শুরু হল বাঙ্গালির শোকের মাস আগস্ট ।
একটা পক্ষ আগস্ট মাসকে কেন বেছে নিচ্ছে বারবার আমাদের
কাঁদাবার ।
এটার উত্তর খুব সহজ ।
জামাতের জন্ম হয়েছিল এই আগস্ট মাসে (২৬শে আগস্ট
১৯৪১) ।
পাকিস্তানের জন্ম হয় এই আগস্ট মাসে (১৫ই আগস্ট ১৯৪৭) ।
বিএনপির জন্মের প্রসব বেদনা ছিল এই আগস্ট মাসে
(১লা সেপ্টেম্বর ১৯৭৮) ।
বিএনপির বর্তমান প্রধানের জন্ম এই আগস্ট (
বিতর্কিত) মাসে । এই শোকের মাসেই তারা বড় বড়
কেক কেটে আতশবাজি পুড়িয়ে নতুন জন্মদিনের আনন্দ উৎসব করে ।
এটা কি প্রমান করে না আগস্টকে তারা বেছে নিয়েছে তাদের প্রসব
বেদনা
লাঘবের জন্য
বাঙ্গালী চেতনা নিধনের উল্লাস হিসাবে ??
এতগুলো জন্মমাসকে একসঙ্গে ঘৃণ্য শক্তিতে রুপান্তর করে স্বাধীনতার শত্রুরা , দেশের
শত্রুরা বারবার বেছে নিয়েছে আগস্ট মাসকে বাঙ্গালির চেতনাকে হত্যা করতে । যার ধারাবাহিকতা ১৫ই আগস্ট , ২১ শে আগস্ট
সহ রমনা বটমূলে বোমা হামলা , সারা বাংলায়
একসঙ্গে ৫০০ স্থানে বোমা হামলা , তথা কথিত বাংলা ভাই এর হত্যা যজ্ঞ , উদীচী
হত্যাকাণ্ড সহ অসংখ্য হত্যা, রগ কাটা ও ধর্ষণ ।
৭১ এর এই পরাজিত শক্তিরা তাদের ঘৃণ্য প্রতিশোধ
পরায়ন হয়ে কিছু অর্থ ও ক্ষমতা লোভী সেনা কিছু রাজনৈতিক নেতাদের জিম্মি করে ৭৫ এর ১৫ই আগস্ট জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর
রহমান সহ সকল আত্মীয় স্বজনদের হত্যা করে । দুই মেয়ে দেশের বাইরে থাকায় বেঁচে যান ঐ
সব হায়ানাদের রক্ত পিপাসা থেকে । হত্যা করা হয় অসংখ্য রাজনৈতিক নেতা ও কর্মীদের ।
এই হায়ানারা বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যা করে লোফে
নেয় বাংলার মসনদ । শুরু হয় রাজনৈতিক ব্যাক্তিদের হত্যা সহ দুর্নীতির বীজ বপন ।
শুরু হয় দেশকে ধর্মের অজুহাতে জঙ্গি রাষ্ট্রে পরিনত করার অপচেষ্টা । শুরু হয় একের
পর এক হত্যা-গুম , পারিবারিক করন , স্বাধীনতার পরাজিতদের প্রতিষ্ঠা করন ও তাদের
ইচ্ছানুযায়ী দেশের প্রশাসনিক ও অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড পরিচালনা করন । শুরু হয় ছাত্র
রাজনীতিতে অস্রের ব্যাবহার ।
এরই ধারাবাহিকতায় ২১ সে আগস্ট । ৭৫ এর ১৫ই
আগস্টের পর যারা ক্ষমতায় এসেছিল এরাই নিজেদের অস্তিত্ব রক্ষার জন্য স্বাধীনতার
পক্ষের শক্তিকে সমূলে শেষ করার জন্য ২০০৪
সালের ২১ শে আগস্ট বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা সহ আওয়ামীলীগের সকল নেতাকর্মীদের
হত্যা করার জন্য পরিকল্পিতভাবে গ্রেনেড হামলা চালায় । এতে অল্পের জন্য শেখ হাসিনা
সহ অনেক নেতা বেঁচে যান ।
স্বাধীনতার পরাজিতদের ধারনা ছিল আওয়ামীলীগের নেতাদের
হত্যা করতে পারলে বাংলাদেশে আওয়ামীলীগ নামে কোন রাজনৈতিক দল থাকবে না । থাকবে না
স্বাধীনতার পক্ষে কথা বলার কেউ । আর এই
সুযোগে বাংলাদেশকে তারা পাকিস্তানের অঙ্গরাজ্য বানাতে সক্ষম হবে ।
আজ যখন দেশে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার হচ্ছে তখন ৭৫
এর ১৫ই আগস্টের পরের ক্ষমতা ভোগীরা এই বিচারকে বানচাল করার অপচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে
বারবার । আবার যখন এই সব অপরাধীদের বিচারিক রায় হচ্ছে তখন এটাকে রাজনৈতিক রায় বলে
হরতাল সহ দাঙ্গা-হাঙ্গামাকে সাপোর্ট করছে নৈতিক কারনে ।
এই আগস্ট হোক বাঙ্গালির নিজেদের নতুন করে চেনা ও জানার মাস ।
আজ ১লা আগস্ট বাতিল হল জামাতের রাজনৈতিক নিবন্ধন ।
এই শোকের মাসেই বঙ্গবন্ধু হত্যার ৩৪ বৎসর পর আদালতের রায়ে রাজনৈতিক
দল হিসাবে জামাতের নিবন্ধন বাতিল হল ।
আজ থেকে আর কোন নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে পারবে না
জামাত ।
এতে করে জামাতের রাজনীতি নিষিদ্ধ হয় নাই । তবে নিষিদ্ধ করন
প্রক্রিয়া শুরু হল । আন্তর্জাতিক
অপরাধ ট্রাইব্যুনাল ইতিমধ্যে জামাতকে অপরাধী ও সন্ত্রাসী রাজনৈতিক দল হিসাবে
পর্যবেক্ষণ দিয়েছে । এখন সরকারের উচিত
নির্বাহী আদাশে জামাতের রাজনীতি নিষিদ্ধ করা ।
এর আগে ১৯৬৪ সালে পাকিস্তান সরকার জামাতের সকল
কার্যক্রম নিষিদ্ধ করে ।
৭১ এর স্বাধীনতা যুদ্ধের পর নিষিদ্ধ হয় জামাতের রাজনীতি
।
বিএনপির ছত্রছায়ায়
১৯৭৯- ঢাকায় একটা কনভেনশনের মাধ্যমে “জামায়াতে
ইসলামী বাংলাদেশ” গঠিত হয়। শুরু হয়
জামাতের আগ্রাসী ভুমিকা । জামাত- শিবিরের ন্যাক্কারজনক আগ্রাসী ভুমিকার কারনে ফুসতে
থাকে জাতি । গর্জে উঠে সবাই জাহানারা ইমামের নেতৃত্বে । শুরু হয় জামাত- শিবিরের
রাজনীতি নিষিদ্ধ করা সহ যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের দাবিতে দূর্বার আন্দোলন ।
বিচার শুরু হল ,
আদালতের সঠিক বিচার কার্যক্রমে সাজা পায় কয়েকজন । চলছে অন্যদের বিচার । একই
কার্যক্রমে নিবন্ধন বাতিল হয় জামাতের ।
এতে করে লাভ হল বিএনপির । সামনের নির্বাচনে
জামাতকে আর কোন আসন না দিয়েই তাদের পক্ষে কাজ করাতে পারবে জামাতকে । বিএনপির আর্থিক
ও ভোটের পাল্লা ভারি করে দেবে এখন এই জামাত বিনা উজরে ।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন