শুক্রবার, ১৫ মার্চ, ২০১৩

হেফাজতে ইসলাম বাধ্য করবেন না আঙ্গুল বাঁকা করতে



ওলামা মাসায়েখ এর আলেমরা বললেন “জামাত শুধু দেশেরই শত্রু না ওরা ইসলামেরও শত্রু” ।

ঘোষণা দিলেন জামাত- শিবির নিষিদ্ধ করার জন্য মতিঝিল শাপলা চত্বরে মহাসমাবেশের, এই সমাবেশে সকল ইসলাম প্রেমি ও ইসলামের আদর্শের সকল দল ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনার ও মুক্তিযোদ্ধাদের উপস্তিত হয়ে  সামাবেশ সফল করার আহ্বান জানান ।

জামাত- শিবির তাদের রাজনৈতিক গুরু মওদুদিকে হযরত মোহাম্মাদ (সঃ) এর সঙ্গে তুলনা করেছে __ নাওজুবিল্লাহ ।

দেশের সর্ব স্তরের মানুষ যখন জামাত- শিবিরকে নিষিদ্ধ করার দাবিতে ঐক্যবদ্ধ, তখন হেফাজতে ইসলাম নামের একটি দল প্রজন্ম চত্বর তথা সর্ব স্তরের মানুষের বিপক্ষে অবস্থান নিয়ে জামাত- শিবিরের পক্ষ নিয়েছে ।

ইসলামকে হেফাজত করার জন্য সবাইকে বাদ দিয়ে হেফাজতে ইসলামকে এই দায়িত্বটা কে দিল আজ আমার জানতে বড় সাধ হচ্ছে । হেফাজতে ইসলাম কি ইসলামের হেফাজত করছেন না জামাত- শিবিরকে হেফাজত করছেন তা বোধ করি বুঝতে আর কারো বাকি নাই । আমি যতদূর জানি জামাত- শিবিরের সঙ্গে হেফাজতে ইসলামের বিরোধিতা রয়েছে অনেক আগে থেকেই । কিন্তূ হটাত ১৩ই মার্চ থেকে তাদের এই সখ্যতার ব্যাপারটি সন্দেহ জনক ।

হেফাজতে ইসলাম জানলেন কিভাবে ব্লগাররা নাস্তিক বা মুরতাদ । আমার জানা মতে ইসলামের আদর্শের অনেক আলেম ও বুজুর্গ ব্লগে লেখালেখি করেন । এ প্রসঙ্গে  ফিরে যেতে হয় আমাকে ব্রিটিশ শাসনামলের সময় । তখন এই হেফাজতে ইসলামের মত কিছু বিভ্রান্ত আলেম ইংরেজি শিক্ষা গ্রহন করলে কাফের হয়ে যাবে বলে ফতোয়া জারি করেছিল । একি সঙ্গে ফারসি, উর্দু জানলে বেহেস্ত নসীব হবে প্রচারনা চালান । তার মানে দাড়ায় আমেরিকা, ইউরোপ এর মুসলমানরা তখন কাফের ছিল , কারন তাদের অনেকেরই ভাষা ছিল ইংরেজি এবং উনারা উর্দু ও ফারসি ভাষা জানতেন না ।

ঠিক তেমনি এখনকার প্রজন্ম চত্বর বা জনতার মঞ্চের বিরুদ্ধে তাদের অবস্থান ।
বাংলাদেশে প্রায় ১৫ কোটি মুসলমান আছেন । এর মধ্যে জামাতে ইসলাম ও হেফাজতে ইসলাম মিলে প্রায় ১০ লক্ষ মুসলমান আছে । বাকি মুসলমানরা কি তাহলে সব নাস্তিক-মুরতাদ ?

আমার ধারনা জামাতে ইসলাম-বিএনপি-হেফাজতে ইসলাম একি বৃন্তে ৩ টি ধূতরা ফুল । ধূতরা ফুল খেলে মানুষ যেমন পাগল বা বেহুস হয়ে যায় , তেমনি এই ৩ টি দল এখন বেহুস । বিএনপি আর হেফাজতে ইসলাম বেহুস জামাতের অর্থ পাওয়ার জন্য । জামাত- শিবির বেহুস তাদের কুলাঙ্গারদের বাচাবার জন্য ।

জামাত- শিবির জানে বাংলার মানুষ জাগলে বিজয় না নিয়ে ঘড়ে ফিরে না । তাই তারা অস্থির । একের পর এক মিথ্যা প্রচারানা চালিয়েও সাময়িক ফায়দা ছাড়া তেমন কোন কিছু করতে পারছে না । তাই এখন ভর করেছে বিএনপি ও  হেফাজতে ইসলাম এর ঘাড়ে । 

হেফাজতে ইসলামকে জানিয়ে রাখছি , প্রজন্ম চত্বরের আন্দোলন অহিংস আন্দোলন । বাধ্য করবেন না সহিংস হতে । পালাবার পথ খুজে পাবেন না । ইসলাম আপনাদের একার সম্পত্তি না । সারা বাংলার মুসলমানরা জেগে উঠেছে । তারা জানে কোনটা ইসলামের সঠিক ও সুন্দর পথ ।

সরল পথে চলুন , সঠিক কথা বলুন, বাঁকা পথে হাটা বন্ধ করুন । আমাদের সাধারন জনগণকে বাধ্য করবেন না আঙ্গুল বাঁকা করতে ।  

1 টি মন্তব্য:

banglamoon বলেছেন...

হাজার হাজার মানুষ খুনি ও ধর্ষকদের বিচার দাবি করাতে তাদেরকে নাস্তিক বলে গালি দেওয়া ইসলাম বিরোধী। যারা এদেরকে নাস্তিক বলে মিথ্যা অপবাদ দিচ্ছে ইসলামের বিধান অনুযায়ি তরাই নাস্তিক বলে বিবেচিত হব। (পড়ুন এবং share করু)

قال المستبان ماقالا فعلى البادى مالم يعتد المظلوم- رواه مسلم
: হযরত আবু যার (রা) থেকে বর্নিত, রাসুল সা. বলেছেন, যে ব্যাক্তি কাউকে কাফের বলে ডাকে অথবা আল্লাহর শত্রু বলে, অথচ (যাকে কাফের ও আল্লাহ তাআলার শত্রু বলা হচ্ছে) সে তা নয়, তখন তার কথা নিজের দিকে ফিরবে। (বুখারী ও মুসলিম , মিশকাতঃ ৪৬০৬ অধ্যায়ঃজিহ্বার সংযম,গীবত...গাল-মন্দ প্রসঙ্গে।)
হযরত আব্দুল্লাহ বিন ওমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ (সাঃ) ইরশাদ করেছেন-যে ব্যক্তি তার অপর কোন ভাইকে কাফের বলে, তাহলে তা উভয়ের যেকোন একজনের দিকে ফিরবে। যদি সে যেমন বলেছে বাস্তবে তা’ই হয়, তাহলেতো ঠিক আছে, নতুবা উক্ত বিষয়টি যে বলেছে তার দিকেই ফিরে আসবে। (সহীহ মুসলিম, হাদীস নং-২২৫, সহীহ ইবনে হিব্বান, হাদীস নং-২৫০, মুসনাদে আহমাদ, হাদীস নং-৫০৩৫, মুসনাদে আবী আওয়ানা, হাদীস নং-৫৪, শুয়াবুল ঈমান, হাদীস নং-৬২৩৭)।