কিসমিস হল আঙুর ফলের শুকনা রূপ। যা তৈরি করা হয় সূর্যের
তাপ অথবা মাইক্রোওয়েভ ওভেনের সাহায্যে। তাপের কারণে আঙুরের ফ্রুক্টোজগুলো জমাট বেঁধে পরিণত হয় কিশমিশে এটি রক্তে
শর্করার মাত্রায় ঝামেলা তৈরি করে না। আর শতকরা ৭০ ভাগ খাঁটি এই ফ্রুক্টোজ সহজেই
হজমযোগ্য।
এছাড়া আঙুরের বিভিন্ন পুষ্টিগুণ যেমনঃ
ফসফরাস, ক্যালশিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, কপার, জিংক, লৌহ, ফ্লোরাইড, পোটাসিয়াম, ফোলাট, নিয়াসিন, কোলিন, ভিটামিন বি সিক্স, সি, কে এবং রিবোফ্লাবিন কিসমিসেও পাওয়া যায়।
প্রতিদিন এই ছোট শুকনা ফলের ১২টি খেলেই যাদুমন্ত্রের মতো কাজ করবে।
কিসমিস
এর পুষ্টিমানঃ
প্রতি
১০০ গ্রাম কিসমিসে রয়েছেঃ
উপাদান
|
পরিমাণ
|
এনার্জি
|
৩০৪ কিলো ক্যালোরি
|
কার্বোহাইড্রেট
|
৭৪.৬ গ্রাম
|
ডায়েটরি ফাইবার
|
১.১ গ্রাম
|
ফ্যাট
|
০.৩ গ্রাম
|
প্রোটিন
|
১.৮ গ্রাম
|
ক্যালসিয়াম
|
৮৭ মিলিগ্রাম
|
আয়রন
|
৭.৭ মিলিগ্রাম
|
পটাশিয়াম
|
৭৮ মিলিগ্রাম
|
সোডিয়াম
|
২০.৪ মিলিগ্রাম
|
জিংক
|
০.২২ মিলিগ্রাম
|
ফ্লুরাইড
|
২৩৩.৯ মাইক্রোগ্রাম
|
ভিটামিন ‘সি’
|
২.৩ মিলিগ্রাম
|
ভিটামিন ‘কে’
|
৩.৫ মিলিগ্রাম
|
ম্যাগনেসিয়াম
|
৩২ মিলিগ্রাম
|
ফসফরাস
|
১০১ মিলিগ্রাম
|
কিসমিস আমাদের স্বাস্থের কি কি উপকার সাধন করেঃ
১। ভালো রাখে মুখের স্বাস্থ্যঃ ক্যান্ডির মতো দাঁতে লেগে থাকেনা । কিশমিশ ফলে থাকে না ক্যাভিটি তৈরির আশঙ্কা। বরং কিশমিশের পাইথোনিউট্রিয়েন্ট, অলিয়ানলিক এসিড নামে পরিচিতি যা ব্যাকটেরিয় ক্যাভিটি ধ্বংস করে মুখের স্বাস্থ্য ভালো রাখে।
২। হজমে সাহায্য করেঃ কিসমিসে রয়েছে
প্রচুর পরিমাণে ফাইবার, যা আমাদের পরিপাকক্রিয়া দ্রুত হ’তে সাহায্য করে এবং কোষ্ঠকাঠিন্যের
সমস্যা দূর করে।
৩। রক্তশূন্যতা দূর করেঃ রক্তশূন্যতার
কারণে অবসাদ, শারীরিক দুর্বলতা, বা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যতে পারে; এমনকি,
বিষণ্ণতাও দেখা দিতে পারে। কিশমিশে আছে, প্রচুর পরিমাণে লৌহ উপাদান, যা রক্তশূন্যতা
দূর করতে সাহায্য করে।
৪। জ্বর নিরাময় করেঃ কিশমিশ
রয়েছে প্রচুর পরিমানে ব্যাকটেরিয়ারোধী, এবং
অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট উপাদান ফলে এটা ভাইরাল এবং ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণের বিরুদ্ধে
যুদ্ধ করে জ্বর নিরাময় করতে সাহায্য কারে।
৫। ক্যান্সারঃ খাবারে প্রচুর
পরিমাণ আঁশ থাকলে কোলোরেক্টারাল ক্যান্সার ঝুঁকি কমে যায়। এক টেবিল চামচ কিশমিশ ১
গ্রাম পরিমাণ আঁশ থাকে। কিসমিসের অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট দেহের কোষগুলোকে ফ্রি র্যাডিক্যাল
ড্যামেজের হাত থেকে রক্ষা করে এবং ক্যান্সারের কোষ উৎপন্ন হওয়ায় বাধা প্রদান করে।
৬। এসিডিটি কমায়ঃ রক্তে অধিক
মাত্রায় এসিডিটি (অম্লতা) বা টক্সিসিটি (বিষ উপাদান) থাকলে, তাকে
বলা হয়, এসিডোসিস। এসিডোসিসের (রক্তে অম্লাধিক্য) কারণে
বাত, চর্মরোগ, হৃদরোগ ও
ক্যান্সার হতে পারে। কিশমিশ রক্তের এসিডিটি কমায়।
৭। চোখের যত্নেঃ আপনি কি
জানেন, প্রতিদিন কিশমিশ খেলে বৃদ্ধ বয়সে অন্ধত্ব থেকে রক্ষা পাওয়া যায়?
কিশমিশে আছে প্রচুর পরিমাণ, এন্টি-অক্সিডেন্ট,
যা অন্ধত্ব প্রতিরোধ করে। কিশমিশে আছে প্রচুর পরিমাণে
এন্টি-অক্সিডেন্ট, যা অন্ধত্ব প্রতিরোধ করে।
৮। দাঁতের ও হারের সুরক্ষাঃ কিসমিসে
রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ক্যালসিয়াম, যা দাঁত ও হাড় মযবুত
করতে বেশ কার্যকর ভূমিকা পালন করে। কিসমিসে আরো রয়েছে বোরন নামক
মাইক্রোনিউট্রিয়েন্টস, যা হাড়ের ক্যালসিয়াম শোষণে সাহায্য
করে।
৯। দেহে শক্তি সরবরাহকারীঃ দুর্বলতা
দূরীকরণে কিসমিসের জুড়ি মেলা ভার। কিসমিসে রয়েছে চিনি, গ্লুকোজ
এবং ফ্রুক্টোজ, যা তাৎক্ষণিকভাবে দেহে এনার্জি সরবরাহ
করে। তাই দুর্বলতার ক্ষেত্রে কিসমিস খুবই উপকারী।
১০। অনিদ্রাঃ কিশমিসের মধ্যে
রয়েছে প্রচুর আয়রন যা মানুষের অনিদ্রার চিকিত্সায় বিশেষ উপকারী।
১১। উচ্চরক্তচাপ ও
কোলেস্ট্রোরেল কমায়ঃ কিশমিশ শুধুমাত্র রক্তের মধ্যে থাকা বিষোপাদান কমায় তাই না, বরং
উচ্চরক্তচাপও কমায়। কিশমিশে আছে এন্টি-কোলোস্ট্রোরেল উপাদান যা রক্তের খারাপ
কোলোস্ট্রোরেলকেহ্রাস করতে সাহায্য করে। কিশমিশের দ্রবণীয় আশ, লিভার থেকে কোলোস্ট্রোরেল দূর করতে সাহায্য করে।
১২। ইনফেকশনের সম্ভাবনা দূরীকরণঃ কিসমিসের মধ্যে রয়েছে পলিফেনলস এবং অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল ও
অ্যান্টিইনফেমেটরী উপাদান, যা কাঁটা-ছেড়া বা ক্ষত হ’তে ইনফেকশন হওয়ার সম্ভাবনা দূরে রাখে।
১৩। কোষ্ঠকাঠিন্য দূরীকরণঃ কিসমিসে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার, যা আমাদের
পরিপাকক্রিয়া দ্রুত হ’তে
সাহায্য করে এবং কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা দূর করে।
১৪। মস্তিষ্কের খাদ্যঃ কিশমিশের মধ্যে থাকা বোরন খনিজ পদার্থটি মস্তিষ্কের জন্য
খুবই উপকারী, যা মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতার জন্য অত্যাবশ্যকীয় উপাদান। বোরন
মস্তিষ্কের কি উপকার করে? এটা মনোযোগ বাড়াতে সাহায্য করে,
হাত ও চোখের মধ্যে সমন্বয়কে বৃদ্ধি করে এবং স্মৃতিশক্তি বাড়ায়।
১৫। রক্তাল্পতার রক্ষকঃ কিসমিসে প্রচুর আয়রন থাকে। যা রক্তাল্পতার
বিরুদ্ধে লড়াই করে। এতে নতুন রক্তকোষ তৈরি করতে সক্ষম ভিটামিন-বি কমপ্লেক্স থাকে।
কিসমিসে লোহিত রক্তকণিকা তৈরিতে সাহায্যকারি কপারও আছে।
১৬। ওজন বাড়ানোঃ কিসমিসে প্রচুর ফ্রুক্টোজ ও গ্লুকোজ থাকে। তাই
এটি ওজন বাড়াতে সহায়ক। যদি সঠিক নিয়মে ওজন বাড়াতে চান তবে আজই কিসমিস খেতে পারেন।
১৭। কিশমিশ শরীরের সোডিয়াম মাত্রাকে নিয়ন্ত্রণেও
সাহায্য করে।
১৮। কিসমিস গ্যাস্ট্রোইনটেস্টিনাল (মুখ থেকে পায়ু) পথ থেকে বিষাক্ত পদার্থ বের করে দেয়।
প্রতি ১০০ গ্রাম কিশমিশে ৩ দশমিক ৭ গ্রাম গলন-অযোগ্য আঁশ বা ইনসলিউবল ফাইবার আছে, যা কোষ্ঠকাঠিন্য দূর ও হজম করতে বিশেষ ভূমিকা রাখতে পারে। প্রচুর গ্লুকোজ ও ফ্রুক্টোজ আছে কিশমিশে। প্রতি ১০০ গ্রাম কিশমিশ প্রায় আড়াই শ ক্যালরি ধারণ করে। তবে একই কারণে ওজনাধিক্য ও ডায়াবেটিক রোগীদের আবার বেশি কিশমিশ খাওয়া বারণ।
১০০ গ্রাম কিশমিশে যে পরিমাণ লৌহ আছে, তাতে একজন মানুষের দৈনিক চাহিদার ২৩
শতাংশ পূরণ করে। রক্তশূন্যতা দূর করতে এবং গর্ভাবস্থায় তাই কিশমিশ খাওয়া উচিত। এ
ছাড়া এতে আছে কেটেচিন ও রেসভেরাট্রল নামের অ্যান্টি অক্সিডেন্ট, যা ক্যানসার প্রতিরোধে সহায়ক। কিশমিশের ২৬ শতাংশ হলো শর্করা, ১৫ শতাংশ আঁশ, আমিষ আছে ৬ শতাংশ ও চর্বি মাত্র
১ শতাংশ। আছে পটাশিয়াম ২১ শতাংশ এবং লৌহ ১০ শতাংশ। এ ছাড়া আছে ভিটামিন বি
কমপ্লেক্স ও কপার। দীর্ঘ রোগভোগের পর শক্তি ও দ্রুত ওজন বাড়াতে কিসমিসের ব্যবহার
প্রচলিত। নিউট্রিশন ফ্যাক্ট।
৯টি মন্তব্য:
শরীরের দূর্বলতা কাটে কি খেলে
স্কুলছাত্রী গণধর্ষণের শিকার হল ডিবি পুলিশ সদস্যের প্রেমে পড়ে
৩০০ টি ঔষধি গুণসম্পন্ন সজিনার উপকারীতা সম্পর্কে কিছু কথা
আসোন জেনে রাখি কাঁচা ছোলার উপকারীতা
৫ ধরণের খাবার খেয়ে সুস্থ থাকুন শীতে
ম্যাজিকের মতো কাজ করে ওজন কমাতে গোলমরিচ
স্বাস্থ্য কমালোর উপায় ভাবছেন, ডাল খান মেদ কমান
ধন্যবাদ । www.somacharsomahar.xyz
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন