ভারতীয় উপমহাদেশে আম কয়েক হাজার বছর ধরে চাষাবাদ চলছে, পূর্ব
এশিয়াতে আমের প্রচলন হয় খ্রীষ্টপূর্ব ৫ম-৪র্থ শতাব্দী থেকে এবং চাষাবাদ শুরু হয়
আরো পরে খৃষ্টাব্দ ১০ম শতাব্দী দিকে। ভারতীয় উপমহাদেশ এবং পূর্ব এশিয়ার কিছু
দেশের পর পৃথিবীর অন্য যেসব দেশে ভারতীয় উপমহাদেশের মত জলবায়ু রয়েছে, যেমন: ব্রাজিল, ওয়েস্ট ইন্ডিজ বা মেক্সিকো তে
আরো অনেক পরে আমের প্রচলন ও উৎপাদন শুরু হয়।
মরোক্কোর পর্যটক ইবনে বতুতা ১৪ শতকে আমের বর্ণনা লিপি বদ্ধ করেন।
বর্তমানে পৃথিবীর প্রায় সমস্ত উষ্ণ প্রধান জলবায়ুর অঞ্চল
গুলিতে আমের চাষাবাদ হয়। এর মধ্য অর্ধেকের কাছাকাছি আম উৎপাদন হয় শুধুমাত্র
ভারতে ।এর পর অন্যান্য যেসব দেশ আম উৎপাদন করে তার মধ্যে আছে চিন, বাংলাদেশ
, পাকিস্তান, নেপাল ।ভুটান ,
উত্তর-দক্ষিণ ও মধ্য আমারিকা, দক্ষিণ-পশ্চিম
ও মধ্য আফ্রিকা।
আম
(Mango) এই
উপমহাদেশের সবচাইতে সু-স্বাদু ফল। কাচা অবস্থায় এর রং সবুজ এবং পাকা অবস্থায়
হলুদ রং হয়ে থাকে। বাংলাদেশ এবং ভারত এ যে প্রজাতির আম চাষ হয় তার বৈজ্ঞানিক নাম
Mangifera indica। পৃথিবীতে প্রায় ৩৫ প্রজাতির আম আছে। আমের বিভিন্ন জাত (varity) আছে, যেমন ফজলি, ল্যাংড়া, গোপালভোগ, খিরসা, অরুনা,
আম্রপালি, মল্লিকা, সুবর্নরেখা, মিশ্রিদানা, নিলাম্বরী, কালীভোগ, কাচামিঠা,
আলফানসো, বারোমাসি, তোতাপূরী, কারাবাউ, কেঊই
সাউই, গোপাল খাস, কেন্ট, সূর্যপূরী, পাহুতান, ত্রিফলা
ইত্যাদী। আম গাছকে বাংলাদেশের জাতীয় গাছের মর্যাদা দেওয়া হয়েছে।
একেক জাতের আমের পুষ্টিমান একেক রকম। তবে ১০০ গ্রাম পরিমাণ আমে ৬০ ক্যালরি শক্তি আছে। খুবই ভালো কথা যে এতে
ফ্যাট বা চর্বি, কোলেস্টেরলের পরিমাণ শূন্য। পটাশিয়ামের
চমৎকার উৎস আম৷ প্রতি ১০০ গ্রামে আছে প্রায় ১৬৮ মিলিগ্রাম পটাশিয়াম। ভিটামিন সি
রয়েছে ৬০ শতাংশ৷ গবেষকেরা বলছেন, একটি আম খেলে প্রায় ৫০০
ইউনিট ভিটামিন সি খাওয়া হয়ে যাবে। আছে প্রচুর ভিটামিন এ, প্রায়
২১ শতাংশ। আর শর্করা? প্রতি ১০০ গ্রাম আমে ১৫ গ্রামই হলো
শর্করা৷ পাকা আমের মধ্যে আঁশের পরিমাণ অনেক, প্রায় ১ . ৬ গ্রাম যা অন্যান্য ফলের মধ্যে পাওয়া যায় না।। তাই এই
শর্করা ধীরে ধীরে হজম হয়। এত মিষ্টি হলেও এর
গ্লাইসেমিক ইনডেক্স অত উচ্চ নয়, বরং মধ্যম মানের, ৬০এর কাছাকাছি।
আমের পুষ্টিমানঃ
প্রতি ১০০ গ্রাম (৩.৫ আউন্স) আমের পুষ্টিগত মান
|
|
শক্তি
|
২৫০ কিজু (৬০ kcal)
|
শর্করা
|
15 g
|
চিনি
|
13.7
|
খাদ্যে ফাইবার
|
1.6 g
|
স্নেহ
পদার্থ
|
0.38 g
|
প্রোটিন
|
0.82 g
|
ভিটামিন
সমূহ
|
|
ভিটামিন এ সমতুল্য
বেটা ক্যারোটিন
লুটিন জিজানথেন
|
(7%) 54 μg
(6%) 640 μg
23 μg
|
থায়ামিন (বি১)
|
(2%) 0.028 mg
|
রিবোফ্লাভিন (বি২)
|
(3%) 0.038 mg
|
ন্যায়েসেন (বি৪)
|
(4%) 0.669 mg
|
প্যানটোথেনিক অ্যাসিড (বি৫)
|
(4%) 0.197 mg
|
ভিটামিন বি৬
|
(9%) 0.119 mg
|
ফোলেট (বি৯)
|
(11%) 43 μg
|
কোলিন
|
(2%) 7.6 mg
|
ভিটামিন সি
|
(44%) 36.4 mg
|
ভিটামিন ই
|
(6%) 0.9 mg
|
ভিটামিন কে
|
(4%) 4.2 μg
|
চিহ্ন ধাতু সমুহ
|
|
ক্যালসিয়াম
|
(1%) 11 mg
|
লোহা
|
(1%) 0.16 mg
|
ম্যাগনেসিয়াম
|
(3%) 10 mg
|
ম্যাঙ্গানিজ
|
(3%) 0.063 mg
|
ফসফরাস
|
(2%) 14 mg
|
পটাশিয়াম
|
(4%) 168 mg
|
সোডিয়াম
|
(0%) 1 mg
|
দস্তা
|
(1%)
|
বাংলাদেশের আমের প্রকারভেদ ও আম পাকার সময়ঃ
আমের নাম
|
পরিপক্বতার সময়
|
গবিন্দভোগ
|
২৫শে মের পর থেকে
|
গুলাবখাস
|
৩০শে মের পর থেকে
|
গোপালভোগ
|
১লা জুনের পর থেকে
|
রানিপছন্দ
|
৫ই জুনের পর থেকে
|
হিমসাগর বা ক্ষীরশাপাত
|
১২ই জুনের পর থেকে
|
ল্যাংড়া
|
১৫ই জুনের পর থেকে
|
লক্ষণভোগ
|
২০শে জুনের পর থেকে
|
হাড়িভাঙ্গা
|
২০শে জুনের পর থেকে
|
আম্রপলি
|
১লা জুলাই থেকে থেকে
|
মল্লিকা
|
১লা জুলাই থেকে থেকে
|
ফজলি
|
৭ জুলাই থেকে থেকে
|
আস্বিনা
|
২৫শে জুলাই থেকে
|
আমের উপকারিতাঃ
১। “আম রোগ
প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে। এতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে
বিটা-ক্যারোটিন ও ক্যালরি।”
২। ক্যারোটিন চোখ সুস্থ
রাখে, সর্দি-কাশি দূর করে।
৩। আম কর্মশক্তি যোগায়।
এতে রয়েছে কার্বোহাইড্রেট।
৪। ক্যালসিয়াম হাড় সুগঠিত
করে, হাড় ও দাঁতের সুস্থতা বজায় রাখে।
৫। আম থেকে ভিটামিন সি
পাওয়া যায়। ভিটামিন সি স্কার্ভি রোগ প্রতিরোধ করে। দাঁত, মাড়ি,
ত্বক ও হাড়ের সুস্থতা রক্ষা করতেও সাহায্য করে ভিটামিন সি।
৬। আমে বিদ্যমান পটাশিয়াম
রক্তস্বল্পতা দূর করে ও হৃদযন্ত্র সচল রাখতে সাহায্য করে।
৭। এই ফলের আঁশ, ভিটামিন
ও খনিজ উপাদান অ্যান্টিঅক্সিডেন্টসমৃদ্ধ যা হজমে সহায়তা করে।
৮। এছাড়াও ক্যারোটিন, আইসো-কেরোটিন,
এস্ট্রাগ্যালিন, ফিসেটিন, গ্যালিক এসিড ইত্যাদি এনজাইম ক্যান্সার প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে।
৯। আম কোলন ক্যান্সার, স্তন
ক্যান্সার, রক্তস্বল্পতা ও প্রোস্টেট ক্যান্সার প্রতিরোধে
সহায়তা করে।
১০। আমের ভিটামিন সি ত্বকের
লোমকূপ পরিষ্কার রাখতে সাহায্য করে, যা ব্রণের ও ত্বকের
বিভিন্ন সমস্যা দূর করে। তাছাড়া আম ত্বক উজ্জ্বল করতেও সাহায্য করে।
১১। “পাকাআম আঁশসহ খেলে কোষ্ঠকাঠিন্য দূর হয়”
১২। পাকাআম রক্তে
কোলেস্টেরলের ক্ষতিকর মাত্রা কমাতে সাহায্য করে।
১৩। ঘামের কারণে শরীর থেকে
সোডিয়াম বের হয়ে যায়। কাঁচাআম খেয়ে শরীরের সোডিয়ামের ঘাটতি পূরণ করা সম্ভব।
১৪। কাঁচাআমের পেকটিন
গ্যাস্ট্রোইনটেস্টাইনাল রোগের চিকিত্সায় অত্যন্ত উপকারী।
১৫। কাঁচাআমের ভিটামিন সি
রক্তনালীসমূহের স্থিতিস্থাপকতা বৃদ্ধি করে এবং নতুন রক্ত কনিকা গঠনে সাহায্য করে।
এতে করে যক্ষা, রক্তস্বল্পতা ও কলেরা রোগের বিরুদ্ধে শরীরের প্রতিরোধ
ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়।
১৬। গরমের কারণে হওয়া
স্ট্রোকের সম্ভাবনা হ্রাসে কাঁচাআম ও জিরা বিশেষ ভূমিকা পালন করে।
১৭। আমে রয়েছে প্রচুর
পরিমাণে ভিটামিন ই। যা ত্বক ও চুলের জন্য অত্যন্ত উপকারী।
১৮। আম রূপ চর্চায় সহায়তা
করে। রোদের পোড়াভাব কমাতে, ত্বকের দাগ দূর করতে ও ব্রণের সমস্যা দূর
করতে আম সাহায্য করে।
১৯। আমে রয়েছে ভিটামিন ‘বি’ কমপ্লেক্স। এই ভিটামিন শরীরের স্নায়ুগুলোতে অক্সিজেনের সরবরাহ বাড়িয়ে
দেয়। শরীরকে রাখে সতেজ। ঘুম আসতে সাহায্য করে।
২০। আমে বেটাক্যারোটিন, ভিটামিন ই এবং সেলেনিয়াম থাকায় হার্টের সমস্যা প্রতিরোধে সাহায্য করে।
২১। আমে খনিজ লবণের
উপস্থিতিও রয়েছে পর্যাপ্ত পরিমাণে। দাঁত, নখ, চুল, মজবুত করার জন্য আমের খনিজ লবণ উপকারী
ভূমিকা পালন করে।
২২। আমে রয়েছে প্রচুর
এনজাইম যা শরীরের প্রোটিনের অণু গুলো ভেঙে ফেলতে সাহায্য করে, যার
ফলে হজম শক্তি বৃদ্ধি পায়।
২৩। প্রতিদিন আম খেলে
দেহেরক্ষয় রোধ হয় ও স্থূলতা কমিয়ে শারীরিক গঠনে ইতিবাচক ভূমিকা পালন করে ।
২৪। আমে রয়েছে ম্যালিক
অ্যাসিড, সাইট্রিক অ্যাসিড ও টারটারিক অ্যাসিড যা শরীরে ক্ষার ধরে রাখে ।
২৫। কাঁচা আমে প্রচুর
পরিমাণে আয়রন থাকায় রক্তস্বল্পতা সমস্যা দূর হয়, আবার শরীরের রক্ত
পরিষ্কার থাকে ।
২৬। কিডনির সমস্যা প্রতিরোধ
সাহায্য করে ।
২৭। কাঁচা আম স্মৃতিশক্তি
বাড়াতে সাহায্য করে ।
২৮। লিভার ভালো রাখে ।
২৯। এই ফলে পাওয়া যায় টারটারিক এসিড, ম্যালিক এসিড ও সাইট্রিক
এসিড যা শরীরে অ্যালকালাই বা ক্ষার ধরে রাখতে সহায়তা করে অনেকাংশেই।
৩০। ডায়াবেটিকস
রোগীদের আম খেলে সুগার বেড়ে যাবার প্রবণতা থাকলেও আম গাছের পাতা কিন্তু রক্তে
চিনির পরিমান কমিয়ে আনতে সাহায্য করতে পারে। এজন্য কিছু আম পাতা নিয়ে ভাল করে
পানিতে জ্বাল দিয়ে সারা রাত রেখে দিন। পরদিন সকালে উঠে এই পানি পান করুন। ব্যাস
এইটুকুই সাহায্য করবে রক্তে চিনির পরিমান ঠিক রাখতে।
৩১। পাকা আম মুখের ও নাকের
উপর জন্মানো ব্ল্যাকহেড দূর করতে সাহায্য করে। প্রতিদিন ১০০ গ্রাম পাকা আম খেলে
মুখের কালো দাগ দূর হবে।
৩২। কাঁচা আম খেলে শরীরের
অতিরিক্ত ক্ষতিকর পানি থেকে দেহকে রক্ষা করে এবং শরীরের তৃষ্ণা মিটায়। উপরন্তু, এটা
খুব উচ্চ তাপমাত্রার নেতিবাচক প্রভাব থেকে আমাদের রক্ষা করে।
৩৩। গ্রীষ্মকালে কাঁচা আমের
জুস অত্যধিক ঘাম এর কারনে সোডিয়াম ক্লোরাইড এবং লোহার অত্যধিক ক্ষতি রোধ করে।
৩৪। কাঁচা আম পেক্টিন (pectin) একটি সমৃদ্ধশালী উৎস, মধু এবং লবণ দিয়ে
মিশিয়ে গ্যাস্ট্রোইনটেস্টাইনাল রোগের চিকিত্সা অত্যন্ত উপকারী। এটি গ্রীষ্মকালীন
ডায়রিয়া, আমাশয়, পাইলস,
দীর্ঘস্থায়ী এঁড়ে, বদহজম এবং
কোষ্ঠকাঠিন্য রোগের জন্য ওষুধ হিসেবে খুব কার্যকর হিসাবে বিবেচনা করা হয় ।
৩৫। কাঁচা আমের সঙ্গে চিনি, জিরা
এবং চিম্টি লবণ, মিশিয়ে সেদ্ধ করে জুস করে খেলে ঘামাচি
রোধ করতে সাহায্য করে, এবং গ্রীষ্মকালে স্ট্রোকের ঝুকি
হতে রক্ষা করে।
৩৬। কাঁচা আম ভিটামিন সি এর
সমৃদ্ধ উৎস এবং এটি মনোবল উন্নত করে ও রোগের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে সাহায্য করে।
৩৭। উচ্চমাত্রায় দ্রবণীয়
পণ্য আঁশে আছে পেকটিন ও ভিটামিন-সি, যা শরীরে কোলেস্টেরলের
ক্ষতিকর মাত্রা কমিয়ে দেয়।
৩৮। আমে প্রায় ২৫ রকমের
বিভিন্ন কেরাটিনোইডস যা আপনার ইমিউন সিস্টেমকে রাখবে সুস্থ ও সবল।
৩৯। বিশেষ করে গর্ভবতী
নারীদের মর্নিং সিকনেস দূর করতে চমৎকারভাবে কাজ করে কাঁচা আম। সামান্য লবণ মেখে
কাঁচা আম খেলে বমি বমি ভাব দূর হয়।
৪০। পাকা আম ব্রণের সমস্যা
সমাধানে সহায়তা করে ।
৪১। যারা আম খেয়ে থাকেন
তাদের মাঝে অ্যাজমা হওয়ার সম্ভাবনা কম। এটি আমের একটি চমকপ্রদ স্বাস্থ্য উপকারিতা।
এতে থাকা উচ্চ বিটা ক্যারোটিন অ্যাজমা প্রতিরোধে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
৪২। গর্ভাবস্থায় আম খাওয়ার
অনেক উপকারিতা রয়েছে। আম বি ভিটামিনে সমৃদ্ধ। এতে ভিটামিন বি১, বি২,
বি৫, বি৬, নায়াসিন
এবং ফলিক এসিড রয়েছে। ফলিক এসিড গর্ভবতী নারীদের জন্য বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ কারন
এটা জন্মগত ত্রুটির সম্ভাবনা কমায়।
৪৩। পাকা আমের পেস্টের সাথে
সামান্য মধু এবং দুধ পুরো শরীরে ঘষলে ত্বক হবে কোমল ও মসৃণ।
৪৪। চীনা ঔষধ শাস্ত্রে,কিডনীতে
পাথর হওয়ার ঝুঁকি কমানোর জন্য আমের টক, মিষ্টি ও শীতলীকরণ
শক্তিকে বিবেচনা করা হয়।
৪৫। রাতে ঘুমানোর আগে গরম
পানিতে ১০/১৫টি পাতা দিয়ে ঢাকনা দিয়ে ঢেকে রেখে সকালে সেই পানিটা ছেকে খালি পেতে
নিয়মিত খেলে পেটের জন্য তা খুবই ভালো।
৪৬। এই ফলে রয়েছে উচ্চ
মাত্রার গ্লুটামাইন এসিড নামক এটি প্রোটিন যা মনোযোগ ও স্মৃতিশক্তি বাড়াতে বেশ
গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। লেখাপড়ায় অমনোযোগী বাচ্চাদের আম খেতে দেয়া উচিত।
৪৭। আমের রয়েছে কামোত্তেজক
গুনাগুন এবং একে ‘লাভ
ফ্রুট’ও বলা হয়। এটা পুরুষের পুরুষত্ব বাড়ায়।
আমে প্রচুর ভিটামিন ই থাকাতে এটা সেক্স হরমোন কে নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে।
৪৮। আম গাছের ছাল বেটে ৪৫০
গ্রাম পানিতে সেদ্ধ করে যখন পানি শুকিয়ে ১০০ গ্রাম থাকবে তখন তা পান করলে কৃমি রোগ
সারবে।
৪৯। কচি আমের কুশী বাটা,১ টা
চাঁপা কলা ও গরুর দুধ একসঙ্গে চটকে খেলে মেয়েদের প্রদর রোগ সারে। দিন সাতেক খেতে
হবে।
৫০। বেশী মাংস খাওয়ার জন্যে
যদি বদহজম হয় তাহলে আমের কুশী বা কাঁচা আম বাটা খেলে তার উপশম হয়।
আমের বীচিতেও রয়েছে অভাবনীয় উপকারিতাঃ
১। খুসকি দূর করেঃ আম
বীচি সাহায্য করতে পারে আপনার মাথার খুসকি থেকে পরিত্রাণ পেতে। আম বীচি মাখন নিন
এবং চুলে লাগান দীপ্তিময় এবং শক্তিশালী করার জন্য। এছাড়াও আপনি সরিষার তেল দিয়ে
এটি মিস্রিত করতে পারেন এবং কিছুদিনের জন্য রোদের আলো থেকে মুক্তি দেবে। এ মিশ্রণ
প্রয়োগে টাক, চুলের
ক্ষতি, গোড়ার দিকে বৃদ্ধি এবং খুশকি নিয়ন্ত্রণ করতে পারে।
২। স্বাস্থ্যকর হাসিঃ টুথ
পাওডার তৈরি করতে আমের বীচি ব্যাবহার করা হয়। আপনার হাতের তালুতে সামান্য পরিমান
টুথ পাওডার নিয়ে আপনার ব্রাশ ভিজিয়ে পাওডার লাগিয়ে দাত ব্রাশ করুন। এ গুড়া আপনার
দাঁত সুস্থ রাখতে সাহায্য করবে।
৩। ডায়রিয়া-আমাশয় নিরাময়ঃ ডায়রিয়া
বা আমাশয় নিরাময় করার জন্য এক দিনে ৩ বার আমের বীচি চূর্ণ খেয়ে নিন। ছায়ার মধ্যে
আম বীচি গুড়া শুকিয়ে নিন। মধুর সঙ্গে ১-২ গ্রাম এ মাত্রায় সেবন করুন।
৪। স্থূলতা বা ওজন কমানোঃ আম
বীচি মেদবহুল মানুষদের বাড়তি কমাতে,
কোলেস্টেরলের মাত্রা কমাতে এবং রক্তসংবহন উন্নত করতে সাহায্য
করে।
৫। কোলেস্টেরলঃ এই
বীচি রক্তসংবহন করতে সাহায্য করে এবং খারাপ কোলেস্টেরলের মাত্রা কমিয়ে দেয়। এটি
পরোক্ষভাবে রক্তে শর্করার এবং প্রতিক্রিয়াশীল প্রোটিনের মাত্রা কমিয়ে রাখতে
সাহায্য করে।
এছাড়া স্বাস্থ্যকর চুল পেতে আম বীজের তেল
ফ্যাটি এসিড, খনিজ
পদার্থ এবং ভিটামিনের একটি ভালো উৎস। আপনি নিজেও এই তেল বাড়িতে তৈরি করতে পারবেন।
আম বীজের বাইরের কোট ছারিয়ে নিন, নারিকেল, জলপাই, তিল বা সরিষার তেল দিয়ে মেশান। একটি
কাচের বয়ামের মধ্যে ঢেলে সূর্যালোকে এ মিশ্রণটি এক সপ্তাহের জন্য রাখুন। চুল পড়া
বা ধুসর চুল এড়াতে নিয়মিত এ মিশ্রণটি ব্যাবহার করুন। এছাড়া আপনার চুল কালো,
লম্বা ও পুরু করতে এটি ব্যাবহার করুন। দেখবে খুব দ্রুত এটি খুবই
কার্যকর ভূমিকা রাখছে।