বিশ্বের এমন কোন দেশ নেই যেখানে আপেল খুঁজে পাওয়া যাবে না। যত
ফল আছে সম্ভবত তার মধ্যে আপেলই সবচেড়ে গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্যিক ফল। আপেলকে কেন্দ্র
করে প্রতিবছর কম করে হলেও কয়েক হাজার কোটি ডলারের বাণিজ্য হয়। প্রতিবছর বিশ্বে
সাড়ে ৫ থেকে ৬ কোটি টন আপেল উৎপন্ন হয়। এগুলোর আনুমানিক মূল্য ১০ বিলিয়ন বা ১
হাজার কোটি ডলার। আপেলের আদি নিবাস মধ্য এশিয়া।
আপেলের ইংরেজি নাম Apple এবং বৈজ্ঞানিক নাম Malus
domestica । আপেলের আদি নিবাস মধ্য এশিয়ায়। আধুনিক আপেলের বুনোরুপ Malus
sieversii এই এলাকায় পাওয়া যায় এখনো । হাজার বছর ধরে এশিয়া ও ইউরোপে
আপেলের চাষ হয়ে আসছে । পরে তা ছড়িয়ে পরে উত্তর আমেরিকাসহ আরো অনেক দেশে । চীন,
আমেরিকা, পোল্যান্ড, ইটালি, চিলি, ফ্রান্স, জার্মানি, ইংল্যান্ড, রাশিয়া,
নেদারল্যান্ড, নিউজিল্যান্ড ও অস্ট্রেলিয়ায় প্রচুর পরিমাণে আপেল উৎপাদন করা হয় ।
কিরগিজস্তান,
তাজাকিস্তান ও কাজাকিস্তানে আপেলকে আলমা বলা হয়। ধারণা করা হচ্ছে,
আলমা থেকেই এ ফলটির নাম হয়েছে আপেল। এ কয়টি দেশের বন-জঙ্গলে এখনও
হাজার হাজার আপেল গাছ দেখা যায়। এগুলো বন্য আপেল। চাষবাস ছাড়া প্রাকৃতিকভাবে
এমনিতেই হয়েছে। আপেল ইউরোপে ছড়িয়েছে বিশ্ববিজয়ী বীর মহামতি আলেকজান্ডের মাধ্যমে।
খ্রিস্টপূর্ব ৩০০ সালে তিনি মধ্য এশিয়ার কয়েকটি দেশ জয় করে দেশে ফেরার সময় বেশ
কিছু আপেল গাছ সঙ্গে করে নিয়ে আসেন। আবহাওয়া এ ফলের উপযোগী হওয়ায় আপেল গাছের দ্রুত
বিস্তার ঘটে গ্রিসে।
প্রতিবছর
আমেরিকায় উৎপাদিত আপেলের পরিমাণ প্রায় ৪২ লাখ ৫৪ হাজার টন। এছাড়া শীর্ষ আপল
উৎপাদনকারী দেশের মধ্যে রয়েছে তুরস্ক, ইরান, ইতালি, ফ্রান্স, পোল্যান্ড,
রাশিয়া, জার্মানি ও ভারত।
আপেলের প্রকারবেদঃ
প্রবাদ
আছে, যে
লোক প্রতিদিন একটি করে আপেল খাবে সে সারা বছর ডাক্তার থেকে দূরে থাকবে। আমাদের
শরীরে অনবরত তৈরী হচ্ছে ফ্রির্যা ডিক্যালস নামক ক্ষতিকর রাসায়নিক পদার্থ যা হৃদরোগ
ও ক্যান্সারের মত প্রাণঘাতী সমস্যার সৃষ্টি করছে। এই সমস্ত ক্ষতিকর উপাদান
নিস্ক্রিয় করার জন্য দরকার অ্যান্টি-অক্সিডেন্টস। আপেল এমন একটি ফল যাতে রয়েছে
প্রচুর অ্যান্টি-অক্সিডেন্টস। গবেষণায় দেখা গেছে ১৫০০ গ্রাম ভিটামিন সি- তে যে
পরিমাণ অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট রয়েছে তার চেয়ে অনেক বেশী পরিমাণ অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট
রয়েছে একটি লাল আপেলের খোসার মধ্যে। গবেষণায় আরো দেখা গেছে আপেলে প্রচুর ফেনলিক
এসিড এবং ফ্লাভেনয়েডস রয়েছে যা অ্যান্টি অক্সিডেন্ট গুণাগুণসম্পন্ন।
আপেল muscle tonic, diuretic, laxative,
antidiarrheal, antirheumatic, ও stomachic.
এতে carbohydrate, sugar, folic acid, potassium, calcium, B vitamins, iron, magnesium, ও zinc আছে ।
এতে carbohydrate, sugar, folic acid, potassium, calcium, B vitamins, iron, magnesium, ও zinc আছে ।
আপেলের পুষ্টিমানঃ
খোসাসহ আপেলের খাদ্য যোগ্য প্রতি ১০০ গ্রামে রয়েছেঃ
খাদ্য শক্তি
|
৫২ কিলো ক্যালরি
|
শর্করা
|
১৩.৮১ গ্রাম
|
চিনি
|
১০.৩৯ গ্রাম
|
খাদ্য আঁশ
|
২.৪ গ্রাম
|
চর্বি
|
০.১৭ গ্রাম
|
আমিষ
|
০.২৬ গ্রাম
|
জলীয় অংশ
|
৮৫.৫৬ গ্রাম
|
ভিটামিন ‘এ’
|
৩ আই ইউ
|
বিটা ক্যারোটিন
|
২৭ আই ইউ
|
লুটেইন
|
২৯ আই ইউ
|
থায়ামিন
|
০.০১৭ মিলিগ্রাম
|
রিবোফ্লাভিন
|
০.০২৬ মিলিগ্রাম
|
নিয়াসিন
|
০.০৯১ মিলিগ্রাম
|
প্যানটোথেনিক
|
০.০৬১ মিলিগ্রাম
|
ফোলেট
|
৩ আই ইউ
|
ভিটামিন ‘সি’
|
৪.৬ মিলিগ্রাম
|
ভিটামিন ‘ই’
|
০.১৮ মিলিগ্রাম
|
ভিটামিন ‘কে’
|
২.২ আই ইউ
|
ক্যালসিয়াম
|
৬ মিলিগ্রাম
|
আয়রন
|
০.১২ মিলিগ্রাম
|
ম্যাগনেসিয়াম
|
৫ মিলিগ্রাম
|
ম্যাংগানিজ
|
০.০৩৫ মিলিগ্রাম
|
ফসফরাস
|
১১ মিলিগ্রাম
|
পটাশিয়াম
|
১০৭ মিলিগ্রাম
|
সোডিয়াম
|
১ মিলিগ্রাম
|
জিংক
|
০.০৪ মিলিগ্রাম
|
ফ্লোরাইড
|
৩.৩ আই ইউ
|
আপেলের
গুনাগুনঃ
১। আপেলে প্রচুর ফাইবার আছে, যা হজমের জন্য ভালো। তাই bowel পরিষ্কার রেখে, কোলন ক্যান্সার হতে দেয় না।
২। আপেলে পেকটিন নামক ফাইবার আছে, যা সহজে তরলে মিশে যায়। এই ফাইবার অন্ত্র নালিতে cholesterol জমতে দেয় না, এবং শরীর থেকে cholesterol খরচ করে কমাতে সাহায্য করে।
৩। ব্লাড প্রেসার ও রক্তের glucose/ sugar নিয়ন্ত্রণ করে ।
coronary artery disease ও diabetes
এর রোগীরা তাই এটি খেলে উপকার পান ।
৪। আপেল হজমের জন্য উপকারী ব্যাকটেরিয়া তৈরীতে সাহায্য করে ।
তাই এটি হজম শক্তি বৃধ্ধ্বি করে ও ঠিক রাখে ।
৫। আপেলের খোসায় polyphenols নামক antioxidant আছে, যা কোষকে ধ্বংশ হয়ে দেয় না।
৬। আপেলে phenols আছে, যা LDL Cholesterol কমায় ও ভালো cholesterol HDL বাড়ায়।
৭। আপেলে পর্যাপ্ত boron আছে, যা হাড়কে শক্ত রাখতে সাহায্য করে ও ব্রেইনের স্বাস্থ্য ঠিক রাখে
৮। আপেলে আছে flavonoid, যা antioxidant, এটি রোগ প্রতিরোধ শক্তি বৃদ্ধি করে, হার্টের অসুখ ও ক্যান্সার হতে রক্ষা করে ।
৯। আপেলে Quercetin আছে, যা একটি flavonoid, এটি বিভিন্ন ধরনের ক্যান্সার হতে শরীরকে রক্ষা করে। এই পুষ্টি উপাদানটি free radical ধ্বংশ হতে রক্ষা করে। তাছাড়া এটি DNA ধ্বংশ হতেও রক্ষা করে। Free radical ধ্বংশ হতে রক্ষা করার জন্য, বার্ধক্য জনিত রোগ, যেমন: Alzheimer's হতেও এটি রক্ষা করে ।
১০। আপেলে প্রচুর Phytonutrients, যেমনঃ ভিটামিন A, E ও beta carotene আছে । এগুলো ও free radical ধ্বংশ হতে, ব্রেইনের অসুখ হতে বাধা দেয়, ফুসফুস ভালো রাখে ও শ্বাস প্রশ্বাস প্রক্রিয়া ভালো রাখে । ফলে শরীর অনেক রোগ থেকে মুক্তি পায় , যেমন: হার্টের অসুখ , Diabetes ও Asthma , Parkinsonism , Alzheimer's.
৫। আপেলের খোসায় polyphenols নামক antioxidant আছে, যা কোষকে ধ্বংশ হয়ে দেয় না।
৬। আপেলে phenols আছে, যা LDL Cholesterol কমায় ও ভালো cholesterol HDL বাড়ায়।
৭। আপেলে পর্যাপ্ত boron আছে, যা হাড়কে শক্ত রাখতে সাহায্য করে ও ব্রেইনের স্বাস্থ্য ঠিক রাখে
৮। আপেলে আছে flavonoid, যা antioxidant, এটি রোগ প্রতিরোধ শক্তি বৃদ্ধি করে, হার্টের অসুখ ও ক্যান্সার হতে রক্ষা করে ।
৯। আপেলে Quercetin আছে, যা একটি flavonoid, এটি বিভিন্ন ধরনের ক্যান্সার হতে শরীরকে রক্ষা করে। এই পুষ্টি উপাদানটি free radical ধ্বংশ হতে রক্ষা করে। তাছাড়া এটি DNA ধ্বংশ হতেও রক্ষা করে। Free radical ধ্বংশ হতে রক্ষা করার জন্য, বার্ধক্য জনিত রোগ, যেমন: Alzheimer's হতেও এটি রক্ষা করে ।
১০। আপেলে প্রচুর Phytonutrients, যেমনঃ ভিটামিন A, E ও beta carotene আছে । এগুলো ও free radical ধ্বংশ হতে, ব্রেইনের অসুখ হতে বাধা দেয়, ফুসফুস ভালো রাখে ও শ্বাস প্রশ্বাস প্রক্রিয়া ভালো রাখে । ফলে শরীর অনেক রোগ থেকে মুক্তি পায় , যেমন: হার্টের অসুখ , Diabetes ও Asthma , Parkinsonism , Alzheimer's.
১১। আপেলে থাকা পেকটিন ও ভিটামিন-সি রক্তের সুগার ও কোলেস্টেরল
নিয়ন্ত্রণে রাখে, ফলে হৃদপিন্ড সুস্থ থাকে, উচ্চ রক্তচাপের
ঝুঁকি কমায়।
১২। দাঁত ও হাড় গঠনে এবং দন্তক্ষয় রোধে ক্যালসিয়াম অত্যন্ত দরকারী
যা আপেল খেলে পাওয়া যায় ।
১৩। আপেলে রয়েছে প্রচুর জৈব এসিড যা ত্বক সুস্থ রাখে, ত্বকের সংক্রমণ রোধ
করে ।
১৪। আপেলের খোসাতে রয়েছে অনেক পুষ্টি উপাদান যার ক্যান্সার রোধী গুন
রয়েছে। তাই খোসাসহ আপেল খাওয়া উচিত।
১৫। কোষ্ঠ কাঠিন্য রোধে আপেল অত্যন্ত কার্যকরী।
১৬। অন্যান্য ফলের মত আপেলের চিনি রক্তের চিনির মাত্র বাড়িয়ে দেয় না । ফলে diabetes এর রোগীরা নিশ্চিন্তে পরিমানমত আপেল খেতে পারেন ।
১৭। আপেলে কোনো লবন নেই, তাই আপেল থেকে অতিরিক্ত লবন খাবার কোনো সম্ভাবনা নেই ।
১৮। আপেলে সামান্য ভিটামিন সিও আছে । তাই আপেল রোগ প্রতিরোধেও সাহায্য করে । তাছাড়া ভিটামিন সি তাড়াতাড়ি রোগ সারাতে সাহায্য করে।
১৯। আপেল লিভার ও gall bladder পরিষ্কার রাখে, এর পাথর (gallstones) দূর করে বা ধ্বংশ করে ।
২০। আপেলের প্রচুর পানি আছে, তাই এটি পানিশুন্যতা দূর করে, তৃষ্ণা মেটায় ও শরীর ঠান্ডা করে। করেন।
১৬। অন্যান্য ফলের মত আপেলের চিনি রক্তের চিনির মাত্র বাড়িয়ে দেয় না । ফলে diabetes এর রোগীরা নিশ্চিন্তে পরিমানমত আপেল খেতে পারেন ।
১৭। আপেলে কোনো লবন নেই, তাই আপেল থেকে অতিরিক্ত লবন খাবার কোনো সম্ভাবনা নেই ।
১৮। আপেলে সামান্য ভিটামিন সিও আছে । তাই আপেল রোগ প্রতিরোধেও সাহায্য করে । তাছাড়া ভিটামিন সি তাড়াতাড়ি রোগ সারাতে সাহায্য করে।
১৯। আপেল লিভার ও gall bladder পরিষ্কার রাখে, এর পাথর (gallstones) দূর করে বা ধ্বংশ করে ।
২০। আপেলের প্রচুর পানি আছে, তাই এটি পানিশুন্যতা দূর করে, তৃষ্ণা মেটায় ও শরীর ঠান্ডা করে। করেন।
২১। আপেলের সাথে মধু মিশিয়ে খেলে তা কফ দুর করে।
২২। আপেল ডায়রিয়া হলে তা সারাতে সাহায্য করে।
২৩। আপেল মাসেল টোন করতে সাহায্য করে ও ওজন কমায় ।
২৪। আপেল Gastric এর সমস্যা কমায় ।
২৫। আপেলের রস দাঁতের জন্য ও ভালো । কারণ ব্যাকটেরিয়া এর কারণে দাঁতের ক্ষয় হয়, আপেলের রস ৮০% পর্যন্ত দাঁতের ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়া ধ্বংশ করতে পারে।
২৬। আপেল শরীরের ওজন কমাতে ও নিয়ন্ত্রণ
করতেও সাহায্য করে ।
২৭। দিনে একটি আপেল খেলে রক্তের ক্ষতিকর LDL Cholesterol কমে
।
২৮। আপেল, জ্বর হলে তা কমাতে সাহায্য করে, তাই জ্বর এর রোগীরা আপেল খেলে ভালো বোধ ।
২৯। অ্যালঝেইমার্স প্রতিরোধেঃ মারাত্মক স্মৃতি
বিভ্রম জাতীয় রোগ অ্যালঝেইমার্স প্রতিরোধে কার্যকর ভূমিকা রাখে আপেল।
৩০। ফুসফুসের ক্যান্সার প্রতিরোধেঃ ফুসফুসের ক্যান্সার প্রতিরোধে আপেলের জুড়ি নেই। ১০ হাজার জনের ওপর পরিচালিত একটি গবেষণায় প্রমাণিত হয়েছে, যারা বেশি বেশি আপেল খান, তাদের ক্ষেত্রে ভবিষ্যতে ফুসফুসের ক্যান্সারে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি ৫০ শতাংশ কমে যায়।
৩১। ব্রেস্ট ক্যান্সার প্রতিরোধেঃ ব্রেস্ট ক্যান্সার প্রতিরোধে সহায়তা করে আপেল। যুক্তরাষ্ট্রের করনেল ইউনিভার্সিটির এক গবেষণায় দেখা গেছে, যে নারীরা দিনে ৬টি আপেল খান, তাদের ক্ষেত্রে ভবিষ্যতে ব্রেস্ট ক্যান্সারে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি ৪৪ শতাংশ পর্যন্ত হ্রাস পায়। আর, যারা প্রতিদিন ৩টি আপেল খান, তাদের ক্ষেত্রে এ ঝুঁকি ৩৯ শতাংশ পর্যন্ত কমে যায়।
৩২। কোলন ক্যান্সার প্রতিরোধেঃ আপেলের মধ্যে পেকটিন জাতীয় একটি উপাদান থাকে। এ উপাদানটি কোলন ক্যান্সার থেকে দূরে রাখে। আপেলের খোসার রসও বেশ উপকারী। তবে, ফরমালিন বা অন্য কেমিক্যালমুক্ত আপেল হলে, তা নিরাপদ।
৩৩। লিভার ক্যান্সার প্রতিরোধেঃ আপেলের খোসার রস নিয়মিত পান করে লিভার ক্যান্সারের ঝুঁকি ৫৭ শতাংশ পর্যন্ত হ্রাস করা সম্ভব। অবশ্য, সব ক্ষেত্রেই আপেল কেমিক্যালমুক্ত হওয়াটা অন্যতম শর্ত।
৩০। ফুসফুসের ক্যান্সার প্রতিরোধেঃ ফুসফুসের ক্যান্সার প্রতিরোধে আপেলের জুড়ি নেই। ১০ হাজার জনের ওপর পরিচালিত একটি গবেষণায় প্রমাণিত হয়েছে, যারা বেশি বেশি আপেল খান, তাদের ক্ষেত্রে ভবিষ্যতে ফুসফুসের ক্যান্সারে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি ৫০ শতাংশ কমে যায়।
৩১। ব্রেস্ট ক্যান্সার প্রতিরোধেঃ ব্রেস্ট ক্যান্সার প্রতিরোধে সহায়তা করে আপেল। যুক্তরাষ্ট্রের করনেল ইউনিভার্সিটির এক গবেষণায় দেখা গেছে, যে নারীরা দিনে ৬টি আপেল খান, তাদের ক্ষেত্রে ভবিষ্যতে ব্রেস্ট ক্যান্সারে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি ৪৪ শতাংশ পর্যন্ত হ্রাস পায়। আর, যারা প্রতিদিন ৩টি আপেল খান, তাদের ক্ষেত্রে এ ঝুঁকি ৩৯ শতাংশ পর্যন্ত কমে যায়।
৩২। কোলন ক্যান্সার প্রতিরোধেঃ আপেলের মধ্যে পেকটিন জাতীয় একটি উপাদান থাকে। এ উপাদানটি কোলন ক্যান্সার থেকে দূরে রাখে। আপেলের খোসার রসও বেশ উপকারী। তবে, ফরমালিন বা অন্য কেমিক্যালমুক্ত আপেল হলে, তা নিরাপদ।
৩৩। লিভার ক্যান্সার প্রতিরোধেঃ আপেলের খোসার রস নিয়মিত পান করে লিভার ক্যান্সারের ঝুঁকি ৫৭ শতাংশ পর্যন্ত হ্রাস করা সম্ভব। অবশ্য, সব ক্ষেত্রেই আপেল কেমিক্যালমুক্ত হওয়াটা অন্যতম শর্ত।
৩৪। হাঁপানি উপশমেঃ সমপ্রতি এক
গবেষণায় দেখা গেছে, হাঁপানিতে
আক্রান্ত যে শিশুরা প্রতিদিন আপেলের জুস পান করে, তাদের এ
সমস্যা তুলনামূলকভাবে অনেকটা নিয়ন্ত্রণে থাকে।
অন্তঃসত্ত্বা মায়েরা যদি প্রতিদিন আপেলের জুস পান করেন, সেক্ষেত্রে
ভূমিষ্ঠ শিশুটিও ভবিষ্যতে হাঁপানিতে
আক্রান্ত হওয়ার ক্ষেত্রে অনেকটা কম ঝুঁকিতে থাকে।
৩৫। আপেল অ্যান্টি-অক্সিজান্ট, ফ্লাভোনডিস এবং
পলিফোনোলিসক্স সমৃদ্ধ। এসব উপাদানে শরীরের মৌলে ক্ষতিকর প্রভাব থেকে রক্ষা করতে
সাহায্য করে।
৩৬। আপেল থিয়ামিন এবং পাইরিডক্সিন হিসেবে ভিটামিন ‘বি’ কমপ্লেক্স এর ভালো উৎস। একসঙ্গে এ ভিটামিন শীরের ভেতর বিপাক এনজাইম
হিসেবে এবং পাশাপাশি বিভিন্ন কৃত্তিম ফাংশনে সাহায্য করে।
৩৭। আপেল সামান্য পরিমাণ খনিজ, যেমন- পটাসিয়াম, ফসফরাস
এবং ক্যালসিয়ামে সমৃদ্ধ। পটাসিয়াম শরীরের কোষ এবং তরল একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান যা
হার্ট রেট এবং রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। একইভাবে সোডিয়ামের খারাপ প্রভাব
থেকেও রক্ষা করে।
আপেল সাধারণত দুই প্রকারের হয়ে থাকে, লাল ও
সবুজ । লাল আপেলের গুণাবলি সম্পর্কে আমরা উপরে
দেখেছি । কিন্তু সবুজ আপেলের বিশেষ গুণগুলো সম্পর্কে হয়তো অনেকেরই
ধারনা নেই । তাই চলুন আজ জেনে নিই আমাদের দেহের সুস্থতায় সবুজ আপেলের গুনাবলি
সম্পর্কে কিছু তথ্য । সবুজ আপেলে
আছে প্রচুর পরিমানে ফাইবার ।
সবুজ আপেলের সবচাইতে গুরুত্বপূর্ণ উপদান হল ফাইবার, যা
সবুজ আপেলে আছে প্রচুর পরিমাণে । সবুজ আপেলের এই ফাইবার উপাদান আমাদের পেটের যে
কোন সমস্যা রোধ করতে সাহায্য করে ও পরিপাক প্রক্রিয়া সঠিক ভাবে হতে সহায়তা করে ।
১। কোলন ক্যানসার রোধ করেঃ সবুজ আপেলের ফাইবার উপদান আমাদের দেহকে কোলন ক্যানসার রোগ হওয়া থেকে রক্ষা করে ।
২। ক্ষতিকর কোলেস্টেরল নেইঃ সবুজ আপেল আমাদের পেটের সুস্থতায় অনেক সাহায্য করে থাকে । তাছাড়া সবুজ আপেলের মধ্যে কোন ক্ষতিকর কোলেস্টেরল নেই যা আমাদের দেহের জন্য খারাপ । তাই আপনি নিশ্চিন্তে ডায়েট করতে পারেন সবুজ আপেল খেয়ে ।
৩। কোলেস্টেরল মাত্রা খুব কমঃ বলাই হয়েছে কে সবুজ আপেলে কোন ক্ষতিকর কোলেস্টেরল নেই এবং যতটুকু আছে তাও মাত্রায় খুব কম । যেহেতু সবুজ আপেলে প্রচুর পরিমানে ফাইবার উপাদান আছে তা দেহের কোলেস্টেরল মাত্রার ভারসাম্য বজায় রাখে ।
৪। সহজেই হজম হয়ঃ আপনি খুব ভারী কোন খাবার খেয়েছেন । চিন্তা করছেন হজম হবে কিনা ঠিকমত । কিন্তু চিন্তার কোন কারণ নেই ,আপনি একটি সবুজ আপেল খেয়ে নিন । কারণ সবুজ আপেলে আছে এনজাইম উপাদান যা খুব দ্রুত খাদ্য হজম করতে সাহায্য করে ।
৫। লিভার ও নালীর সমস্যা রোধ করেঃ সবুজ আপেল আমাদের দেহের লিভারের যে কোন সমস্যা দূর করে ও পাশাপাশি খাদ্য নালী, পরিপাক নালী ও অন্যান্য নালীর সমস্যা দূর করে ।
৬। রোগ প্রতিরোধ করেঃ সবুজ আপেল ডায়রিয়ার সমস্যা রোধ করে ও পাশাপাশি কোষ্ঠকাঠিন্য ও বাতের সমস্যা দূর করে এবং বদ হজমের সমস্যাও দূর করে ।
৭। অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমূহঃ সবুজ আপেলে আছে ফ্লেভনয়েড ও পলিফেনল যা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট উপাদান । আর এই উপদান দুটি আমাদের দেহের DNA এর ক্ষতি রোধ করে এবং ক্যানসারও রোধ করে ।
৮। ক্ষুধা নিয়ন্ত্রন করেঃ সবুজ আপেলের জৈব এসিড উপাদান আমাদের ক্ষুধা নিয়ন্ত্রনে রাখে । তাই যদি আপনার বার বার ক্ষুধা লেগে থাকার সমস্যা থেকে থাকে তাহলে সবুজ আপেল খেয়ে ক্ষুধা নিয়ন্ত্রনে রাখতে পারবেন ।
৯। দেহে শক্তি বৃদ্ধি করেঃ সবুজ আপেল আমাদের দেহে শক্তি যোগায় । সবুজ আপেলের অন্যতম উপদান কার্বোহাইড্রেট যা আমাদের দেহের জন্য খুব উপকারি । বিশেষ করে যারা খেলাধুলা করেন, কঠোর পরিশ্রম করেন তারা প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় সবুজ আপেল অবশ্যই রাখুন ।
চুলের যত্নে আপেলের রসঃ
১। আপেল
পেস্ট করে চুলের গোড়ায় লাগান। আপেলের ম্যালিস এসিড মাথার ত্বকের মরা কোষ দূর করে।
সপ্তাহে অন্তত দুদিন এভাবে মাথার ত্বকে আপেলের পেস্ট ব্যবহার করুন। দেখবেন, ধীরে
ধীরে খুশকি একদমই দূর হয়ে যাবে।
২। আপেলের
পেস্টের সঙ্গে মেহেদির রস ও এক চা চামচ চায়ের পানি মিশিয়ে তেলের মতো করে চুলে লাগান।
এক ঘণ্টা পর হালকা গরম পানি দিয়ে চুল ধুয়ে ফেলুন। এতে চুলের রুক্ষভাব দূর হবে এবং
প্রাণবন্ত হবে।
৩। আপেলে
প্রচুর পরিমাণে বায়োটিন থাকে যা চুল পড়া রোধ করে এবং নতুন চুল গজাতে সাহায্য করে।
শেম্পু করার পর ভিনেগারের সঙ্গে পানি মিশিয়ে আপেল সিডার চুলে লাগান। প্রতি সপ্তাহে
এই মিশ্রণটি চুলে ব্যবহার করুন। এতে চুল পড়া অনেকটা কমে যাবে।
৪। চুলের
গোড়ায় আপেলের রস ব্যবহার করুন। ২০ মিনিট ম্যাসাজ করুন। এবার ভালো করে চুলে অলিভ
অয়েল মাখুন। কিছুক্ষণ পর হালকা গরম পানি দিয়ে চুল ধুয়ে ফেলুন। এটি চুলের গোড়াকে
মজবুত ও শক্ত করতে সাহায্য করবে।
চুল প্রকৃতিগতভাবেই বাড়ে। তবে যদি আপনি নিয়মিত চুলে মধুর সঙ্গে
আপেলের রস মিশিয়ে লাগান তাহলে অনেক দ্রুত নতুন চুল গজাবে এবং ঘন হবে।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন