আতা অ্যানোনেসি (Annonaceae)
পরিবারভুক্ত এক ধরণের যৌগিক ফল। এটি শরিফা, শরীফা এবং নোনা নামেও পরিচিত। এই ফলের ভিতরে থাকে ছোট ছোট কোষ। প্রতিটি কোষের ভেতরে
থাকে একটি করে বীজ, বীজকে ঘিরে থাকা নরম ও রসালো অংশই
খেতে হয়। পাকা ফলের বীজ কালো এবং কাঁচা ফলের বীজ সাদা।
আতাফলের আদি নিবাস পূর্ব
আমেরিকা। বহু বছর আগে এ ফলটি পূর্ব আমেরিকা থেকে ভারতবর্ষে আসে। এখন পুরো
উপমহাদেশে এই ফল দেখা যায়। আতাফল শরীফা এবং নোনা নামেও পরিচিত। তবে অঞ্চলভেদে কিছু
পার্থক্য রয়েছে। আতাফলের রয়েছে বেশ কয়েকটি প্রজাতি ও প্রকরণ।
সবগুলিকেই ইংরেজিতে Custard-apple, Sugar-apple, Sugar-pineapple বা Sweetsop
ডাকা হয়। আতাফলের বৈজ্ঞানিক নাম Anona squamosa Linn।
জগৎঃ
|
|
বর্গঃ
|
|
গণঃ
|
|
আতাগাছ বহু শাখাবিশিষ্ট
মাঝারি ধরনের বৃক্ষ। এটি প্রায় ১০-১৫ ফুট উঁচু হয়ে থাকে। সাধারণত ফেব্রুয়ারির শেষ
দিকে গাছে ফুল আসে এবং মার্চে ফল আসে। ফল পাকে এপ্রিল-মে মাসে। কাঁচা ফল এবড়ো
থেবড়ো গোলাকার, সবুজ বর্ণের। পাকলে সুগন্ধ ছড়ায় এবং স্বাদ মিষ্টি। ফল উপকারী হলেও এর
বীজ বিষাক্ত।
আতা ফলের পুষ্টিমানঃ
আতাফলের প্রতি ১০০ গ্রাম খাদ্যযোগ্য অংশে রয়েছেঃ
উপাদান
|
পরিমান
|
খাদ্য শক্তি
|
৮০ – ১০১ কিলো ক্যালোরি
|
জলীয় অংশ
|
৬৮.৩ – ৮০.১ গ্রাম
|
আমিষ
|
১.১৭ – ২.৪৭ গ্রাম
|
চর্বি
|
০.৫ – ০.৬ গ্রাম
|
শর্করা
|
২০ – ২৫.২ গ্রাম
|
খাদ্য আঁশ
|
০.৯ – ৬.৬ গ্রাম
|
ক্যালসিয়াম
|
১৭.৬ – ২৭ মিলিগ্রাম
|
ফসফরাস
|
১৪.৭ – ৩২.১ মিলিগ্রাম
|
লৌহ
|
০.৪২ – ১.১৪ মিলিগ্রাম
|
ক্যারোটিন
|
০.০০৭ – ০.০১৮ মিলিগ্রাম
|
থায়ামিন
|
০.০৭৫ – ০.১১৯ মিলিগ্রাম
|
রিবোফ্লেভিন
|
০.০৮৬ – ০.১৭৫ মিলিগ্রাম
|
নিয়াসিন
|
০.৫২৮ – ১.১৯০ মিলিগ্রাম
|
অ্যাসকরবিক অ্যাসিড
|
১৫.০ – ৪৪.৪ মিলিগ্রাম
|
নাইকোটিনিক অ্যাসিড
|
০.৫ মিলিগ্রাম
|
প্যানটোথেনিক অ্যাসিড
|
০.১ মিলিগ্রাম
|
প্রোটিন
|
১.৭ গ্রাম
|
ভিটামিন ‘এ’
|
৩৩ আই ইউ
|
ভিটামিন ‘সি’
|
১৯২ মিলিগ্রাম
|
ম্যাগনেসিয়াম
|
১৮ মিলিগ্রাম
|
পটাশিয়াম
|
৩৮২ মিলিগ্রাম
|
সোডিয়াম
|
৪ মিলিগ্রাম
|
আতাফলের স্বাস্থ্য উপকারিতাঃ
১। আতা ফলে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি, যা একটি উন্নতমানের অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট এবং ফ্রি রেডিক্যাল নিয়ন্ত্রণে রক্ষা করে। এছাড়া ত্বকে বার্ধক্য বিলম্বিত করে।
২। এতে উপস্থিত ভিটামিন এ চোখ, চুল ও ত্বকের জন্য খুবই উপকারী।
৩। আতা ফলের ম্যাগনেসিয়াম মাংসপেশির জড়তা দূর করে এবং হৃদরোগ প্রতিরোধে সহায়তা করে।
৪। এর পটাশিয়াম ও ভিটামিন বি৬ রক্তের উচ্চচাপ নিয়ন্ত্রণ করে এবং হৃদরোগ ও স্ট্রোকের ঝুঁকি কমায়।
৫। এর খাদ্যআঁশ হজমশক্তি বৃদ্ধি করে ও পেটের সমস্যা দূর করে।
৬। আতাফলের খাদ্যউপাদান এনিমিয়া প্রতিরোধ করে।
৭। আতাফলের শাঁসের রস রক্তের শক্তি
বৃদ্ধিকারক হিসেবে ব্যবহৃত হয়।
৮। ত্বকে
বার্ধক্য বিলম্বিত করে।
৯। আমাশয়েঃ আতা গাছের মূলের ছালের রস ২০/২৫ ফোঁটা ৭/৮ চা চামচ দুধ সহ খেতে হবে, তবে ছাগলের দুধ হলে ভাল হয়। আথবা আতা গাছের মূলের ছাল চূর্ণ ২০০ মিলিগ্রাম একবার বা দুইবার খেতে হবে। এর দ্বারা ২/৩ মধ্যে আমাশয় ভালো হয়ে যাবে।
১০। রক্তে বল কমে গেলেঃ যদি শ্লেষ্মাবিকারের কোনো ব্যধি না থাকলে পাকা আতাফলের শাঁসের রস ২/৩ চা চামচ করে সকালে ও বিকালে ২ বার খেলে রক্তের নিস্তেজ ভাবটা সেরে যায়। যদি রস করা সম্ভব না হয় তাহলে পাকা আতা এমনি খেলেই চলবে।
১১। অপুষ্টিজনিত কৃশতায়ঃ শিশু, যুবক যুবতী বৃদ্ধ যে কোনো বয়সেরই হোক এ ক্ষেত্রে পাকা আতাফলের রস ২/৩ চা চামচ করে একটু দুধের সাথে মিশিয়ে খাওয়ালে ধীরে ধীরে পুষ্টি সঞ্চার হয় এবং কৃশতাও দূর হয়।
১২। রক্তপিত্তজনিত দাহরোগেঃ অল্প রক্তচাপের কারনে মাঝে মাঝে বমির সংগে রক্ত বের হয় আবার বন্ধ হয়ে স্বাভাবিক মনে হয়, আবার কারো কারো আগ্নির বলও থাকেনা। এ ক্ষেত্রে পাকা আতার রস ২/৩ চা চামচ করে খাওয়ালে সেরে যাবে।কারো কারো দেহে সর্বোদা একটা দাহ ভাব আসে এভাবে খেলে সেটাও চলে যাবে।
১৩। ফোঁড়ায়ঃ যে ফোঁড়া দড়কচা যাকে বলে পাকছেওনা বসছেওনা। না কাঁচা না পাকা এ ক্ষেত্রে আতার বীজ বা পাতা বেটে সামান্য লবন মিশিয়ে প্রলেপ দিলে ফোঁড়া পেকে ফেটে পুঁজ বের হয়ে যাবে।
১৪। ক্ষতের পোকায়ঃ পিত্তশ্লেষ্মাপ্রধান শরীরে ক্ষত হলে তাড়াতাড়ি শুকাতে চায়না। দীর্ঘদিন থাকলে পোকা জন্মে।সে ক্ষেত্রে কাঁচা আতাফল বীজসমেত শুকিয়ে মিহি গুড়া করে ঐ ক্ষতে ছড়িয়ে দিলে ক্ষতের কীট মরে যাবে এবং ঘাও শুকিয়ে যাবে। তবে এই গুড়ো দেবার আগে কালমেঘের পাতা সিদ্ধ পানি দিয়ে ঐ ক্ষতটা ধুয়ে নিলে আরো তাড়িতাড়ি সেরে যাবে।
৯। আমাশয়েঃ আতা গাছের মূলের ছালের রস ২০/২৫ ফোঁটা ৭/৮ চা চামচ দুধ সহ খেতে হবে, তবে ছাগলের দুধ হলে ভাল হয়। আথবা আতা গাছের মূলের ছাল চূর্ণ ২০০ মিলিগ্রাম একবার বা দুইবার খেতে হবে। এর দ্বারা ২/৩ মধ্যে আমাশয় ভালো হয়ে যাবে।
১০। রক্তে বল কমে গেলেঃ যদি শ্লেষ্মাবিকারের কোনো ব্যধি না থাকলে পাকা আতাফলের শাঁসের রস ২/৩ চা চামচ করে সকালে ও বিকালে ২ বার খেলে রক্তের নিস্তেজ ভাবটা সেরে যায়। যদি রস করা সম্ভব না হয় তাহলে পাকা আতা এমনি খেলেই চলবে।
১১। অপুষ্টিজনিত কৃশতায়ঃ শিশু, যুবক যুবতী বৃদ্ধ যে কোনো বয়সেরই হোক এ ক্ষেত্রে পাকা আতাফলের রস ২/৩ চা চামচ করে একটু দুধের সাথে মিশিয়ে খাওয়ালে ধীরে ধীরে পুষ্টি সঞ্চার হয় এবং কৃশতাও দূর হয়।
১২। রক্তপিত্তজনিত দাহরোগেঃ অল্প রক্তচাপের কারনে মাঝে মাঝে বমির সংগে রক্ত বের হয় আবার বন্ধ হয়ে স্বাভাবিক মনে হয়, আবার কারো কারো আগ্নির বলও থাকেনা। এ ক্ষেত্রে পাকা আতার রস ২/৩ চা চামচ করে খাওয়ালে সেরে যাবে।কারো কারো দেহে সর্বোদা একটা দাহ ভাব আসে এভাবে খেলে সেটাও চলে যাবে।
১৩। ফোঁড়ায়ঃ যে ফোঁড়া দড়কচা যাকে বলে পাকছেওনা বসছেওনা। না কাঁচা না পাকা এ ক্ষেত্রে আতার বীজ বা পাতা বেটে সামান্য লবন মিশিয়ে প্রলেপ দিলে ফোঁড়া পেকে ফেটে পুঁজ বের হয়ে যাবে।
১৪। ক্ষতের পোকায়ঃ পিত্তশ্লেষ্মাপ্রধান শরীরে ক্ষত হলে তাড়াতাড়ি শুকাতে চায়না। দীর্ঘদিন থাকলে পোকা জন্মে।সে ক্ষেত্রে কাঁচা আতাফল বীজসমেত শুকিয়ে মিহি গুড়া করে ঐ ক্ষতে ছড়িয়ে দিলে ক্ষতের কীট মরে যাবে এবং ঘাও শুকিয়ে যাবে। তবে এই গুড়ো দেবার আগে কালমেঘের পাতা সিদ্ধ পানি দিয়ে ঐ ক্ষতটা ধুয়ে নিলে আরো তাড়িতাড়ি সেরে যাবে।
১৫। মূর্ছা রোগেঃ আনেক সময় মাসিক ঋতুর দোষে মূর্ছা রোগ হয়। এই রোগাক্রমন হলে সেই সময় আতাপাতার রস ২/১ ফোঁটা নাকে দিলে ২/৩ মিনিটের মধ্যে মূর্ছা ভেঙে যায়। রস দেয়ার সময় ড্রপারে করে দিতে হবে।
১৬। উকুনেঃ মাথায় উকুন হলে নির্বংশ করতে আতাপাতার রস ২ চা চামচ তার সঙ্গে ২/১ চা চামচ পানি মিশিয়ে চূলে লাগিয়ে কিছুক্ষণ রাখলে উকুন মরে যাবে।একদিনে না গেলে ২/৩ দিন পর আবার লাগাতে হবে। এ ছাড়া পাতা বেটে লাগালেও উকুন মরে যাবে। তবে সাবধানে ব্যবহার করতে হবে যেন চোখে না লাগে, তাহলে চোখ জ্বালা করবে ও লাল হয়ে যাবে।তাছাড়া এই রস লাগানোর পর মাথা ঘুরতে থাকলে না লাগানো উচিৎ।তবে প্রথমে আধা চামচ পানি মিশিয়ে লাগিয়ে দেখা ভালো।
আতাফলের ঔষধি গুণঃ
১। আতাগাছের শেকড়ের ছাল আমাশয়ের ওষুধ হিসেবে ব্যবহৃত হয়।
২। আতাফলের শাঁসের রস রক্তের শক্তি বৃদ্ধিকারক হিসেবে ব্যবহৃত হয়।
৩। অপুষ্টিজনিত সমস্যায় আতাফলের রসের সাথে দুধ মিশিয়ে খেলে উপকার পাওয়া যায়।
৪। যে ফোঁড়া পাকেও না আবার বসেও না, এমন ফোঁড়ায় আতার বীজ বা পাতা বেটে সামান্য লবণ মিশিয়ে প্রলেপ দিলে ফোঁড়া পেকে পুঁজ বের হয়ে যায়।
৫। পাতার রস উকুননাশক হিসেবে ব্যবহৃত হয়।
সাবধানতাঃ কোনো গর্ভবতী
নারীর আতার পাতা বা বীজ কোনো কিছুই ব্যবহার করা উচিৎ নয়। এতে গর্ভের ক্ষতি হয়ার
সম্ভবনা থাকে।
1 টি মন্তব্য:
আপনি কি জানেন, সবুরে মেওয়া ফলে, আসলে মেওয়া আর আতা দুটি আলাদা ফল ,কিন্তু দুটোকেই আপনি আতা বলেছেন, এটা ঠিক নয় ।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন