উদ্ভিদ বিজ্ঞানী মালানের
মতে ভারতবর্ষ ও চীন কলার জন্মভুমি । কিন্তু আরেক উদ্ভিদ বিজ্ঞানী হিল পাক-ভারত ও
মালয়কে কলার উৎপত্তিস্থল বিবেচনা করেন। সাধারণত উষ্ণ জলবায়ু সম্পন্ন দেশসমূহে কলা ভাল জন্মে। তবে দক্ষিণ-পূর্ব
এশিয়াই কলার উৎপত্তিস্থল হিসাবে বিবেচিত উদ্ভিদবিজ্ঞানীদের কাছে।
বাংলাদেশে প্রায় ১৯টি
জাতের কলা পাওয়া যায় । পার্বত্য এলাকায় বাংলা কলা, বন কলা, মামা কলা ইত্যাদি নামেও কলার কিছু বুনো জাত দেখা যায়।
ক্রমশ কলার জাতের সংখ্যা বাড়ছে। গাছের বৈশিষ্ট্য অনুসারে বাংলাদেশের বিভিন্ন জাতের কলা গাছকে দুটি ভাগে ভাগ
করা হয়েছে- লম্বা জাতের গাছ ও খাটো জাতের গাছ।
পাকা অবস্থায় খাওয়ার জন্য
কলার জাত ৪ প্রকার যথা:
১। সম্পুর্ন বীজমুক্ত কলা: যেমন-সবরি, অমৃতসাগর, অগ্নিশ্বর, দুধসর,
দুধসাগর প্রভৃতি ।
২। দু-একটি বীজযুক্ত কলা: যেমন-চাম্পা, চিনিচাম্পা, কবরী, চন্দন কবরী, জাবকাঠালী ইত্যাদি ।
৩। বীজযুক্ত
কলা: এটেকলা যেমন-বতুর আইটা, গোমা, সাংগী আইটা ইত্যাদি ।
৪। আনাজী
কলাসমুহ: যেমন-ভেড়ার ভোগ, চোয়াল
পউশ, বর ভাগনে, বেহুলা, মন্দিরা,
বিয়েরবাতি প্রভৃতি।
কলায় থাকে তিনটি প্রাকৃতিক চিনি – সুক্রোজ, ফ্রুক্টোজ এবং গ্লুকোজ, আরও থাকে প্রচুর ফাইবার যা দেয় শরীরকে যোগান দেয় তাৎক্ষণিক শক্তি। ৯০
মিনিটের কষ্টসাধ্য ব্যায়ামের জন্য শক্তি যোগাতে দুটো কলাই যথেষ্ট! এজন্যই পৃথিবীর
বড় বড় এথলিটদের কাছে কলাই হলো ১ নম্বর ফল!
আপেলের তুলনায় কলাতে আছে দ্বিগুণ কার্বোহাইড্রেট, তিনগুন
ফসফরাস আছে, পাঁচগুণের চেয়ে বেশী ভিটামিন এ ও আয়রন আছে,
দ্বিগুণ পরিমাণে অন্যান্য ভিটামিন ও খনিজ আছে।
MIND এর একটি সাম্প্রতিক গবেষণায় দেখা গেছে যারা
বিষণ্ণতায় ভোগেন তাদের কে কলা খাওয়ানো হলে কিছুক্ষণের মধ্যেই বিষন্নতা কিছুটা কমে
যায়। কলায় আছে ট্রাইপটোফান নামের এক ধরনের প্রোটিন যাকে শরীর সেরোটনিনে পরিণত করে।
সেরোটনিন শরীরকে শিথিল করে এবং মন ভালো করে দেয়। তাই সকালের নাস্তায় কলা খেলে
বিষন্নতা দূর হবে এবং মন ভালো থাকবে।
পুষ্টিমানঃ প্রতি ১০০ গ্রাম কলায় আছে ১১৬ ক্যালোরি, ক্যালসিয়াম ৮৫ মি.গ্রা., আয়রণ ০.৬ মি.গ্রা., অল্প ভিটামিন-সি, ভিটামিন বি-কমপ্লেক্স ৮ মি.গ্রা., ফসফরাস ৫০
মি.গ্রা., পানি ৭০.১%, প্রোটিন
১.২%, ফ্যাট/চর্বি ০.৩%, খনিজ
লবণ ০.৮%, আঁশ ০.৪%, শর্করা
৭.২%।
কলার উপকারিতাঃ
১। অবসাদঃ অবসাদে
ভোগা কিছু মানুষের ওপর সমীক্ষা চালিয়ে দেখা গিয়েছে কলা খেলে ভাল বোধ করেন তারা।
কলার মধ্যে থাকা ট্রিপটোফ্যান প্রোটিন মানুষের শরীরে পরিণত করে সিরোটোনিন হরমোনে।
সিরোটোনিন হরমোন অফ হ্যাপিনেস নামে পরিচিত। শরীরে এই হরমোনের মাত্রা বাড়লে মুড
ভাল হয়ে রিল্যাক্স বোধ করে মানুষ। মুড অফ একটি অতি পরিচিত প্রি-মেন্সট্রয়াল
সিনড্রোম। কলার মধ্যে থাকা ভিটামিন বি৬ শরীরে গ্লুকোজের সামঞ্জস্য বজায় রেখে মুড
ঠিক রাখতে সাহায্য করে।
২। ডিপ্রেশানঃ কলায় থাকে ট্রিপটোফ্যান
নামক প্রোটীন, যা শরীরে গিয়ে সেরোটোনিনে রূপান্তরিত হয়। সেরোটোনিন আপনার মনকে রিলাক্স
করে, আপনার মুড ভাল করে তোলে, আপনাকে
সুখীবোধ করতে সাহায্য করে।
৩। প্রিমেন্সট্রুয়াল সিন্ড্রোম(পিএমএস) নারীদের জন্যঃ
পিল খাওয়া বাদ দিন! কলা খান। ভিটামিন বি৬ রক্তে গ্লুকোজের পরিমাণ নিয়ন্ত্রণ করে, যা আপনার মন মানসিকতা চাঙ্গা করে
তুলবে।
৫। বুকজ্বলাঃ কলায় প্রাকৃতিক এন্টাসিড
থাকে। বুক জ্বললে একটা কলা খান।
৬। মাথা গোলানোঃ সকাল ও দুপুরের মাঝে
সকাল ১০টায় একটা কলা খেতে পারেন। আপনার রক্তে সুগার লেভেল ঠিক রাখবে এবং মাথা
গোলানো থেমে যাবে।
৭। অ্যানিমিয়াঃ কলার
মধ্যে থাকা প্রচুর পরিমান আয়রন রক্তে হিমোগ্লোবিন উত্পাদনে সাহায্য করে। ফলে
অ্যামিনিয়ার সম্ভবনা কমে। এমনকী, অ্যামিনিয়া সারাতেও সাহায্য করে কলা।
৮। রক্তচাপঃ কলার
মধ্যে পটাশিয়ামের মাত্রা বেশি অথচ নুনের মাত্রা কম থাকায় উচ্চ রক্তচাপ জনিত সমস্যা
রুখতে পারে কলা। ইউ ফুড ও ড্রাগ অ্যাডমিনিস্ট্রেশন কলার এই গুণের কথা মাথায় রেখে
স্ট্রোক, উচ্চ
রক্তচাপের ওষুধে কলার ব্যবহার সুপারিশ করেছে।
৯। মস্তিষ্কঃ টানা
১ বছর ধরে পরীক্ষা চালানো হয়েছিল ইংল্যান্ডের টুইকেনহ্যাম স্কুলের ২০০ জন পড়ুয়ার
ওপর। পরীক্ষার আগে টানা ব্রেকফাস্ট,
ব্রাঞ্চ ও লাঞ্চে কলা খাওয়ানো হয় তাদের। দেখা গিয়েছিল কলার মধ্যে
থাকা পটাশিয়াম তাদের মনসংযোগ বাড়ানোর ফলে অন্যদের থেকে পরীক্ষায় ভাল করেছিলেন ওই
২০০ জন পড়ুয়া।
১০। উত্তেজনা/স্নায়ুচাপঃ ভিটামিন বি আপনার স্নায়ুকে
শান্ত করে তুলতে সাহায্য করে। পরীক্ষার আগে একটা কলা খান।
১১। অতিরিক্ত ওজনঃ অনেকে মন খারাপ
থাকলে/কাজের অতিরিক্ত চাপ থাকলে নিজের অজান্তেই জাংক ফুড খেতে থাকেন। এরকম চাপে
থাকলে আমাদের ব্লাড সুগার লেভেল ঠিক রাখা প্রয়োজন, যা প্রতি দুই ঘন্টায় একটি কলা খেলে ঠিক রাখা সম্ভব।
১২। সিজনাল এফেক্টিভ ডিসঅর্ডারঃ এই রোগের
ভুক্তভোগীরা কলা খেতে পারেন। কারণ এতে আছে মুড এনহ্যান্সার প্রোটিন ট্রিপটোফ্যান।
১৩। কনসটিপেশনঃ কলার
মধ্যে প্রচুর পরিমান ফাইবার থাকায় পেট পরিষ্কার রাখতে কলা অপরিহার্য্য।
১৪। হ্যাংওভারঃ আগের রাতের অতিরিক্ত মদ্যপানের হ্যাংওভার কাটাতে
বানান মিল্কশেকের কোনও তুলনা নেই। সঙ্গে যদি থাকে ১ চামচ মধু। কলা শরীরের অস্বস্তি
কমায়, দুধ পেট ঠান্ডা করে ও
মধু বজায় রাখে রক্তে শর্করার মাত্রা। ফলে অম্বলের হাত থেকেও রেহাই পায় শরীর।
১৫। কলায় প্রচুর পরিমাণে
ক্যালোরী আছে। তাই মাত্র একটি কলা খেলেই অনেক সময় পর্যন্ত সেটা শরীরে শক্তি যোগায়।
১৬। অতিরিক্ত জ্বর কিংবা হঠাৎ ওযন কমে গেলে শরীর
দুর্বল হয়ে যায়। এসময়ে কলা খেলে শরীরে শক্তি সঞ্চার হবে এবং তাড়াতাড়ি দুর্বলতা
কেটে যায়।
১৭। কলায় প্রচুর পরিমাণে পটাশিয়াম আছে। তাই হাড়ের
স্বাস্থ্যের জন্য কলা উপকারী।
১৮। কলা অ্যান্টাসিডের মত কাজ করে। অর্থাৎ কলা হজমে
সহায়তা করে এবং পেট ফাঁপা সমস্যা সমাধান করে। এছাড়াও কলা পাকস্থলীতে ক্ষতিকর
ব্যাকটেরিয়ার বৃদ্ধি রোধ করতে সহায়তা করে।
১৯। কলায় প্রচুর আয়রণ আছে যা রক্তে হিমোগ্লোবিন
উৎপাদনে সাহায্য করে। ফলে যারা রক্ত শূন্যতায় ভুগছেন তাদের জন্য কলা খুবই উপকারী।
২০। কলা বুক জ্বালা পোড়া
কমায় এবং পাকস্থলীতে ক্ষতিকর এসিড হ’তে দেয় না।
বুক জ্বালাপোড়া সমস্যায় প্রতিদিন ভরা পেটে একটি করে কলা খেলে উপকার হবে।
২১। ডায়রিয়া হ’লে শরীরে পানি শূন্য হয়ে যায় এবং শরীর থেকে প্রয়োজনীয়
পটাশিয়াম বের হয়ে যায়। এসময়ে কলা খেলে শরীরে পটাশিয়ামের অভাব দূর হবে এবং হার্টের
কার্যক্রম স্বাভাবিক থাকবে।
২২। কলায় ফ্যাটি এসিডের চেইন আছে, যা ত্বকের কোষের জন্য ভালো এবং
শরীরকে সুস্থ রাখতে সহায়তা করে। এছাড়াও এই ফ্যাটি এসিড চেইন পুষ্টি গ্রহণ করতেও
সাহায্য করে।
২৩। মর্নিং সিকনেসঃ কাজের চাপ,
মানসিক চাপে অনেক সময়ই সকালে ঘুম থেকে উঠে অসুস্থ বোধ করি আমরা।
রক্তে শর্করার মাত্রা কম থাকায় কম থাকে এনার্জির মাত্রাও। এই সময় কলা বজায় রাখতে
রক্তে শর্করার সঠিক মাত্রা।
২৪। মশার কামড়ঃ মশার কামড়ে ফুলে, লাল হয়ে ওঠা ত্বকের যত্ন নিতে ক্রিম বা অ্যান্টিসেপটিক
ব্যবহার করার আগে কলার খোসা ঘষে দেখুন ত্বকের ফুলে ওঠা অংশে।
২৫। স্নায়ুঃ কলায়
থাকে প্রচুর পরিমানে ভিটামিন বি যা স্নায়ুকে শান্ত করে। মানসিক চাপ কাটাতে ফ্যাটি
ফুডের থেকে বেশি প্রয়োজনীয় কলা। কার্বোহাইড্রেটে পরিপূর্ণ হওয়ায় কলা রক্তে শর্করার
মাত্রা ঠিক রেখে স্নায়বিক চাপ কমাতে সাহায্য করে।
২৬। ধূমপানঃ ভিটামিন বি৬, বি১২, পটাশিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম শরীর থেকে নিকোটিনের প্রভাব দূর করতে সাহায্য করে। সুতরাং,
ধূমপান ছেড়ে দেবার জন্য কলা’র জুড়ি নেই।
২৭। স্ট্রোকঃ গবেষণা অনুযায়ী, প্রতিদিনকার খাদ্যাভাসে কলা রাখলে
৪০% স্ট্রোকের ঝুঁকি কমে যায়!
২৮। স্ট্রেসঃ পটাশিয়াম আপনার হার্টবিট
ঠিক রাখে। অক্সিজেন মস্তিষ্কে নিয়মিত পৌঁছে দেয়, শরীরে পানির ভারসাম্য বজায় রাখে। কলায় যা প্রচুর আছে।
২৯। আঁচিলঃ প্রাকৃতিক ভাবে আচিল থেকে
মুক্তি পাওয়ার এটা একটি প্রাচীন উপায়। একটি পাকাকলা নিন। আপনার আচিলের ওপর উপুড়
করে স্থাপন করুন। এবার তার ওপরে সার্জিক্যাল টেপ পেচিয়ে রাখুন।
৩০। আলসারঃ নরম
ও মিহি হওয়ার জন্য পেটের সমস্যায় খুবই উপকারী খাবার কলা। অত্যন্ত খারাপ পেটের
রোগেও কলাই একমাত্র ফল যা নির্বিঘ্নে খাওয়া যেতে পারে। কলা অস্বস্তি কমিয়ে
আরামদায়ক অনুভূতি দেয়।
৩১। তাপমাত্রা নিয়নন্ত্রণঃ অনেক দেশে শরীরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ করতে কলা
ব্যবহার করা হয়। অন্তঃসত্ত্বা মহিলাদের জ্বর হলে ওষুধের বদলে খাওয়ানো হয় কলা।
তাইল্যান্ডে গর্ভস্থ সন্তানের শরীরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে গর্ভবতী মায়েদের
মধ্যে কলা খাওয়ার প্রচলন রয়েছে।
৩২। মাংসের তরকারী আরও সুস্বাদু করে তোলেঃ কোনো কোনো
এলাকায় মাংসকে নরম ও সুস্বাদু করতে রান্নার সময় কলাপাতা দিয়ে পেঁচিয়ে রান্না করা
হয়। এই একই ফলাফল আপনি তরকারীতে কলা ব্যাবহার করেও পেতে পারেন। বাজার থেকে কলা
কিনে এনেছেন কিন্তু এখনও তা কাঁচাই আছে?
চিন্তা কি? মাংসের তরকারিতে কলা দিয়ে
রেধে ফেলুন। এতে করে বাড়িতে পড়ে থাকা কাঁচা কলাগুলো যেমন কাজে লাগছে তেমনি
তরকারিতে ভিটামিন ও ফাইবার এর পরিমানও অনেক বেড়ে যাবে।
৩৩। চুলকে আরও আকর্ষনীয় করে তোলেঃ চুল পরিচর্যায় কসমেটিকস এর পরিবর্তে কলা অন্যতম
বিকল্প হতে পারে। হেয়ার মাস্ক হিসেবে কলা চুলে ব্যাবহার করতে পারেন। কলায় রয়েছে
ভিটামিন বি ও ফলিক অ্যাসিড সহ আরও অনেক পুষ্টিগুন তাই এটি চুলে সৌন্দর্য বৃদ্ধিতে
ব্যাপকভাবে সহায়তা করে। কলার সাথে চুলের সৌন্দর্যবর্ধক অন্যান্য প্রাকৃতিক উপাদান
যুক্ত করে আপনি আরও ভালো ফলাফল পেতে পারেন। এর জন্য আপনার প্রয়োজন কলা, দুধ এবং মধু। উপাদানগুলো একত্রে
ভালোভাবে মিশিয়ে নিন। এরপর তা চুলে দিয়ে ২০ মিনিট অপেক্ষা করুন। এরপর তা ধুয়ে
ফেলুন।
৩৪। প্রতিদিন
ব্যায়াম করার আগে ২ টি কলা খেয়ে নিন কারণ কলার উপাদান আপনার দেহের রক্তে শর্করার
পরিমান ঠিক রাখবে ও ব্লাড সুগার নিয়ন্ত্রনে রাখবে।
৩৫। ব্যায়ামের আগে কিংবা পরে কলা খেলে তা আপনার
দেহের পেশী সমস্যা দূর করে এবং রাতের বেলায় পায়ের মজবুত পেশী গঠনে সাহায্য করে।
৩৬। অনেকেরই মূত্র ত্যাগ করার সাথে সাথে দেহ থেকে
ক্যালসিয়ামও বের হয়ে যায়। তাই এই সমস্যা দূর করতে ও দেহের হাড় মজবুত করতে কলা
খাওয়া উচিত।
৩৭। ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি করেঃ কলা ব্যাবহার
করে খুব সহজেই ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি করা যায়। শুধু কলা থেঁতলে নিয়ে মুখে লাগান।
এরপর ১৫ মিনিট অপেক্ষা করে ঠান্ডা পানি দিয়ে মুখ ধুয়ে ফেলুন। কলায় রয়েছে ভিটামিন-এ
যা মুখের দাগ দুর করে এছাড়াও রয়েছে ভিটামিন-ই যা ত্বকে আনে তারুন্যের ঝলক। বিশেষ
কোনো উপলক্ষ্যে বা অনুষ্ঠানের আগের রাতে মুখের দাগ দুর করতে চাইলে পুরো মুখে কলা
ব্যাবহার করুন এতে ভালো ফলাফল পাবেন।
৩৮। ব্রণ দূর করতেঃ মুখের ব্রণ দূর করতে কলার খোসা উপকারী। এর
মাধ্যমে একবার সেরে গেলে ব্রণ আর ফিরে আসে না। মুখে ভালো করে ঘষে সারারাত রেখে
দিলে ব্রণের সমস্যা কাটবে।
৩৯। দেহে প্রোবায়টিক এর যোগান দেয়ঃ আমাদের
দেহের অন্ত্রে ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়ার নিয়ন্ত্রনের জন্য প্রোবায়টিক গ্রহন করা
প্রয়োজন। আর অন্ত্রে ক্ষতিকর ব্যাক্টেরিয়া বৃদ্ধি হওয়া মানেই পুরো দেহেই এর প্রভাব
