শুক্রবার, ১৫ জানুয়ারী, ২০১৬

করমচা ফলের পুষ্টিমান ও উপকারিতা






করমচা, টক জাতীয় গ্রীষ্মকালীন ফলের নাম।
এর বৈজ্ঞানিক নাম ক্যারিস ক্যারোন্ডাম। কনটোরটি বিভাগে অ্যাপোসাইনেসি শ্রেণীর অন্তর্ভুক্ত করমচা ফলের আদি নিবাস ক্যারোনডাস প্রজাতির ভারতবর্ষ, গ্রান্ডিফ্লোরা প্রজাতির দক্ষিণ আফ্রিকা এবং এডুইলিস প্রজাতির মিসরে। তবে ভারতবর্ষে এসব প্রজাতির করমচা দীর্ঘদিন ধরে চাষ হচ্ছে।



অ্যাপোসাইনেসি শ্রেণীতে ১৫৫ বর্ণের প্রায়  এক হাজার গোত্রের করমচা গাছ দেখা যায়। করমচা গাছ বেশ ঝোপতলা ধরনের শক্ত জাতের  কাঁটাওয়ালা গুল্ম। বড় সাদা ও ফিকে গোলাপি রঙের সুমিষ্ট গন্ধযুক্ত করমচা ফুল দেখতে কিছুটা কুন্ধ ফুলের মতো। এর ফলের রঙ কাঁচায় গাঢ় সবুজ, পাকায় লাল হয়। ফেব্রুয়ারি  মাসে গাছে ফুল আসে এবং ফল ধরে এপ্রিল-মে মাসে। বর্ষায় ফল পাকে। করমচা চাষে জমি উঁচু হলেই ভালো, তবে নিচু জমিতেও চাষ করা চলে যদি পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা ভালো থাকে। করমচা খুব শক্ত ধরনের গাছ এবং দেহে আঠালো রস থাকায় রোগ ও পোকায় সহজে আক্রমণ করতে পারে না।

 ইংরেজিতে করমচাকে Bengal currant বা Christ's thorn বলা হয়। Carissa গণভুক্ত কাঁটাময় গুল্মজাতীয় করমচা উদ্ভিদটি এশিয়া, আফ্রিকা এবং অস্ট্রেলিয়া মহাদেশে পাওয়া যায়। কাঁচা ফল সবুজ, পরিণত অবস্থায় যা ম্যাজেন্টা লাল-রং ধারন করে। অত্যন্ত টক স্বাদের এই ফলটি খাওয়া যায়, যদিও এর গাছ বিষাক্ত। করমচার ঝোপ দেখতে সুন্দর। টক স্বাদের ফল করমচা।


করমচা
(শ্রেণীবিহীন)
(শ্রেণীবিহীন)
(শ্রেণীবিহীন)
C. carandas
Carissa carandas






করমচার পুষ্টিমানঃ
প্রতি ১০০ গ্রাম করমচায় রয়েছেঃ

উপাদান
পরিমাণ
শর্করা বা এনার্জি
৬২ কিলো ক্যালোরি
কার্বোহাইড্রেট
১৪ গ্রাম
প্রোটিন
০.৫ গ্রাম
ভিটামিন
৪০ আই ইউ
ভিটামিন সি
৩৮ মিলিগ্রাম
রিবোফ্লেভিন
০.১ মিলিগ্রাম
নিয়াসিন
০.২ মিলিগ্রাম
আয়রন
১.৩ মিলিগ্রাম
ম্যাগনেসিয়াম
১৬ মিলিগ্রাম
পটাশিয়াম
২৬০ মিলিগ্রাম
কপার
০.২ মিলিগ্রাম
জলীয় রস
১৮.২ ভাগ
খনিজ
৯.৬ ভাগ
চর্বি
৯.৬ ভাগ




করমচার উপকারিতাঃ

১। করমচায় চর্বি এবং ক্ষতিকর কোলেস্টেরল থাকে না।
২। ভিটামিন সি-তে ভরপুর করমচা মুখে রুচি ফিরিয়ে দেয়।

৩। করমচা রক্ত চলাচল স্বাভাবিক রেখে হৃৎপিণ্ডের সুরক্ষা দেয়।
৪। শরীরের অভ্যন্তরীণ রক্তক্ষরণ কমাতেও সাহায্য করে।
৫। যকৃত ও কিডনির রোগ প্রতিরোধে আছে বিশেষ ভূমিকা।
৬। মৌসুমি সর্দি-জ্বর, কাশিতে করমচা খান বেশি করে।
৭। করমচা কখনো কৃমিনাশক হিসেবে ওষুধের বিকল্প হিসেবে কাজ করে।
৮। এ ছাড়া পেটের নানা অসুখের দাওয়াই করমচা।
৯। শরীরের ক্লান্তি দূর করে করমচা শরীরকে চাঙা রাখে।

১০। বাতরোগ কিংবা ব্যথাজনিত জ্বর নিরাময়ে করমচা খুব উপকারী।
১১।  করমচাতে থাকা ভিটামিন এ চোখের জন্য খুবই উপকারী।
১২। এটি ত্বক ভালো রাখে ও রোগ প্রতিরোধে কার্যকর।
১৩। এতে থাকা ভিটামিন সি দাঁত ও মাড়ির সুরক্ষা দেয়।

১৪। করমচা গাছের মূলে রয়েছে হৃদরোগ নিরাময়ে উপকারী ক্যারিসোন, বিটাস্টেরল, ট্রাইটারপিন, ক্যারিনডোনা ও লিগনাম।  

১৫। করমচা ওজন কমাতে সাহায্য করে ।

১৬। করমচার কার্বোহাইড্রেট কর্মক্ষমতা বৃদ্ধি করে।

১৭। করমচার পটাশিয়াম শরীরের দূষণ বহিষ্কারকরণে সহায়তা করে।

১৮।  ডায়াবেটিস ও হার্টের রোগীদের জন্য এ ফল খুব উপকারী।  

১৯। করমচা স্কাভি, দাঁত ও মাঢ়ির নানা রোগ প্রতিরোধে সাহায্য করে।

২০। করমচা গাছের পাতা সেদ্ধ করে সেই পানি পান করলে কালাজ্বর দ্রুত নিরাময় হয়।   









1 টি মন্তব্য:

Unknown বলেছেন...

করমচা খুব মুখোরুচক টক ফল।