বট তলার উকিল আমি নন্দ ঘোষ মোর নাম ।
কম পয়সায় কাজ করাই যার কাম ।
বট তলায় বসি বলে পাখিরা সব কর্ম সারে আমার
গায়ে ।
আবুল, সইতে না পেরে ক্ষুধার জ্বালা, চুরি করে ছাগল একখান।
মামলা খেয়ে আসামী আসে আমার কাছে।তার নাকি
জামিন দরকার।
দুইশ টাকায় রফা করে জামিনের আর্জি দিলাম
শালিসিদের খাস ঘড়ে ।
রাজ্যের উকিল হাক ছাড়ে এই ছাগল না মারিলে হাজার
খানেক বাচ্চা দিত এক বছরে ।
শালিসিরা পাকায় চোখ এমন ক্ষতি করল সে কেমনে
করে ।
জেল হাজতে পুরে দিল তারে রাজ্য গেল বেঁচে ।
নন্দ ঘোষ ভাবে কেমন করিয়া সম্ভব হাজার খানেক
বাচ্চা এক বছরে ।
রাজ্য উকিল শুধায় তারে এ ছাগল রাজ প্রধানের
রহে ।
পাশের ঘড়ে উঁকি দিয়ে চোখ খানি যায় জুড়িয়ে ।
চেম্বারের উকিলেরা সব গম্ভীর গলায় বলছে
হেঁকে ।
সাহেব তিনি , ভদ্র তিনি , সমাজে তার নাম
ভারি ।
তিন হাজার কোটি টাকা চুরি করে আসছেন সাহেব
আপনার দারে ।
সাহেব যদি জামিন না পায় রাজ্য যাবে রসাতলে ।
শালিসিরা নস্যি নিয়ে গভির চিন্তায় মগ্ন হয়ে
জামিন দিলেন একেবারে ।
চুরেরা সব জামিন পেয়ে আঙ্গুল দুই উচু করে
বিজয় হাসি হাসতে থাকে ।
বট তলার উকিল আমি মাথা গেল নষ্ট হয়ে ।
তিন হাজারে রাজ্য ধ্বংস কেমন করে হতে পারে ।
হাজার কোটি নিল যারা তারাই চলে গর্ব ভরে ।
দেশ প্রেমিকের তকমা নিয়ে পাশ ফিরিয়ে কুটিল
হাসে ।
তারা নাকি বিস্তর জ্ঞানী অন্যরা সব মূর্খের দলে ।
তারা নাকি বিস্তর জ্ঞানী অন্যরা সব মূর্খের দলে ।
কোন কিছু না বুঝে পত্রিকায় দিলাম লিখে,
“সব চুরেরা এক হয়ে খেয়ে ফেলছে দেশটারে” ।
“সব চুরেরা এক হয়ে খেয়ে ফেলছে দেশটারে” ।
এই না দেখে রাজ্য সিপাই আমায় নিল গারদ ঘড়ে ।
কাঠের বন্দুক হাতে দিয়ে ছবি তুলে টগবগিয়ে ।
কাঠের বন্দুক হাতে দিয়ে ছবি তুলে টগবগিয়ে ।
সারাটি রাত লাঠির গুতায় জীবন দিল খুড়া করে ।
শালিসিদের সামনে নিয়ে চাইল রিমান্ড, আমার ঘড়ে নাকি কামান আছে ।
শালিসিদের সামনে নিয়ে চাইল রিমান্ড, আমার ঘড়ে নাকি কামান আছে ।
ভাবতে থাকে শালিসিরা হইলেও তা হইতে পারে ।
সিপাইরা কি মিথ্যা বলে ।
রিমান্ড নিয়ে গারদ ঘড়ে হুঙ্কার ছেড়ে কর্তা
বলে,
সাহেবদের ছোট করে বললি কেন এমন করে ।
সাহেবদের ছোট করে বললি কেন এমন করে ।
আত্মীয়রা সব আসল ছুটে কি করা যায় ভাবতে থাকে
।
সিপাই কর্তা বলল ডেকে লক্ষ পাঁচেক টাকা হলে ছাড়তে পারি এ বেলাতে ।
সিপাই কর্তা বলল ডেকে লক্ষ পাঁচেক টাকা হলে ছাড়তে পারি এ বেলাতে ।
বট তলার উকিল আমি এত টাকা দিব ক্যামনে ।
খাচ্ছি মার যাচ্ছি খেয়ে, যা হবার তা হয়ে
যাবে ।
রিমান্ড শেষে “আকাস-বাতাস” হত্যার দায়ে জেল
হাজতে দিল পুরে ।
পায়নি বিচার শহীদ যোদ্ধাও, মাথা আমার যায়
গুলিয়ে ।
সবাই এবার হেসে বলে সব দোষ করল শালা নন্দ ঘোষে ।
সবাই এবার হেসে বলে সব দোষ করল শালা নন্দ ঘোষে ।
সমুখে চেয়ে দেখিঃ
চলছে চলছে চলছেই জনতা বলছে বলছেই
দিতে হবে দিয়ে দাও নইলে মাটি কাঁপবেই
হুঙ্কার দিতে দিতে কারা যেন আসছে আসছেই
এইবার এইবার ইতিহাস লিখবে লিখবেই ।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন