চয়ই জাহান্নামে পতিত হইবে । আপনাদের অনেক অহংকার হচ্ছে ইসলামের অল্প কিছু জানার ফলে ।
আপনারা নিজেদের আলেম মনে করেন , এটা কি জানেন যে, কেয়ামতের দিন বেশি সাজা পাবেন আলেমরা অহংকার ও অন্যকে সঠিক দ্বীনের কথা না বলায় ।
হেফাজতে ইসলাম এর আলেমরা কি দেখছেন না এই সমাজের কিছু ভণ্ড পীর বা জামাত- শিবিরের মত ভুল ব্যাখ্যার ইসলাম পন্থীদের । তাদের ব্যাপারে আপনাদের কোন অবস্থান তো দেখছি না !

প্রজন্ম চত্বরের সাথে ইসলামের কি সম্পর্ক । প্রজন্ম চত্বর তো ধর্মের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করে নাই । প্রজন্ম চত্বর থেকে কখনই ইসলাম নিয়ে বা ইসলামের বিপক্ষে কোন কথা বলে নাই । প্রজন্ম চত্বর সহ সারা দেশের মানুষ যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের দাবিতে ও জামাত- শিবিরের রাজনীতি নিষিদ্ধের দাবিতে কথা বলছে । কারন, এই জামাত- শিবির ইসলামের নামে মুসলমানদের ক্ষতি করছে, রাষ্ট্রের ক্ষতি করছে ।  যে জামাতিরা চাঁদে তাদের চেহারা দেখা যাওয়ার মত মিথ্যা কথা বলে ইসলামের ক্ষতি করছে তাদের বিরুদ্ধে তো আপনাদের কোন কথা শুনি নাই ।

আপনাদের মত কিছু আলেম কাজী নজরুল ইসলামকে, মীর মুসারফ হুসেন, রফিক আজাদ সহ অসংখ্য কবি সাহিত্যিক কে নাস্তিক-মুরতাদ বলেছেন । আপনাদের স্বার্থের বাইরে বললেই আপনারা নাস্তিক-মুরতাদ বলেন । এটা আপনাদের এখন অভ্যাস হয়ে গেছে ।

শুনেন, আমাদের নবী হযরত মোহাম্মাদ (সঃ) বিধর্মী-কাফেরদের সঙ্গে অনেক কথা বলেছেন । কিন্তূ আপনারা কয়েকজন মুসলমানের সঙ্গে দেখা করেন নাই । এতই আপনাদের অহংকার !! অহংকারী ইসলামের শত্রু ।
     
আপনারা কি খুব বেশি টাকা খেয়ে ফেলেছেন জামাত- শিবিরের কাছ থেকে !

৭১ এ যখন এই জামাত- শিবির মানুষ খুন, ধর্ষণ, লুট, অগ্নিসংযোগ করছিল তখন আপনারা কি করছিলেন ? নাকি আপনারাও এই খুন, ধর্ষণ, লুট, অগ্নিসংযোগকে সমর্থন দিয়েছিলেন এবং এখন আবার সমর্থন দিচ্ছেন ।        

1 টি মন্তব্য:

banglamoon বলেছেন...

হাজার হাজার মানুষ খুনি ও ধর্ষকদের বিচার দাবি করাতে তাদেরকে নাস্তিক বলে গালি দেওয়া ইসলাম বিরোধী। যারা এদেরকে নাস্তিক বলে মিথ্যা অপবাদ দিচ্ছে ইসলামের বিধান অনুযায়ি তরাই নাস্তিক বলে বিবেচিত হব। (পড়ুন এবং share করু)

قال المستبان ماقالا فعلى البادى مالم يعتد المظلوم- رواه مسلم
: হযরত আবু যার (রা) থেকে বর্নিত, রাসুল সা. বলেছেন, যে ব্যাক্তি কাউকে কাফের বলে ডাকে অথবা আল্লাহর শত্রু বলে, অথচ (যাকে কাফের ও আল্লাহ তাআলার শত্রু বলা হচ্ছে) সে তা নয়, তখন তার কথা নিজের দিকে ফিরবে। (বুখারী ও মুসলিম , মিশকাতঃ ৪৬০৬ অধ্যায়ঃজিহ্বার সংযম,গীবত...গাল-মন্দ প্রসঙ্গে।)
হযরত আব্দুল্লাহ বিন ওমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ (সাঃ) ইরশাদ করেছেন-যে ব্যক্তি তার অপর কোন ভাইকে কাফের বলে, তাহলে তা উভয়ের যেকোন একজনের দিকে ফিরবে। যদি সে যেমন বলেছে বাস্তবে তা’ই হয়, তাহলেতো ঠিক আছে, নতুবা উক্ত বিষয়টি যে বলেছে তার দিকেই ফিরে আসবে। (সহীহ মুসলিম, হাদীস নং-২২৫, সহীহ ইবনে হিব্বান, হাদীস নং-২৫০, মুসনাদে আহমাদ, হাদীস নং-৫০৩৫, মুসনাদে আবী আওয়ানা, হাদীস নং-৫৪, শুয়াবুল ঈমান, হাদীস নং-৬২৩৭)।