ছড়িয়ে পড়া। প্রোবায়টিক এর একটি অন্যতম প্রাকিৃতিক উৎস হলো কলা কেননা কলাতে রয়েছে
ফ্রুক্টোওলিগোস্যাকারাইড (FOS) যা
দেহে উপকারী ব্যাক্টেরিয়া বৃদ্ধিতে সহায়তা করে।
৪০। দুশ্চিন্তা দুর করেঃ কলায়
রয়েছে প্রচুর পরিমানে পটাশিয়াম যা উচ্চ রক্তচাপ কমায়। এছাড়াও এটি মানসিক চাপ কমায়
এবং একই সাথে মানসিক কর্মদক্ষতাও বৃদ্ধি করে। এর কারন হলো এটি কর্টিজল নামক
স্ট্রেস হরমোন নিয়ন্ত্রন করে। তাই যেকোনো গুরুত্বপুর্ন বা স্ট্রেসফুল কাজ শুরু
করার পুর্বে একটি কলা খেয়ে নেওয়ার অভ্যাস গড়ে তুলুন।
৪১। শারিরিক পরিশ্রম
ও ব্যায়ামে শক্তি যোগায়ঃ বড়
ধরনের শারিরিক পরিশ্রম এর জন্য প্রয়োজন ভিটামিন-সি। কেননা এটি শরীরের পেশি, লিগামেন্ট ও রগ শক্তিশালী করে তোলে।
কলায় প্রচুর পিরমানে ভিটামিন সি রয়েছে। যেহেতু এটি শারিরিক পরিশ্রমে প্রচুর সহায়তা
করে, তাই ব্যায়াম করার পূর্বে কলা খাওয়ার অভ্যাস অত্যন্ত
উপকারী।
৪২। পায়ের গোড়ালি পরিচর্যায় সহায়তা করেঃ
পায়ের গোড়ালি ফেটে গেলে এক্ষেত্রে কলা অনেক উপকার করে। শুধু কলা থেঁতলে
নিয়ে আপনার পায়ের গোড়ালিতে লাগিয়ে নিন। এরপর কিছুক্ষন অপেক্ষা করুন, যেন তা ধীরে ধীরে চামরার ভেতর প্রবেশ
করতে পারে। এখন থেকে আপনাকে আর ফাঁটা গোড়ালী নিয়ে দুশ্চিন্তা করতে হবে না।
৪৩। ঘুমের জন্য সহায়কঃ রাতে
বিছানায় এপাশ ওপাশ করেন কিন্তু ঘুম আসে না?
কলা হলো এই সমস্যার প্রাকৃতিক সমাধান। কলা ট্রিপটোফেন নামক এক
প্রকার অ্যামিনো অ্যাসিড এর খুবই ভালো উৎস। এই ট্রিপটোফেন সেরোটিন নামক হরমোন
তৈরিতে গুরুত্বপুর্ন ভুমিকা পালন করে। এই হরমোন মনে প্রশান্তি নিয়ে আসে, এমনকি মেজাজ খারাপ থাকলে তা-ও ভালো করে দিতে পারে। ঘুমানোর প্রায় এক
ঘন্টা আগে একটি কলা খেয়ে নিন যাতে আপনার শরীর তা হজম করে ট্রিপটোফেন তৈরি করতে
পারে আর আপনাকে উপহার দিতে পারে আকটি শান্তিময় ঘুম।
৪৪। মাইগ্রেন দুর করেঃ মাথাব্যাথা ও মাইগ্রেন এর ভয়ানক ব্যাথা আপনার
সারাটা দিন মাটি করে দিতে পারে। কিন্তু কলা-ই পারে এই অবস্থা প্রতিরোধ করতে। কলায়
প্রচুর পরিমানে ম্যাগনেসিয়াম থাকায় এটি মাথাব্যাথার প্রকৃতিক নিরাময় হিসেবে কাজ
করে। তাই এখন থেকে যে কোনো সময় আপনার মাথা ব্যাথা শুরু হতে চাইলেই চট করে একটি কলা
খেয়ে ফেলুন।
কলা খেয়ে কলার খোসাটা আমরা ফেলে দিলেও এই
ফেলনা জিনিসটি কিন্তু লাগে অনেক কাজে। জেনে নিন পাকা এবং কাঁচা কলার খোসার অভিনব
কিছু ব্যবহার।
কলার খোসার
উপকারিতাঃ
৪৫। ত্বকের চিকিৎসায়ঃ খোসার ভেতরের
অংশ ব্রণ ও বলিরেখা দূর করতে উপকারী। এটি ত্বককে পরিপূর্ণ পুষ্টি দিতে সাহায্য
করে। ক্ষতিগ্রস্ত জায়গায় খোসা দিয়ে আধা ঘণ্টা ঘষতে পারেন, উপকার পাবেন।
৪৬। সাদা দাঁতঃ দাঁত সাদা করতে
কলার খোসা বেশ উপকারী। নিয়মিত কলার খোসার ভেতরের অংশটি দাঁতে ঘষলে দাঁত হবে আরো
সাদা। বিশেষজ্ঞরা জানান, কয়েক
সপ্তাহ ব্যবহারে আপনি এর ফলাফল পাবেন।
৪৭। সোরিয়াসিস রোগেঃ বিশেষজ্ঞরা বলেন, সোরিয়াসিসের মতো কঠিন ত্বকের রোগের
প্রতিষেধক হিসেবে কলার খোসা ব্যবহার করা যেতে পারে। ত্বকে এটি ব্যবহার করার ১০
মিনিটের মধ্যে সোরিয়াসিসের লক্ষণগুলো চলে যাবে।
৪৮। ব্যথানাশক হিসেবেঃ ত্বকে কি কোনো
বিরক্তি বোধ বা ব্যথা বোধ করছেন? তাহলে কলার খোসা ঘষতে পারেন। এর ব্যবহারে ১০ মিনিটের মধ্যে আপনি ত্বকে
ভালো পরিবর্তন দেখতে পাবেন। ব্যথা কমে যাবে।
৪৯। পোকামাকড়ের কামড়েঃ এ ছাড়া
পোকামাকড়ের কামড়ে ত্বক ফুলে গেলে বা ত্বকের জ্বালাপোড়া হলে এটি কমাতে কলার খোসা
ঘষলে উপকার পাবেন।
৫০। মুখের
দাগ দূর করতেঃ কলার খোসা
ব্যবহার করে সহজেই মুখের দাগ দূর করা যায়। মধুর সঙ্গে কলার খোসা মিশিয়ে মুখে ভালো
করে ঘষলে এই দাগ দূর হয়।
৫১। অতিবেগুনি রশ্মি থেকে সুরক্ষা দেয়ঃ চোখে ছানি পড়ার হাত থেকে রক্ষা করতে পারে কলার খোসা। চুলকানি ও চোখের অবসাদ দূর করতে চোখের ওপর কলার খোসা মেখে নিতে পারেন। কলার খোসায় অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট লুটিন থাকে৷অতিবেগুনি রশ্মির ছোবল থেকে চোখকে বাঁচায় এই লুটিন৷
৫২। বলিরেখা দূর হয়ঃ ত্বকের জন্যও কলার খোসা অনেক উপকারী। কলার খোসায় অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট রয়েছে, যা বলিরেখা ঢাকতে পারে। এটি সজীব ত্বকে সাহায্য করতে পারে।
৫৩। দাদের ওষুধঃ কলার খোসা দাদের ওষুধ হিসেবেও কাজ করে। চুলকালে সেই অংশে কলার খোসা ঘষে দিলে চুলকানি বন্ধ হবে এবং দ্রুত দাদ সেরে যাবে।
৫৪। মসৃণ ত্বকের জন্যঃ মুখমণ্ডল যদি শুষ্ক আর খসখসে হয়, কলার খোসার ভেতরের অংশ মুখে লাগিয়ে রাখুন কিছুক্ষণ। তারপর ধুয়ে ফেলুন। দেখবেন ত্বক মসৃণ ও মোলায়েম হয়ে গেছে।
৫৫। খোসপাঁচড়া দূর করেঃ ত্বকে কোথাও পাঁচড়া-জাতীয় কিছু হলে সেই জায়গায় কলার খোসা মেখে রাখুন, অথবা কলার খোসা পানির মধ্যে সেদ্ধ করে সেই পানি দিয়ে সংক্রমিত জায়গা কয়েক দিন ধুয়ে ফেলুন। উপকার পাবেন।
৫১। অতিবেগুনি রশ্মি থেকে সুরক্ষা দেয়ঃ চোখে ছানি পড়ার হাত থেকে রক্ষা করতে পারে কলার খোসা। চুলকানি ও চোখের অবসাদ দূর করতে চোখের ওপর কলার খোসা মেখে নিতে পারেন। কলার খোসায় অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট লুটিন থাকে৷অতিবেগুনি রশ্মির ছোবল থেকে চোখকে বাঁচায় এই লুটিন৷
৫২। বলিরেখা দূর হয়ঃ ত্বকের জন্যও কলার খোসা অনেক উপকারী। কলার খোসায় অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট রয়েছে, যা বলিরেখা ঢাকতে পারে। এটি সজীব ত্বকে সাহায্য করতে পারে।
৫৩। দাদের ওষুধঃ কলার খোসা দাদের ওষুধ হিসেবেও কাজ করে। চুলকালে সেই অংশে কলার খোসা ঘষে দিলে চুলকানি বন্ধ হবে এবং দ্রুত দাদ সেরে যাবে।
৫৪। মসৃণ ত্বকের জন্যঃ মুখমণ্ডল যদি শুষ্ক আর খসখসে হয়, কলার খোসার ভেতরের অংশ মুখে লাগিয়ে রাখুন কিছুক্ষণ। তারপর ধুয়ে ফেলুন। দেখবেন ত্বক মসৃণ ও মোলায়েম হয়ে গেছে।
৫৫। খোসপাঁচড়া দূর করেঃ ত্বকে কোথাও পাঁচড়া-জাতীয় কিছু হলে সেই জায়গায় কলার খোসা মেখে রাখুন, অথবা কলার খোসা পানির মধ্যে সেদ্ধ করে সেই পানি দিয়ে সংক্রমিত জায়গা কয়েক দিন ধুয়ে ফেলুন। উপকার পাবেন।
৫৬। কালচে ঠোঁটকে গোলাপি করতে সামান্য কলার
পেস্টের সাথে লেবুর রস মিশিয়ে লাগান ।
৫৭। জুতা চকচকে করে তুলতেঃ শু পলিশের পরিবর্তে ব্যবহার করতে পারেন কলার
খোসা। প্রথমে জুতায় ময়লা লেগে থাকলে তা পরিষ্কার করে নিন। এবার পাকা কলার খোসার
ভেতরের অংশটা দিয়ে জুতা ওপরে ঘষুন অন্তত ৫ মিনিট। নিজেই দেখবেন যে চকচকে হয়ে উঠতে
শুরু করেছে জুতা। এবার একটি পাতলা পরিষ্কার কাপড় দিয়ে জুতা জোড়া ভালো করে মুছে
নিন।
৫৮। সিডি বা ডিভিডির স্ক্র্যাচ দূর করতেঃ সিডি বা ডিভিডিতে কিছুদিনের মধ্যেই
স্ক্র্যাচ পড়ে নষ্ট হয়ে যায়। এতে সিডি চলতে চায় না, ডিভিডির ভিডিও আটকে আটকে যায়। এ সমস্যা সমাধান করতে পারে
কলার খোসা। কলার খোসার ভেতরের অংশটি দিয়ে সিডি বা ডিভিডিটি ভালো করে ঘষে নিন।
দেখবেন স্ক্র্যাচ একেবারেই চলে গিয়েছে। এবং সিডি বা ডিভিডিও চলবে আগের মতোই।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন